ট্রেন তো নয়, নরক! ভারতীয় রেলের সবচেয়ে নোংরা ট্রেন কোনগুলি?

Dirtiest trains in India: এক মাসে, ভারতীয় রেল এই দশটি ট্রেন সম্পর্কে ১০৭৯টি অভিযোগ পেয়েছিল।

সদ্য চালু হওয়া হাওড়া নিউ জলপাইগুড়ি বন্দেভারত ট্রেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কাগজ, যাত্রীদের বিলাসবহুল আসনের নীচে খাবারের প্যাকেট, তরকারির ঝোল! সদ্য চালু হওয়া ঝাঁ চকচকে ট্রেনের এই দুর্দশার ছবি সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতীয় ট্রেনের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নোংরা আসন, দুঃসহ শৌচাগার নিয়ে অভিযোগের অন্ত ছিল না। বছর খানেক হলো অবস্থার বেশ কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে তা স্বীকার করতেই হয়। তা সত্ত্বেও, গরিব রথ থেকে শুরু করে রাজধানী এক্সপ্রেস- ভারতীয় রেলের হাজার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রেলের কামরার অস্বাস্থ্যকর অবস্থার, অপরিচ্ছন্নতা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না যাত্রীরা। টুইটারে তো বটেই, রেল মদদ অ্যাপেও ভারতীয় রেলের কাছে ট্রেনের নোংরা অস্বাস্থ্যকর অবস্থা সম্পর্কে অভিযোগ করছেন যাত্রীরা। সহরসা-অমৃতসর গরিব রথ, স্রেফ ডিসেম্বর মাসেই এই একটি ট্রেনের বিরুদ্ধে ৮১ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। শুধু এই ট্রেনটিই নয়, ভারতীয় রেলওয়ের সবচেয়ে নোংরা ট্রেনের তালিকা দেখলে রীতিমতো হাঁ হয়ে যেতেই হয়।

Rail Madad অ্যাপ অনুযায়ী, সহরসা-অমৃতসর গরিব রথ ট্রেনটি ভারতে সবচেয়ে নোংরা ট্রেন। এই ট্রেনটি পঞ্জাবের শহর অমৃতসর থেকে বিহারের জেলা সহরসা পর্যন্ত চলে। দুই দিক থেকেই এই ট্রেনে উপচে পড়া ভিড় হয়। এই ট্রেনের বিরুদ্ধে মোট ৮১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। নোংরা কোচ, নোংরা বিশ্রামাগার, সিঙ্ক কেবিন নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।

আরও পড়ুন- ট্রেনের হর্নেই লুকিয়ে সমস্ত ইঙ্গিত! ভারতীয় রেলের হর্ন ব্যবস্থার অজানা যেসব তথ্য

এর পরেই রয়েছে, শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী-বান্দ্রা স্বরাজ এক্সপ্রেস ট্রেন। এই ট্রেন সম্পর্কে ৬৪টি অভিযোগ জমা পড়েছে। আর বান্দ্রা-শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী স্বরাজ এক্সপ্রেস ট্রেন বিষয়ে ৬১ টি অভিযোগ এসেছে। ভারতের সবচেয়ে নোংরা ট্রেনের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফিরোজপুর-আগরতলা ত্রিপুরা সুন্দরী এক্সপ্রেস ট্রেন। এই ট্রেনের নোংরা পরিবেশ নিয়ে ৫৭ টি অভিযোগ জমা পড়েছে। পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের কাছে এই সফরগুলি নরক গুলজারের সমান!

বাদ নেই রাজধানীও! নয়াদিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেনের নোংরা অবস্থা নিয়ে ৩৫টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অমৃতসর ক্লোন স্পেশাল ট্রেন বিষয়ে ৫০টি, আজমের-জম্মু তাওয়াই পূজা এক্সপ্রেস ট্রেনের বিরুদ্ধে ৪০টি এবং আনন্দ বিহার-জোগবানি সীমাঞ্চল এক্সপ্রেস ট্রেন যা দিল্লি থেকে বিহার অবধি যায় তার বিরুদ্ধেও ৫২টি অভিযোগ করা হয়েছে।

এক মাসে, ভারতীয় রেল এই দশটি ট্রেন সম্পর্কে ১০৭৯টি অভিযোগ পেয়েছিল। এই অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর অবস্থা, জলের অভাব, নোংরা কম্বল চাদর এবং নোংরা আসনের সমস্যা। প্রশ্ন উঠছে, ট্রেন সাফাই করেই যাত্রীদের তোলা হয়। তাহলে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে এই অবস্থার সৃষ্টি হয় কীভাবে? সরকারের দায় নাকি যাত্রীদের চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞান হীনতা? উত্তর সকলেরই জানা।

 

More Articles