মদ দিয়ে ভোট লুঠল বিজেপি? মধ্যপ্রদেশের দিকে চোখ গোটা দেশের
Madhya Pradesh Assembly election: রাজ্য জুড়ে চলছে ভোটগ্রহণ। ভোটের সময় যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে ৭০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে। তার সঙ্গে কাজ করছে রাজ্যের ২ লক্ষ পুলিশকর্মী।
ভোটের আগে নেতারা ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি দেন। দেশ বদলে দেওয়ার আশ্বাস দেন। প্রতিটা নাগরিকের পাতে খাবার তুলে দেওয়ার আশ্বাস, কোথাও বা রাস্তা বা সেতু গড়ে দেওয়ার আশ্বাস, কোথাও বা অন্য কিছু। তবে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে নাকি দেদার বিলোনো হয়েছে টাকা ও মদ। হ্যাঁ, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে এমনই মারাত্মক অভিযোগ এনেছে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি কমলনাথ।
শুক্রবার সকাল থেকেই মধ্যপ্রদেশের ২৩০ জুড়ে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বালাঘাট জেলার বাইহার, লাঞ্জি এবং পরসওয়ারা বিধানসভা আসনে এবং মান্ডলা ও ডিন্ডোরি জেলার বেশ কয়েকটি বুথে বিকেল তিনটে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে। বাকি বুথগুলিতে অবশ্য সন্ধে ৬ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা। এ বছর ভোটে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা দখলে রাখতে পারবে বিজেপি, নাকি তা ফের জিতে নেবে কংগ্রেস, সেই প্রশ্ন ঘুরছে ভোটঘোষণার পর থেকেই। যদিও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা কমলনাথের মুখে শোনা গেল আশ্বাসের সুরই। জানালেন, মানুষের বোধ ও মতামতের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁর। তাঁর বিশ্বাস, মানুষ সত্যের পক্ষেই দাঁড়াবেন।
আরও পড়ুন: ভোটের দিনেই রাজস্থানে ৫০ হাজার বিয়েবাড়ি! ভোটবাক্সে পড়বে সেই ছাপ?
আর এ সব বলতে বলতেই বোমা ফাটান কমলনাথ। জানিয়ে দিলেন, তিনি শিবরাজ সিং চৌহানের মতো নন, না কখনও হতে পারবেন। বিজেরির কাছে পুলিশ, টাকা, প্রশাসনিক ক্ষমতা আর কয়েক ঘণ্টার সঙ্গীমাত্র। ভোটের আগের রাতে নাকি ভোটারদের টানতে দেদার টাকা ও মদ বিলি করেছে বিজেপি। কমলনাথের দাবি, তার কাছে এই সংক্রান্ত বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। এমনকী রয়েছে একাধিক ভিডিও প্রমাণও।
ভোটের আগে নানান প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস বিলানো তো ঠিক আছে। তাই বলে মদ এবং টাকা বিলি করা! কয়েক বছর আগেই বিধায়ক কেনাবেচার মাধ্য়মে কংগ্রেসের জেতা আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। সেই ছিনিয়ে নেওয়া ক্ষমতা কি নিজেদের হাতেই রাখতে পারবে বিজেপি, নাকি তা ফের ছিনিয়ে নিয়ে যাবে কংগ্রেস, তার উত্তর দেবে ব্যালট বক্স। তবে তার আগে চেষ্টায় কোনওরকম ত্রুটি রাখতে চাইছে না শিবরাজ সরকার। এদিকে বিজেপি যে কোনও ভাবে বিজেপিকে আসনচ্যুত করে ক্ষমতা হাসিল করতে আগ্রহী।
এ সবের মধ্যেই রাজ্য জুড়ে চলছে ভোটগ্রহণ। ভোটের সময় যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে ৭০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে। তার সঙ্গে কাজ করছে রাজ্যের ২ লক্ষ পুলিশকর্মী। প্রায় ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোট চলেছে শুক্রবার। প্রায় প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রেই রয়েছে ওয়েবকাস্টিংয়ের সুবিধা। আড়াই হাজারেরও বেশি প্রার্থীন ভাগ্য নির্ধারণ করবে এই ভোট। মধ্যপ্রদেশ জুড়ে মোট ভোটার ৫.৫৯ কোটির কাছাকাছি। তার মধ্যে ২.৮৭ কোটি পুরুষ এবং ২.৭১ কোটি নারী ভোটার রয়েছে। মহিলা পরিচালিত অন্তত ৫ হাজার বুথ রয়েছে। বিশেষ ভাবে সক্ষম পরিচালিত ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৮৩টি।
আরও পড়ুন: ভোট ‘চোখের ধুলো’, মহিলা প্রার্থীর নেপথ্যে পঞ্চায়েতে রাজ সেই পুরুষদেরই
তা এই যে ভোট কিনতে এত কসরৎ, তা কি আদৌ ফলদায়ক হল বিজেপির জন্য? ভোটবাক্সে কাদের হয়ে কথা বলল জনগণ, এই সব উত্তর মিলতে মিলতে ৩ ডিসেম্বর। কিছুদিন আগেই নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করার অভিযোগ উঠেছিল খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। ছত্তীসগঢ়ে ভোটপ্রচারে গিয়ে আরও পাঁচ বছর দেশ জুড়ে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পর একই ভাবে ভোটারদের প্রভাবিক করার অভিযোগের মুখে পড়লেন শিবরাজ সিং সরকার। মদ এবং টাকা দিয়ে ভোটারদের মাথা ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তার নেপথ্যে রয়েছে শিবরাজই, এমনটাই অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা কমলনাথ। তবে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েছে বলে শোনা যায়নি। হলে সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন শিবরকাজ সরকারের বিরুদ্ধে ঠিক কী পদক্ষেপ নিতে পারে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।