পুজো ছিল, পুজো নেই : সুমন চট্টোপাধ্যায়
Durga Puja 2023 : পুজো বলতে ছিল বালক সঙ্ঘ আর মিলন চক্রর রেষারেষি। চাঁদা কাটতে যাওয়া আর দেশি স্বাদের সন্ধ্যা! থিমের ভিড়ে এখন কোনও প্রতিমা দেখে কি ভক্তিতে আপনা থেকেই জড়ো হয় দু'হাত? লিখলেন সুমন চট্টোপাধ্যায়
পুজো এল। এল বুঝি? সবাই যখন বলছে, নিশ্চয়ই এল। আমি মফসসলে বড় হয়েছি, পুজো যে আসছে তা টের পেতাম প্রকৃতির ইঙ্গিতে, মনের অন্দরের তা থৈ তা থৈ আনন্দে। পুজো মানে লেখাপড়া থেকে দিন কতকের মুক্তি, নতুন জামা কাপড়, লম্বা ছুটি আর সেই ছুটিতে লিলুয়ায় পিতামহের আবাসে তুতো ভাই-বোনেদের সঙ্গে কলকাকলিতে মেতে ওঠা। কাউকে বলে দিতে হতো না পুজো আসছে, পুজো নিজেই বলে দিত আমি আসছি। শরতের হাওয়ায় তখন হিমের পরশ থাকত, মাথার উপরে আকাশে নির্জলা, ঘন নীল পুঞ্জপুঞ্জ মেঘের অলস ঘোরাফেরা, পায়ের তলায় শিশির-সিক্ত প্রাণোচ্ছল ঘাস। মা বলতেন, খালি পায়ে শিশির মাখা ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটা নাকি ভালো, আমি অবশ্য ভালো-মন্দের তোয়াক্কা না করেই খালি পায়ে হাঁটতাম, বড্ড ভালো লাগত। শিউলিতলা ভরে থাকত ঝরা ফুলে, তলার মাটি পর্যন্ত দেখা যেত না। টগর ফুলগুলো পিটিপিট করে তাকিয়ে থাকত কিছুটা যেন হীনম্মন্যতাবোধেই। শরৎ মানে শিউলি, শিউলি মানে শরৎ। আঁজলা ভরে শিউলি কুড়িয়ে বাড়ি এসে মায়ের হাতে তুলে দিতাম, এই নিবেদনটুকুই ছিল আমার মাতৃ-আরাধনা, মন্ত্রহীন, উপাচারহীন, নিরুচ্চার, তবু ভক্তি আর ভালোবাসার সবটুকু নিংড়ে…

Whatsapp
Support quality writing
Encourge writers
Access on any device
