হাপিস কংগ্রেসের ৬৫ কোটি! কে নিল?
Congress Income tax row: কংগ্রেসের অভিযোগ, বিষয়টি বিচারাধীন থাকাকালীন যেভাবে আয়কর দফতর কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৫.৮৯ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে তা গণতন্ত্রবিরোধী। এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা।
এবার বিজেপির বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ আনল কংগ্রেস। কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ৬৫.৮৯ কোটি টাকা। অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি (AICC), ভারতীয় যুব কংগ্রেস ও NSUI-র অ্যাকাউন্ট থেকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস নেতৃত্বের। দিন কয়েক আগেই কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তাদের সমস্ত দলীয় অ্যাকাউন্ট। এমনকী যুব কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করে দেওয়ার অভিযেোগ ওঠে আয়কর দফতরের বিরুদ্ধে। এবারেও টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় আয়কর দফতরকেই কাঠগড়ায় তুলেছে কংগ্রেস।
আয়কর বিভাগের অভিযোগ, কংগ্রেসের অন্তত ২১০ কোটি টাকার কর বকেয়া রয়েছে। ইতিমধ্যেই সেই বিষয়টি নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিষয়টি বিচারাধীন থাকাকালীন যেভাবে আয়কর দফতর কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৫.৮৯ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে তা গণতন্ত্রবিরোধী। এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছে তারা। কংগ্রেসের দাবি, স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতে এমন ঘটনা সম্ভবত প্রথম। জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ও আয়কর আইন, এই দুই আইনের আওতাতেই কর দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিতে। তবে রাজনৈতিক দলগুলি তাদের প্রাপ্ত অনুদানের বিশদ বিবরণ দিতে ব্যর্থ হলে এবং রিটার্ন নথি জমা দিতে বিফল হলে সেই ছাড় থেকে বঞ্চিত হতে পারে। রিপোর্ট বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছিল কংগ্রেস। তবে সামান্য দেরি হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেই মামলাটি পৌঁছে যায় আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে।
আরও পড়ুন: ভোটের আগে নয়া জুজু! কেন সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হল কংগ্রেসের দলীয় অ্যাকাউন্ট?
এর আগে কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এবার অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হল ৬৫ কোটি টাকা। বিষয়টিকে মোদি সরকারের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি হিসেবেই দেখথে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই বেশ অর্থনৈতিক অসুবিধার মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস। দলীয় কর্মীদের বেতন দেওয়া থেকে শুরু করে পার্টি অফিসের ইলেকট্রিক বিল পর্যন্ত দিতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। সামনেই লোকসভা ভোট। যে কোনও মুহূর্তে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। কিছু দিন আগেই বিজেপি সরকারের আনা ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্প বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যে ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের সমস্ত দলীয় পরিকল্পনা ও কর্মসূচী বিঘ্নিত করতেই বারবার কংগ্রেসের দলীয় ফান্ডে হাত দিচ্ছে বিজেপি সরকার। তেমনই অভিযোগ জানাচ্ছে কংগ্রেস। আয়কর দফতরের নির্দেশে পার্টি অ্যাকাউন্ট যে ভাবে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তার তীব্র বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা ও দলীয় কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ জানিয়েছেন, ভারতের বহুদলীয় ব্যবস্থাকে বিপদে ফেলতেই বারবার এই ধরনের কার্যকলাপ করা হচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে একদিন ভারতের গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে। এই মর্মে বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের তরফে ইউপিএ আমলের কথা তুলে বলা হয়, যে কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় ছিল, তারা এই ধরনের অনৈতিক কাজকর্ম কখনও করেনি। কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল জানান, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিজেপিও কখনওই আয়কর দেননি। বিজেপি সরকারের নির্দেশে আয়কর বিভাগের এই ধরনের পদক্ষেপ আদতে গণতান্ত্রিক নীতি ও মূল্যবোধের উপর আঘাত বলেই মনে করছেন তিনি।
আরও পড়ুন:Exclusive : ডেলিভারি শ্রমিকদের নিয়ে কী ভাবছে কংগ্রেস? যা জানালেন কানহাইয়া কুমার
ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, বিজেপি সরকার কংগ্রেসের আমানত থেকে প্রায় ৬৫.৮৯ কোটি টাকা সরকারের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করেছে। গ্রেস গোড়া থেকেই জানিয়ে এসেছে, তারা এই টাকা কোনও ইলেক্টোরাল বন্ড মারফৎ পায়নি। বরং এই টাকা দলের কাছে এসেছে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই বকেয়া আয়কর নিয়ে ইনকাম ট্য়াক্স আপীল ট্রাইব্যুনালের (ITAT) দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেস। তাদের সাফ মত, ভোটের আগে বিরোধী কণ্ঠস্বর রুখতেই এই ধরনের কাজকর্ম করছে বিজেপি। এর আগে ইডি-সিবিআই জুজু দিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা করেছে সরকার। ভোটের আয়ে নয়া জুজু কি তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপর জুলুমবাজি? প্রশ্ন উঠেছে, নানা মহলে।