রাজ্য সরকারের 'অপরাজিতা' বিলে কেন আপত্তি বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের?

R G Kar Hospital Incident: গত মঙ্গলবার বিধানসভায় সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়েছে সেই অপরাজিতা বিল। যদিও সেই বিল পাশকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না আরজি কর কাণ্ডের আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা।

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্য। ঘটনার প্রায় এক মাস পরেও বিক্ষোভের ঢেউকে প্রশমিত করা যায়নি। আরজি কর কাণ্ডকে ঘিরে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে আরজি কর কাণ্ডের পর রাতারাতি ধর্ষণ বিরোধী আইনে কড়াকড়ি আনতে নয়া বিল এনেছে রাজ্য। গত মঙ্গলবার বিধানসভায় সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়েছে সেই অপরাজিতা বিল। যদিও সেই বিল পাশকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেন না আরজি কর কাণ্ডের আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। বরং একে 'জনপ্রিয়তা অর্জনের ধাপ্পাবাজি' বলেই মনে করছেন বিক্ষোভরতরা।

মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’ পাশ হয়েছে। তা যাতে দ্রুত আইনে পরিণত হয়, সে কথা মাথায় রেখেই বিলটি দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় দোষীর দ্রুত বিচার এবং কঠোর সাজার ব্যবস্থা ওই বিলে রয়েছে বলে রাজ্যের দাবি। তবে সেই নয়া বিলে মোটেই খুশি নয় আরজি করের আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। বুধবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা স্পষ্ট ভাষায় জানান, তাঁরা খুশি নন।

আরও পড়ুন: আরজি কর: মাথায় পৌঁছচ্ছে না অক্সিজেন! কেমন আছেন চিকিৎসক দেবাশিস সোম?

৫ তারিখ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বৃহস্পতিবারের সেই শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছিল, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বসবে না। ওই বেঞ্চের বাকি দুই সদস্য বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র আলাদা করে ১০ নম্বর কোর্টের কিছু মামলা শুনবেন। কিন্তু কোন কোন মামলা তাঁরা শুনবেন, তা তখনও স্পষ্ট ছিল না। ফলে আরজি করের শুনানি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। এর পরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১০ নম্বর কোর্টের মামলার নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়।

শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটি ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে গোটা বাংলা জুড়ে। আন্দোলনরত চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের এই মামলা পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তারা ভালো ভাবে নিচ্ছেন না। এ বিষয়ে তাঁদের অবস্থান বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘গো ব্যাক’ স্লোগানের মুখে চাকরিপ্রার্থীদের সেই ‘মসিহা’! কেন অভিজিতের এই পরিণতি?

সুপ্রিম কোর্টের শুনানির আগের দিন গোটা কলকাতা বিক্ষোভ কর্মসূচীতে নেমেছিল। আরজি কর কাণ্ডের সুবিচার চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে মানববন্ধন, রাত দখল কর্মসূচী। গত রবিবার থেকেই লালবাজারের সামনে আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফার দাবিতে সরব তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা বাংলা। তবে সেই শুনানি ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

More Articles