শীতে হঠাৎ বাড়ছে কোভিড-আতঙ্ক! ফের বিধি নিষেধের আশঙ্কা এদেশে?

Covid-19 Alert: গত সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কিন্তু ১০% বেড়েছে।

জীবন স্বাভাবিক হতে না হতেই ফের আতঙ্কের পূর্বাভাস! চিন সহ বেশ কয়েকটি দেশে ফের বাড়ছে কোভিড-১৯ সংক্রমণ। স্বাভাবিকভাবেই নড়েচড়ে বসেছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকও। মঙ্গলবার সতর্কতা বজায় রাখতে এবং সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে প্রতিদিনের ভিত্তিতে পজিটিভ সংক্রমণের নমুনা খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছে মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য দেশের কোভিড -১৯ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকও সেরে ফেলেছেন। এই মুহূর্তে ভারতে সপ্তাহে প্রায় ১,২০০ টি করোনা সংক্রমণের খবর মিলছে। তাহলে কি শীত জাঁকিয়ে পড়তে না পড়তেই নয়া ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্ক ছড়াল বলে?

রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে একটি চিঠিতে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন, "জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, ব্রাজিল এবং চিনে হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের প্রস্তুত করা অপরিহার্য। ভারতীয় SARS-CoV-2 জিনোমিক্স কনসোর্টিয়াম (INSACOG) নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভ্যারিয়েন্টগুলি ট্র্যাক করা আর পজিটিভ নমুনার সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং অবশ্যম্ভাবী। এই প্রচেষ্টা নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলিকে সময়মতো শনাক্ত করতে পারবে এবং প্রয়োজনীয় জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সুবিধা প্রদানেও দ্রুততা আসবে।"

রাজেশ আরও জানাচ্ছেন, সমস্ত রাজ্যকে কেন্দ্রের তরফে অনুরোধ করা হচ্ছে যাতে প্রতিদিন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি থেকে যতদূর সম্ভব সব পজিটিভ কেসের নমুনা INSACOG জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবরেটরিগুলিতে (IGSLs) পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন- কোভিডের টিকাতেই ছিল মৃত্যুফাঁদ! বিস্ফোরক যে তথ্য আসছে প্রকাশ‍্যে

বর্তমানে, সারা দেশে ৫০ টিরও বেশি পরীক্ষাগারের INSACOG নেটওয়ার্ক নির্বাচিত নমুনাগুলির সিকোয়েন্সিং করছে। আন্তর্জাতিক যাত্রীদের ২ শতাংশের মধ্যে কোভিড পজিটিভ কেস শনাক্ত করা হয়েছে। তবে নজরদারি বাড়ানো হলেও, এখনও পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমানে করে দেশে আসার ক্ষেত্রে বিধি নিষেধের কোনও পরিবর্তন হয়নি। গত মাসেই জানানো হয়েছে, RT-PCR বা সম্পূর্ণ টিকাকরণের শংসাপত্রের প্রয়োজনীয়তাও আর তেমন নেই। 

স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণের দাবি, ভারত, কোভিড-বিধি লাগু করে এবং ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে সংক্রমণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে বলেই দেশে এখন সপ্তাহে মোটামুটি ১,২০০ টি সংক্রমণের খবর মিলছে। যদিও গত ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, গত সপ্তাহের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কিন্তু ১০% বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানাচ্ছে, সাপ্তাহিক মৃত্যুর সংখ্যা তিনটি অঞ্চল জুড়ে বেড়েছে: আফ্রিকান অঞ্চল, আমেরিকান অঞ্চল এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল।

এই মাসের শুরুতেই ‘শূন্য কোভিড-১৯’ নীতি শিথিল করেছিল চিন, তারপর হঠাৎ সেদেশ থেকে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির খবরও পাওয়া গেছে। কেন আচমকা এই বৃদ্ধি?

ওমিক্রোন সাব-ভ্যারিয়েন্ট BF.7 নাকি এই সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত। ভারতের জাতীয় Sars-CoV-2 জিনোম সিকোয়েন্সিং নেটওয়ার্ক থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, নভেম্বর মাসে মাত্র ২.৫% সংক্রমণের ক্ষেত্রে BA.5 মিলেছে (BF.7 আসলে BA.5 এরই একটি শাখা)। বর্তমানে, একটি রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট XBB ভারতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, নভেম্বরের ৬৫.৬% সংক্রমণের জন্য দায়ী এটিই।

More Articles