নামে কালী, অথচ গায়ের রং ধবধবে সাদা! জানেন বাংলার কোথায় রয়েছে বিখ্যাত শ্বেত কালী?

White Kali : গায়ের রং ধবধবে সাদা! ব্যতিক্রমী কালী মূর্তির পুজো হয় এই বাংলায়, জানেন কোথায়?

কালী, নামের মধ্যেই যেন নিহিত রয়েছে কালো রূপের কথা। দেবীর কালো রঙের রূপকে বন্দনা করা হয় কালী নামে। বিবসনা, গলায় মুণ্ড মালা, এক হাতে খড়গ, শিবের বুকের ওপর দন্ডায়মান, এবং জিভ কাটা। এই ছবিটাই পরিচিত। কিন্তু সম্প্রতি OTT মাধ্যমে একটি সিরিজ আসে যেখানে কালীর সাদা রঙের রূপকে দেখানো হয়। নাম কালী, অথচ গায়ের রং সাদা! পর্দায় দেবীর এহেন রূপ সামনে আশার পর থেকেই আলোচনা শুরু হয়। আদৌ বাংলার কোথাও এমন দেবী রূপের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা সেই নিয়েও বিভিন্ন মহলে তরজা তুঙ্গে।

কালী প্রসঙ্গে আলোচনা উঠলে বারবার কলকাতা শহরের নাম যেন চলেই আসে ঠিকই, কারণটা অবশ্য কলকাতা শহরের নামকরণ, সেটির সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে কালীর প্রসঙ্গ। তবে, সারা বাংলা জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এমন বেশ কিছু কালীর রহস্য যা আজও অবাক করে। সেই ইতিহাস শুনলে গায়ে কাঁটা দেয়। দেবীর রুদ্র মূর্তির ব্যাখ্যা মেলে বিভিন্ন প্রকারে। কলকাতার কালী বলতেই প্রথমে মাথায় আসে, কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর অথবা ঠনঠনিয়ার প্রসঙ্গ। কিন্তু ভক্তি এবং ভক্তের জোর ছড়িয়ে গিয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা শহরেও। কোথাও কোথাও প্রচলিত কালী রূপের ধারণা বারবার ভেঙেচুরে গিয়েছে বিভিন্ন প্রকারে।

আরও পড়ুন - দেখতে হুবহু এক, কলকাতায় তৈরি হচ্ছে নয়া ‘দক্ষিণেশ্বর মন্দির’, কী কী থাকছে অন্দরে?

দেবীর রুদ্র রূপ, বিবসনা, চার হাত, হাতে রয়েছে অস্ত্র এবং কাটা মুন্ড। এই রূপেই তিনি স্বয়ং শিবের বুকের ওপর দন্ডায়মান, এবং জিভ কাটা। তবে এই রূপের আধার কোনও ধ্রুবক যে নয়, তা অবশ্য বিভিন্ন জায়গায় বোঝা যায়। কখনও দেবী ধরা দেন শান্ত মূর্তিতে, কখনও আবার হাতের সংখ্যা কমে দুই অথবা বেড়ে আট হয়ে যায়। তবে আজ যে কালীর প্রসঙ্গে আলোচনা করা হবে তার ক্ষেত্রে তফাৎ গায়ের রঙে। আদৌ বাংলার কোথাও বাস্তবে শ্বেত কালীর অস্তিত্ব আছে কিনা OTT সিরিজের দেবী রূপ সেই প্রশ্নই উস্কে দিয়েছে।

উত্তরটা হল, হ্যাঁ আছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটির লালবাজার এলাকায় রয়েছে এমনই এক কালী। নাম ফলহারিণী কালী, যার গায়ের রং শ্বেতশুভ্র। এই কালীপুজো নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু লোককথা। একে তো গায়ের রং ধবধবে সাদা। শুধু গায়ের রঙের তফাৎই নয়, এখানে দেবী সেই রুদ্র মূর্তিও যেন ধরা দেয় সৌম্য রূপে। শোনা যায়, ২০০৫ সালে এই পুজো প্রথম শুরু করেন মন্দিরের প্রধান সেবাইত মধুময় ঘোষ। যদিও এর অনেক আগে থেকেই কালীপুজোর সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন এই সেবাইত তবে দুই দশক আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড় থেকে এই বিশেষ শ্বেত পাথরের মূর্তি নিয়ে আসেন তিনি। তারপর থেকেই এখানে চলে বাংলার একক শ্বেতকালীর পুজো। মধুময়বাবুই নিত্য পুজো করেন এখানে। প্রতি মাসের অমাবস্যা এবং বছরের বিশেষ বিশেষ উৎসবে এখানে বড় করে পুজো হয়। প্রধান পুজো হয় জ্যৈষ্ঠ মাসে। পুজোকে ঘিরে ভিড় জমে ভক্তদের। দেবীর এমন ব্যতিক্রমী চেহারা মিলে ওই ভক্তির আধারে।

More Articles