২৫ ডিসেম্বর যিশু নয়, জন্ম হয়েছিল অন্য কারোর, কোন অজানা সত্য লুকিয়ে বড়দিনের উৎসব ঘিরে?
25th December : আদেও কি এই দিন জন্মেছিলেন যীশু? যে বিতর্ক রয়েছে আজও
যিশু শব্দের অর্থ পরিত্রাতা। অর্থাৎ অন্ধকার থেকে যিনি আলোর পথের দিশারী। যিনি যুগের প্রয়োজনে বারবার ফিরে আসবেন। অন্তত বাইবেলে এমন বিশ্বাসের কথা লেখা রয়েছে। লেখা রয়েছে সময়ের তাগিদে আবারও ত্রাণকর্তা রূপে ফিরে আসবেন যীশুই। বাইবেলে যীশুর নাম ৯০০ বার প্রদর্শিত রয়েছে। তবে, খ্রীষ্ট নামটি, নাম হিসেবে নয় বরং একটি শিরোনাম হিসেবে আছে, যার অর্থ 'অভিষিক্ত'। অবশ্য যীশুকে নিয়ে কোনও মতই প্রামাণ্য সত্য বলে ধরে নেওয়া যায় না। তাঁর জন্ম থেকে মৃত্যু জীবনের প্রতিটি ঘাত প্রতিঘাত নিয়েই রয়েছে অজস্র বিতর্ক। এমনকী এই আগামীকালের বড়দিনের উৎসব, তা নিয়েও বিতর্কের শেষ নেই। কীভাবে শুরু এ প্রথা তা আজও ধোঁয়াশা। কিন্তু তবু সেই সবটুকু বিতর্কের মধ্যেও ঢুঁ মারতে সাধ হয়।
মোটামুটি যে তথ্য সকলেই মেনে নিয়েছেন তা হল, আজ থেকে প্রায় ২০০০ বছর আগের কথা কথা। জেরুজালেমের অনতি দূরে বেথেলহেমে শহরে জন্ম হয় যীশুর। মা মেরী তখন অবিবাহিতা। এই শিশুকে ঘিরেই বদলে গেল একটা গোটা সমাজ। দেশ কালের সীমানা পার করে যীশুর খ্যাতি সর্বত্র। যেন জগতের যা কিছু খারাপ তার সবটুকু দায়ভার একার কাঁধে নিয়ে নিতেই আগমন তাঁর। তাই হয়তো নিজেরই শিষ্যের জন্য ক্রুশ বিদ্ধ হয়েও মরতে পিছ পা হন না এই মানুষটি। তাঁর হাত ধরেই শুরু হয় খ্রিস্ট ধর্ম। শুধু তাই নয় এই যে শকাব্দ থেকে খ্রিস্টাব্দের জার্নি, তারও সূত্রপাত যীশুর জন্মের হিসেব মাথায় রেখেই।
আরও পড়ুন - কলকাতার তো বটেই, যিশু গোটা বাংলার, খ্রিস্ট-কৃষ্ণকে সত্যিই মিলিয়েছে বাঙালি
তবে যিশুর জন্মদিন কবে তাই নিয়ে বিতর্ক আছে। যিশুর জন্মের পর ৩৫০ বছর পর্যন্ত তাঁর জন্মদিন পালিত হতো না। ৩৫০ খ্রিষ্টাব্দে পোপ জুলিয়াস প্রথম ২৫ ডিসেম্বর যীশুর জন্মদিন পালন শুরু করেন। আর তারপর থেকেই একটা রেওয়াজ জাঁকিয়ে বসে গিয়েছে। অথচ রোমান সভ্যতা কিন্তু বলে সম্পূর্ণ অন্য কথা। জানা যায়, ২৭৪ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট অর্লিন ২৫ ডিসেম্বর তারিখটি সূর্য দেবতার জন্মদিন হিসেবে পালন শুরু করেছিলেন। ফলে আসল সত্য নিয়ে বিতর্ক থেকে গিWas Jesus even born on this day? That debate still exists todayয়েছে। তবে অভ্যাস হয়ে থেকে গিয়েছে ২৫ ডিসেম্বর পালন। আজকাল হয়তো খুব কম জনই জানেন এই দিনটি আদেও যীশুর জন্মদিন নয়।
ঐতিহাসিক এডোয়ার্ড গীবন তাঁর 'ইন ডিক্লাইন অ্যান্ড ফল অফ দ্যা রোমান এম্পায়ার' গ্রন্থে লিখেছেন, “The roman Christians ignorant of his birth. To fixed solem Festival to the 25th of December the Brumaliya, or winter solitis when the begins celebrated the birth of soul.” অর্থাৎ এ লেখা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, রোমান খ্রিষ্টানরা যিশুর প্রকৃত জন্মতারিখ জানতেন না আর কিছু না জেনেই তাঁরা প্যাগানদের দেবতা সূর্যের জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বরকেই ‘ক্রিসমাস ডে’ হিসেবে উদযাপন করা শুরু করেন। কিন্তু যিশু খ্রিস্ট নিজের কর্মগুণেই হয়তো অবলীয়ায় এই উৎসবের মধ্যমণি হয়ে গিয়েছেন। আর তার জেরেই ইতিহাস ধামা চাপা পড়েছে নিমেষেই।