মানুষ পাচারের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় বিমান? নেপথ্যে যে কাহিনি 'ডানকি ফ্লাইটে'র

Real Life Dunki: ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরলেন আটকে পড়া দুই শতাধিক ভারতীয়। ২৭৬ জন যাত্রীবহ একটি বিমানকে মানুষ-পাচার করার সন্দেহবশত আটকে রাখা হয়েছিল ফ্রান্সে। মঙ্গলবার সেটি মুম্বই ফিরে এসেছে।

অবশেষে ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরলেন আটকে পড়া দুই শতাধিক ভারতীয়। ২৭৬ জন যাত্রীবহ একটি বিমানকে মানুষ-পাচার করার সন্দেহবশত আটকে রাখা হয়েছিল ফ্রান্সে। মঙ্গলবার সেটি মুম্বই ফিরে এসেছে। বিমানটির নাম এয়ারবাস এ৩৪০। বিমানটি লিজেন্ড এয়ারলাইনস্‌ নামক একটি রোমানিয়ান চার্টার কোম্পানির। মঙ্গলবার ভোর চারটের সময় বিমানটি ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছায়। প্যারিসের ভাত্রি বিমানবন্দর থেকে সেখানকার সময় অনুযায়ী ২.৩০টা নাগাদ যাত্রা শুরু করে বিমানটি।

মুম্বই বিমানবন্দরে পা রাখার পর যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উড়ান-নিরাপত্তা কর্মীরা। বয়ান নথিবদ্ধ করার পর ছাড়া হয় তাঁদের।

ফরাসি সরকারের রিপোর্ট মোতাবেক, বিমানটি মুম্বই থেকে ২৭৬ জন যাত্রী নিয়েই পাড়ি দিয়েছিল মুম্বই বিমানবন্দর থেকে। কিন্তু ফ্রান্সে পৌঁছে ২৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এবং দুজন নাবালক ফরাসি সরকারের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আটক করা হয় আরও দুই ব্যক্তিকে। বিচারকের সামনে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত করা হয়েছিল তাদের। এর আগেও ৩০৩ জন যাত্রীসহ একটি ভারতীয় বিমানকে ভাত্রি বিমানবন্দরে আটক করেছিল ফরাসি সরকার। তার মধ্যে ১১ জন অভিভাবকহীন নাবালক যাত্রী। সন্দেহ ছিল সেটিতে করে মানুষ পাচার করা হচ্ছে। আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য উপযুক্ত বিছানার ব্যবস্থা করা হয়। ব্যবস্থা করা হয় শৌচালয় ও স্নানাগারের। খাবার ও উষ্ণ পানীয়ের ব্যবস্থা ছিল ভাত্রি এয়ারপোর্টের হলে।

মুম্বই থেকে রওনা হয়ে নিকারাগুয়া যাচ্ছিল উড়োজাহাজটি। মাঝে দুবাইতে টেকনিক্যাল কারণে থামানো হয় সেটিকে। এরপর সেটি থামে ভাত্রি বিমানবন্দরে। সেখানেই বিমানটিকে মানুষ পাচারের সন্দেহে আটক করে ফরাসি পুলিশ। বিমানটির উদ্দেশ্য কী, যাত্রীদের অবস্থাই বা কী─তা নিয়ে সামগ্রিক তদন্ত চালায় ফরাসি সরকার। নিয়োগ করা হয় একটি বিশেষ ইউনিট, যা বিভিন্ন পাচারজনিত অপরাধের তদন্ত করে থাকে।

মার্কিন মুলুকে যাঁরা আশ্রয় ভিক্ষা করে, তাদের কাছে নিকারাগুয়া একটি অত্যন্ত প্রিয় গন্তব্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার পেট্রোল-এর দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, এ বছর মার্কিন মুলুকে অবৈধ ভাবে প্রবেশের চেষ্টা করেছে ৯৬ হাজার ৯১৭ জন ভারতীয়। গত বছরের তুলনায় যা ৫১.৬১% বেশি। সিবিপি-র রিপোর্ট বলছে, তাদের মধ্যে নিদেন ৪১ হাজার ৭৭০ জন ভারতীয় মেক্সিকো সীমানা দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেছে। নিকারাগুয়ার মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে ভ্রমণের ছাড়পত্র পাওয়া তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই সহজ। তাই এই দেশগামী বিমানগুলিকে 'ডানকি ফ্লাইট' বলা হয়ে থাকে।

More Articles