ভোটের আগে নয়া জুজু! কেন সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হল কংগ্রেসের দলীয় অ্যাকাউন্ট?
Congress, Bank Account: আয়কর বিভাগের এই পদক্ষেপকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর ভয়ঙ্কর আঘাত বলেই দাবি করেছেন অজয় মাকেন।
সামনেই লোকসভা ভোট। যে কোনও মুহূর্তে ঘোষণা হয়ে যেতে পারে নির্বাচনের দিনক্ষণ। ঠিক এ সময়েই ফ্রিজ করে দেওয়া হল কংগ্রেসের দলীয় অ্যাকাউন্ট। তেমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এলেছিলেন দলের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন। একই সঙ্গে যুব কংগ্রেসের যাবতীয় অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আয়কর বিভাগের বিরুদ্ধে। তবে গোটাটাই ঘটে কিছুক্ষণের জন্য। খানিক বাদেই জানানো হয়ে, পরে সমস্ত অ্যাকাউন্টই আনফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে।
আয়কর বিভাগের অভিযোগ, কংগ্রেসের অন্তত ২১০ কোটি টাকার কর বকেয়া রয়েছে। আর তার জন্যই আয়কর দফতরের এই পদক্ষেপ বলে নালিশ কংগ্রেসের। আয়কর বিভাগের এই পদক্ষেপকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর ভয়ঙ্কর আঘাত বলেই দাবি করেছেন অজয় মাকেন। একই সঙ্গে একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দলের নির্বাচনী প্রস্তুতিকে ব্যহত করার জন্যই করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিজেপি জমানার ‘ইলেক্টোরাল বন্ড’ দুর্নীতিকে ভোটের ‘হাতিয়ার’ করতে পারবে বিরোধীরা?
একদিন আগেই সুপ্রিম কোর্ট মোদি সরকারের ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্পকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। রাজনৈতির দলগুলিকে আর্থিক অনুদান নিয়ে ভয়াবহ দুর্নীতির যে পরিকল্পনা, তা ফাঁস হয়ে গিয়েছে জনসমক্ষে। তার ঠিক একদিন পরেই কংগ্রেসের সমস্ত দলীয় অ্যাকাউন্ট খানিক্ষণের জন্য বন্ধ করা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন সাংবাদিক জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কংগ্রেসের কাছে খরচ করার মতো কোনও টাকা নেই। বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার ক্ষমতাটুকুও নেই তাদের। কর্মীদের বেতন পর্যন্ত দিতে পারছে না কংগ্রেস। ফলে এই সঙ্কটের প্রভাব দলের সব কিছুর উপরেই পড়ছে। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা তো বটেই, দলের সমস্ত কর্মকাণ্ডই ক্ষতির মুখে পড়েছে। একদিন আগেই তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের চেকগুলি ব্যাঙ্কে ভাঙানো যাচ্ছে না। এর পরেই খোঁজ নিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব জানতে পারেন, যুব কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কংগ্রেস পার্টির অ্যাকাউন্টও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অজয় মাকেনের দাবি, এই সময় বিরোধীদের অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা, গণতন্ত্রকে ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়ার সমান।”
এদিকে, ইলেক্টোরাল বন্ড থেকে অনুদান পেয়েছে কংগ্রেসও। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের হিসেব অনুয়ায়ী, তেমনটাই দেখা গিয়েছে। তবে কেন এমন দেউলিয়া দশা কংগ্রেসের? অজয় মাকেন অবশ্য জানিয়েছেন, ইলেক্টোরাল বন্ড নয়, এই টাকা কংগ্রেসের কাছে এসেছিল ক্রাউডফান্ডিং থেকেই। আয়কর বিভাগ যুব কংগ্রেস এবং কংগ্রেস পার্টির কাছ থেকে ২১০ কোটি টাকা পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিল। সে কারণেই বন্ধ করে দেওয়া হয় তাদের সমস্ত অ্যাকাউন্ট। আর নেপথ্যে আদতে রয়েছে রাজনৈতিক কারসাজি। ইলেক্টোরাল বন্ড প্রকল্প বন্ধ হওয়ার ক্ষোভ কি এভাবেই মেটাতে চাইছে শাসক দল বিজেপি? উঠেছে সেই প্রশ্নও।
আরও পড়ুন:ইলেক্টোরাল বন্ড অসাংবিধানিক! মোদি সরকারের প্রকল্প খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
কংগ্রেস নেতা বিবেক টানখা অবশ্য জানিয়েছেন, আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনাল পরে দলীয় সমস্ত অ্যাকাউন্ট ফের চালু করে দেয়। তবে এ ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে ছাড়েননি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও। মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ তিনি জানান, ক্ষমতান্মোত্ত মোদি সরকার ভোটের ঠিক আগে দেশের বৃহত্তম বিরোধী দলকে নিশানা করছে। এটা গণতন্ত্রের উপরেই গভীর আক্রমণ আসলে। পাশাপাশি দেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা রক্ষা করতে বিচারবিভাগের হস্তক্ষেপেরও দাবি করেছেন কংগ্রেস সভাপতি।