একসঙ্গে দার্জিলিংয়ের ১২২৯ হোটেলের যোগাযোগ! বেছে নিন যেটা আপনার চাই...
Darjeeling: হোমস্টে বুকিংয়ের নামে দার্জিলিংয়ে চলছে অবাধ প্রতারণা। আর পুজোর আগে সেই অপরাধ প্রতিরোধে আরও সতর্ক হল পুলিশ।
বেড়াতে যাওয়ার নাম উঠলেই যে জায়গাটির কথা বাঙালির একবার হলেও মনে পড়বেই, তা শৈলশহর দার্জিলিং। আর সেই দার্জিলিংয়েই এবার গন্ডোগোল। বেশ কিছুদিন ধরেই দার্জিলিংয়ে গজিয়ে উঠেছে সাইবার অপরাধীদের বাসা। হোমস্টে বুকিংয়ের নামে চলছে অবাধ প্রতারণা। আর পুজোর আগে সেই অপরাধ প্রতিরোধে আরও সতর্ক হল পুলিশ। ছুটিতে বেড়াতে গিয়ে যাতে ওই ধরনের প্রতারণার সম্মুখীন না হতে হয় পর্যটকদের, তার জন্য একগুচ্ছ হোটেলের তালিকা প্রকাশ করেছে দার্জিলিং পুলিশ। যেখানে গেলে পর্যটকদের ঠকার ঝুঁকি কম।
প্রযুক্তি যত এগিয়েছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধের পরিমাণ। যত বজ্র আঁটুনি, ততই ফস্কা গেরো। সাইবার অপরাধীরা নানা ফাঁক ফোকর গলে খুঁজে নিচ্ছে নতুন নতুন অপরাধের রাস্তা। বেড়াতে যাওয়ার আগে হোমস্টে বা হোটেল বুক করে যেতেই পছন্দ করেন বেশিরভাগ পর্যটকেরা। যাতে ঘুরতে গিয়ে কোনও ঝঞ্ঝাটের সম্মুখীন হতে না হয়। আর সেই হোটেল পছন্দ করার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সার্চের চেয়ে বড় বন্ধু আর কে-ই বা আছে। গুগলে গিয়ে দার্জিলিংয়ের হোটেল খুঁজলেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে একগুচ্ছ হোটেল, হোমস্টের নাম। আর সেইসব নামকে কেন্দ্র করেই বিরাট প্রতারণা চক্র চালাচ্ছে একদল সাইবার অপরাধী।
আরও পড়ুন: ঘিঞ্জি দার্জিলিং আর নয়, এবার সাধ্যের মধ্যেই অচেনা পাহাড়! গরমের ছুটিতে যাবেন কোথায়?
কীভাবে অপরাধ সংঘটিত করছে অপরাধীরা? সাধারণ ভাবে ইন্টারনেট থেকে হোটেলের নম্বর খুঁজে নিয়ে পর্যটকেরা সেরে রাখেন হোটেলের অগ্রিম বুকিং সেরে রাখছেন। দিয়ে ফেলছেন টাকাও। কিন্তু সেই হোটেলে পৌঁছে তাঁরা দেখছেন, তাঁদের নামে সেই হোটেলে কোনও বুকিং হয়নি তাঁদের নামে। স্বাভাবিক ভাবেই আকাশ থেকে পড়ছেন পর্যটকেরা। হোটেল বুকিং হয়নি, অথচ মাঝখান থেকে তাঁদের কষ্টের টাকা গেল কোথায়! বলাই বাহুল্য, তা গোটাটাই যাচ্ছে প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে। এমন একাধিক অভিযোগ জমা হয়েছে দার্জিলিং পুলিশের কাছে। আর তাতেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ।
এই প্রতারণার হাত থেকে দার্জিলিং ও পর্যটকদের বাঁচাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ১২৯৩ টি হোটেল এবং হোমস্টে-র একটি তালিকা প্রকাশ করেছে পুলিশ। যেসব হোটেল বা রিসর্টে গেলে ঠকার ঝুঁকি কম পর্যটকদের। সাইবার অপরাধীদের জাল থেকে দার্জিলিংকে বাঁচাতেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে। ওই তালিকায় থাকা প্রতিটি হোটেল এবং তার যোগাযোগের মাধ্যমকে রীতিমতো পরীক্ষা করে দেখেছে পুলিশ, সেসব জায়গায় যে কোনও প্রতারণাচক্র সক্রিয় আছে কিনা! একটি কিউআর কোডও দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। থাকছে লিঙ্কও। কিউআর কোড স্ক্যান করে বা ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই খুলে যাবে একটি ওয়েবপেজ। যেখান থেকে হোটেল পছন্দ করতে পারবেন পর্যটকেরা।
বিশদে জানুন, https://darjeelingpolice.org/images/hotels-and-homestays-in-Darjeeling.pdf - এই লিঙ্কে ক্লিক করে।
আরও পড়ুন:টুং, সোনাদা, ঘুম পেরিয়ে অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন, কেমন আছে ‘শৈশবের দার্জিলিংটা’?
শুধু পুলিশই নয়, এই উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন হোটেলের মালিকেরাও। পর্যটকদের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে স্বতপ্রণদিত হয়ে সমস্ত তথ্য জোগান দিয়েছেন তাঁরাই। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ করা হয়েছে। পেমেন্ট করার আগে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিচ্ছেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরা। দার্জিলিং ঘিরে শুধু বাঙালিদেরই নয়, দেশ বিদেশের বহু পর্যটকেরই আবেগের শেষ নেই। আর এইসব সাইবার অপরাধীদের জন্য সেই দার্জিলিংয়ের নাম খারাপ হচ্ছে বারবার। আর শৈলকন্যাকে এমন কলঙ্কের হাত থেকে বাঁচাতেই একযোগে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।