যে কারণে মালদহ মুর্শিদাবাদ রাহুলের 'কাঁটো কা সফর'
Bharat Jodo Nyay Yatra: এদিকে আবার মালদহ শহরে ফের নতুন করে থাকা-খাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে রাহুলের। মালদহের রতুয়া থানা এলাকার ভালুকায় একটি গেস্ট হাউজে রাহুল ও কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মধ্যাহ্নভোজের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তবে ত...
ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে বাংলা পেরিয়ে বিহারে পৌঁছে গিয়েছেন রাহুল গান্ধি। তবে বাংলায় এখনই শেষ হচ্ছে না যাত্রা। ফের ৩১ তারিখ নাগাদ বাংলায় ফিরবেন রাহুল। অন্তত তেমনটাই কথা রয়েছে। এদিকে একই সময়ে উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই দলের কর্মসূচিই একই দিনে পৌঁছতে চলেছে মালদহে। কী হতে চলেছে আদতে ওই দিন।
গোড়া থেকেই বাংলায় ভারত জোড়ো যাত্রা বাধার মুখে পড়েছে। গত ২৫ তারিখই অসম থেকে বাংলায় ঢুকেছিল যাত্রা। কিন্তু রাহুলের দিল্লি থেকে জরুরি ডাক এসে পড়ায় ফের উড়ে যেতে হয় তাঁকে রাজধানীতে। গুঞ্জন উঠেছিল, ফালাকাটায় যেখানে রাহুলদের থাকার কথা ছিল, সেই জায়গাটা মোটেই কংগ্রেস নেতার বাসযোগ্য ছিল না। সে কারণেই দিল্লি ফিরে যান রাহুল।
তারপর দু'দিনের বিরতি নিয়ে ফের বাংলায় শুরু হয় যাত্রা। আসেন রাহুলও। রবিবার জলপাইগুড়িতে যাত্রা করার পর সোমবার উত্তর দিনাজপুর থেকে সকালে কিসানগঞ্জ পৌঁছন তিনি। আপাতত বিহারেই রয়েছে তার সভা। কিসানগঞ্জ থেকে মঙ্গলবার পূর্ণিয়া যাওয়ার কথা তাক, সেখান থেকে পরের দিন যাবেন কাটিহারে। বিহার হয়ে ফের রাহুল ফিরবেন বাংলায়। ৩১ তারিখ মালদায় ফের প্রবেশ করবে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, সেদিনই আবার মালদহ শহরের ডিএ, ময়দানে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা। আর এই মেলবন্ধন আদৌ ভালো হতে চলেছে, নাকি কোনও নতুন সমস্যায় জড়াতে চলেছেন রাহুল ও তাঁর দল, সেই নিয়েই শুরু হয়েছে নয়া গুঞ্জন।
আরও পড়ুন: প্রতারক পল্টুরামের বিহারে আজ রাহুল, খেলা হবে?
গত ২২ জানুয়ারি অসমে ছিল রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা। সেইদিনই আবার ছিল রামমন্দিরের উদ্বোধন। প্রায় গোটা দেশ জুড়েই আয়োজন করা হয়েছিল নানা ছোট বড় অনুষ্ঠানের। নাগাঁওয়ের কাছে একটি মন্দিরে ঢুকতে বাধা পান রাহুল। সেই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র বিশৃঙ্খলতা তৈরি হয়। অসমের যাত্রা আয়োজকের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের হয় অসমে। আইনশৃঙ্খলা নষ্ট করার অভিযোগে কাঠগড়ায় তোলা হয় কংগ্রেসকেও।
২৮ জানুয়ারি শিলিগুড়িতেও ন্যায় যাত্রা করার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। যে কারণে রাস্তা ঘুরিয়ে জলপাইগুড়ি দিয়েই কনভয় নিয়ে যেতে হয় রাহুলদের। এবারও তেমন কিছু হতে চলেছে না তো? শেষপর্যন্ত হবে তো রাহুলের ফের বাংলা সফর? প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। স্থানীয় কংগ্রেস মনে করছে, তাঁদের কর্মসূচি পূর্বঘোষিত। তা পণ্ড করতেই ইচ্ছাকৃত ভাবে মালদহ জেলায় প্রশাসনিক সভা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৩১ শে জানুয়ারি বিহারের কাটিহার থেকে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া হয়ে ইংরেজ বাজারে আসবেন রাহুল গান্ধী। রাহুলের যাত্রা মালদহের সুজাপুরে থেকে শুরু হয়ে ১ তারিখ মুর্শিদাবাদে় পৌঁছবে। এরই মধ্যে আবার ৩১ তারিখ মানে বুধবার ইংরেজ বাজারের ডিএসএ ময়দানে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভা। কংগ্রেসের জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালিসাধন রায়ের অভিযোগ, তৃণমূল আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে ব্যতিব্যাস্ত করে কংগ্রেসের সভা নষ্ট করার চেষ্টা করছে তারা। স্বাভাবিক ভাবেই, বিষয়টি নিয়েকংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস কাজিয়া তুঙ্গে উঠেছে।
এদিকে আবার মালদহ শহরে ফের নতুন করে থাকা-খাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে রাহুলের। জানা গিয়েছে মালদহের রতুয়া থানা এলাকার ভালুকায় একটি গেস্ট হাউজে রাহুল ও কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মধ্যাহ্নভোজের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল দলের তরফে। তবে সেই অনুমতি দেয়নি জেলাপ্রশাসন। এদিকে আবার, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর স্টেজিয়ামে রাহুল গান্ধীর রাত্রিবাসের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। খারিজ হয়ে যায় তা-ও। কংগ্রেস জানায়, দু-ক্ষেত্রেই লিখিত ভাবে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসন তা নাকচ করে দেয়।
আরও পড়ুন: ফালাকাটায় রাহুল গান্ধি? না পেলি আমাকে আর তোকেও আমি পেলাম না
বাংলায় যাত্রাকে বাধা দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস কর্মীদের অভিযোগের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি চিঠি দিয়েছিলেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। নিরাপত্তার ইস্যুতে মমতাকে অবগতও করা হয়েছিল। পাশাপাশি ন্যায় যাত্রার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার আমন্ত্রণও জানান হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। রবিবারও মিছিল জুড়ে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিল, তিনি একটি বার আসবেন যাত্রায়। বিশেষত লোকসভা ভোট ও ইন্ডিয়া জোটের আবহে অনেকেই এমনটা মনে করেছিলেন। তবে শেষপর্যন্ত তেমনটা হয়নি। এবার প্রশ্ন উঠে গেল রাহুলের বাংলায় ফেরা নিয়েই। একে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই দিনে একই জায়গায় সভা পড়া, তার উপরে থাকা-খাওয়ার জায়গার ক্ষেত্রে ব্যাপর বাধা, ফের রাহুলকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে না তো দিল্লিতে। সেই আশঙ্কা কিন্তু ক্রমশই চওড়া হচ্ছে।