পরীক্ষার হলে ৫০০ মেয়ের মধ্যে একমাত্র ছেলে! এরপর কিশোরের 'কীর্তি' দেখে হতভম্ব সোশ্যাল মিডিয়া

Bihar Student Fainted : পরীক্ষার হলে ৫০০ জন মেয়ে, সেখানে একমাত্র ছেলে সে! এই দৃশ্যই নাকি মাথা ঘোরার কারণ!

অনুরাগ কাশ্যপের ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’ সিনেমায় বেশ কয়েকটি গান বেশ জনপ্রিয় হয়। তার মধ্যে একটি হল ‘জিয়া হো বিহার কে লালা’। ভোজপুরী অভিনেতা-গায়ক, অধুনা রাজনীতিবিদ মনোজ তিওয়ারির গাওয়া এই গানটি বেশ জনপ্রিয়ও হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি এক ‘বিহার কে লালা’র কাণ্ড দেখে নেট দুনিয়াও হতভম্ব! এমনও হয় নাকি! পরীক্ষা দিতে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল বিহারের এক কিশোর। পড়াশোনা করেনি? তা ঠিক নয়। পরীক্ষার হলে ৫০০ জন মেয়ে, সেখানে একমাত্র ছেলে সে! এই দৃশ্যই নাকি মাথা ঘোরার কারণ!

ঘটনাটি ঠিক কী? ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বিহারে শুরু হয়েছে এই বছরের দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা। বিহার স্কুল এগজামিনেশন বোর্ডের (BSEB) পক্ষ থেকে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাংলার উচ্চ মাধ্যমিকের মতোই এটি বিহারের পরীক্ষা। শরিফ আলামা ইকবাল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র শঙ্কর পরীক্ষা দিতে সময়মতো নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছয়। পরীক্ষার হলে পৌঁছনোর পর হঠাৎই শঙ্কর মাথা ঘুরে পড়ে যায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ওই এলাকায়। শিক্ষকরা তড়িঘড়ি ওই কিশোরকে নিয়ে নিকটবর্তী হাসপাতালে যান। পরে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন : ট্রেন তো নয়, নরক! ভারতীয় রেলের সবচেয়ে নোংরা ট্রেন কোনগুলি?

ডাক্তারদের বক্তব্য, হঠাৎই মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ায় শঙ্করের হাতও ভেঙে গিয়েছে। সেইসঙ্গে ধুম জ্বর! পরে একটু একটু করে ঠিক হলেও, কেন এমন অবস্থা হল সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না কেউ। এরইমধ্যে খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসে শঙ্করের পরিবার। সেখানেই তার কাকিমা খোলসা করেন আসল ‘রহস্য’। শঙ্কর ছোট থেকেই বেশ নার্ভাস প্রকৃতির ছেলে। তার ওপর ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পর সে দেখে, গোটা হলে প্রায় ৫০০ জন মেয়ে। তাদের মাঝে মাত্র একজনই ছেলে – শঙ্কর। পরীক্ষা কেন্দ্রে এতজন মেয়ের মাঝে বসেই নাকি টেনশনে পড়ে গিয়েছিল শঙ্কর। তাই মাথা ঘুরে গিয়েছিল।

আদৌ কি এই বক্তব্য ঠিক? এখনও অন্ধকারে শিক্ষকরা। পরীক্ষার প্রস্তুতির অভাব ছিল কি? সেই প্রশ্নও উঠছে। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই নেট দুনিয়ায় শোরগোল পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার নাগরিকরা কার্যত দু’ভাগ। এক পক্ষ বেশ ঠাট্টা করেই বলছে, এত মেয়েদের মাঝে বসার ‘আনন্দ’ ছেলেটি নিতে পারেনি।

কিন্তু অপর পক্ষ একটি গুরুতর ইস্যু সামনে এনেছে। এখনও ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামে, মফস্বল এলাকায় ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে ভেদাভেদ করা হয়। ছেলেরাই সংখ্যাগুরু, তারাই প্রধান, বাড়িতে রান্না হওয়া সবচেয়ে বড় মাংস-মাছের টুকরোটি ছেলেদেরই প্রাপ্য – এমন মনোভাব আজও প্রকট। বিহারের অনেক জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে এমন ভাবনা। শঙ্করও হয়তো সেভাবেই বড় হয়েছে। মেয়েদের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে মেলামেশার গণ্ডিটাই তৈরি হয়নি। তাই হয়তো হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। শঙ্করের অন্য কোনও রোগ আছে কিনা, সেটাও পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন ডাক্তাররা।

More Articles