দাউদ ইব্রাহিমের সম্পত্তি বিক্রি হচ্ছে জলের দরে! কিনতে পারেন আপনিও?
Dawood Ibrahim Property Sell : দাউদেরই পরিবারের মালিকানাধীন জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে জলের দরে! তাও আবার নিলামের মাধ্যমে।
তিনি এককালে ছিলেন ভারতের হাড় কাঁপানো তারকা অপরাধী। ছিলেন বলা ভুল, এখনও। ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসবাদী যে দাউদ ইব্রাহিমই, তা এক বাক্যে মেনে নিতে হয়। কিছুদিন আগেই দাউদকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ভারতের অপরাধের মানচিত্রে এখনও দাউদের সমকক্ষ কেউ নেই। অথচ সেই দাউদেরই পরিবারের মালিকানাধীন জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে জলের দরে! তাও আবার নিলামের মাধ্যমে। দাউদের পরিবারের মালিকানাধীন চারটি কৃষি জমির নিলামে উঠেছে, দাম মাত্র ১৯ লাখের সামান্য বেশি! জমিগুলি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদের পৈতৃক সম্পত্তি এবং মহারাষ্ট্রের রত্নাগিরি জেলার মুম্বাকে গ্রামে অবস্থিত।
ঠিক কতজন ওই নিলামে দর হাঁকবেন তা স্পষ্ট নয়। তবে একজন অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন। তিনি হলেন আইনজীবী এবং প্রাক্তন শিবসেনা সদস্য অজয় শ্রীবাস্তব। এর আগে দাউদের তিনটি সম্পত্তির সফল নিলাম করেছিলেন তিনিই৷ এই সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মুম্বাকে গ্রামে দাউদের শৈশবের বাড়ি। এই বাড়িতেই দাউদ জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
২০০১ সালে তিনি যে দোকানগুলির জন্য নিলাম করেছিলেন সেগুলি আইনি জটিলতায় আটকে গেলেও অজয় শ্রীবাস্তবের দৃঢ় বিশ্বাস ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ডের বাড়ির দলিল শিগগিরই পাবেন তিনি৷ আইনজীবী শ্রীবাস্তব জানাচ্ছেন, সেখানে একটি সনাতন পাঠশালা চালু করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
আরও পড়ুন- চা খেতে ডেকেছিলেন খোদ দাউদ ইব্রাহিম! ঋষি কাপুরের বয়ানেই স্পষ্ট বলিউডের মাফিয়া যোগ?
২০২০ সালে বাংলোটির জন্য নিলাম করেছিলেন তিনি। ইতিমধ্যেই সনাতন ধর্ম পাঠশালা ট্রাস্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং বিদ্যালয় নির্মাণের কাজও শুরু হবে। মানুষের মনে দাউদ সম্পর্কে যে ভয় রয়েছে তা দূর করার জন্যই তিনি ২০০১ সালে নিলামে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানান। তারপরে আরও বহু মানুষই দাউদের সম্পত্তির নিলামে এগিয়ে এসেছেন। শুক্রবার চারটি জমির নিলামটি হবে মুম্বইতে। এই চারটি জমিই স্মাগলার এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানিপুলেটর অ্যাক্ট, ১৯৭৬-এর অধীনে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল৷ জমির মূল্য ঠিক হয়েছে ১৯.২২ লক্ষ৷
দাউদের সম্পত্তির ২০১৫ সালের নিলামে দর হেঁকেছিলেন এমন একজন অবশ্য শুক্রবারের নিলাম পদ্ধতিতে বেশ অসন্তুষ্ট। তাঁর কাছে এই গোটা বিষয়টি হাস্যকর। দাউদের কাছে ১৯ লাখ টাকার কোনও অর্থই নেই সকলেই জানেন। এই ধরনের সম্পত্তি নিলামের নামে আসলে সরকারের টাকা নষ্ট করা হচ্ছে বলেই তাঁর দাবি। তাহলে সরকারের এই সব করার দরকারই বা কী? প্রশ্ন করেছেন প্রাক্তন সাংবাদিক এস বালাকৃষ্ণান।
বালাকৃষ্ণান ২০১৫ সালে ডনের মালিকানাধীন একটি রেস্তোরাঁর জন্য ৪.২৮ কোটি টাকা দর হেঁকেছিলেন বিড করেছিলেন কিন্তু সময়মতো টাকা জমা দিতে না পারায় সম্পত্তি হারান। রেস্তোরাঁটি ছিল মুম্বইয়ের পাকমোদিয়া স্ট্রিটে। বালাকৃষ্ণানও দাউদের সন্ত্রাসের শেষ ঘটাতেই রেস্তোরাঁটির জন্য দর হাঁকেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়েই। কিন্তু সরকার টাকা জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ায়নি।
বালাকৃষ্ণান জানাচ্ছেন, ৪ কোটি জমা করতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি, যেভাবেই হোক না কেন। জনসাধারণের সমর্থন পেয়েছিলেন, সকলেই সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু বাকি টাকা দেওয়ার জন্য মাত্র তিন সপ্তাহ হাতে ছিল তাঁর। এর মাঝে বড়দিনের ছুটিও পড়ে যায়। সরকারকে তিনি অনুরোধ করেছিলেন কিছুটা সময় দেওয়ার জন্য। স্মাগলার এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানিপুলেটর অ্যাক্টের অধীনে আরও এক মাস সময় চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু সরকার তাতে রাজি হয়নি। ২০০০ সালে দাউদের সম্পত্তির প্রথম নিলামে কেউ অংশই নেননি ভয়ে। সেই ভয়ের পর্ব সাঙ্গ হয়ে এখন মাত্র ১৯ লাখে মিলছে দাউদের জমি!