ওমলেট, পোচ অতীত! সহজেই বাড়িতে বানান মিশরীয়, অ্যাভোকাডো ডিম স্যালাড, রইল রেসিপি

Egg Salad Recipe: মেনস্ট্রুয়েশনের জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডিমের মধ্যে থাকা আয়রন এই ঘাটতি মেটাতে পারে সহজেই।

সামনেই পুজো তাই অনেকেই শুরু করেছেন ডায়েট! আবার অনেকেই রান্নাঘরের আগুন তাপে বেশিক্ষণ সময় নষ্ট করতেও চাইছেন না। তাঁদের জন্য আজকের এই রেসিপি যে মন ভালো করে দেবে তা হলফ করে বলা যায়। বাচ্চা থেকে বুড়ো কম বেশি সকলেরই পছন্দের খাবারের তালিকাতে রয়েছে ডিমের নাম। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর তাই অনেকক্ষণ পেট ভর্তি রাখতে পারে ডিম। পাশাপাশি ডিম চুল ও ত্বকেও পুষ্টির জোগানও দেয়। তাই ভরসা রাখতে পারেন স্যালাডে। স্যালাড মানেই যে একগুচ্ছ সবুজ শাক-পাতা তা ভাবার কারণ নেই। বরং যে সব স্যালাডকে পুরো ‘মিল’ বা স্বয়ংসম্পূর্ণ পদ হিসেবে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে, তাতে সবুজের পাশাপাশি থাকছে মাছ-মাংস-ডিম জাতীয় নানা প্রোটিনও। অর্থাৎ এক বাটি স্যালাড থেকেই পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টিগুণ।

জলখাবারে ডিম খাওয়ার চল যদিও সব দেশেই যথেষ্ট। তবে দিনের যে কোনও সময়ে ডিমের স্যালাড ভরপুর খাবার হিসেবে কাজ করতে পারে। দিনের শুরুতে অন্তত একটা ডিম খেলে যেমন প্রয়োজনীয় পুষ্টি যাবে শরীরে, তেমন সহজেই খাবারও হবে মুখরোচক।

মিশরীয় ডিম স্যালাড

এই স্যালাডটি কাঁচা নয়। একটু রান্না করতে হয়। ডিমের সঙ্গে এতে প্রাধান্য পায় বিনসের বীজ। অর্থাৎ, এই স্যালাডের দু’টি উপকরণই প্রোটিনে ভরপুর। তাই এতে যেমন শরীরের পুষ্টির ব্যবস্থা হবে, তেমনই পেট ভরা থাকবে অনেকটা সময় পর্যন্ত।

স্যানডুইচ স্যালাড

বেশির ভাগ সময় বাচ্চারা টিফিন খেতে চায় না। টিফিনে স্যানডুইচ বা অন্য কিছু দিলেও তাদের মুখে রচে না। এক্ষেত্রে স্যানডুইচের মধ্যে ডিমের ব্যবহার সমস্যার সমাধান করতে পারে।

আরও পড়ুন- মিষ্টি বিনে প্রাণ মজে না? রোগ বালাই এড়াতে চিনির বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এই দ্রব্যগুলি

ভারতীয় ডিম স্যালাড

একেবারে ভারতীয় স্টাইলে বানানো এই ডিমের স্যালাডের চাহিদা রয়েছে। মূলত সেদ্ধ ডিম দিয়েই স্যালাড বানানো হয়। সকালবেলা জলখাবারে খান ডিমের স্যালাড। এটা যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনই অনেকক্ষণ পেট ভর্তিও রাখে। আর যাঁরা একটু বেশি শরীর সচেতন, খেয়াল রাখেন নিজের ওজনের উপরে তাদের জন্য এটা একেবারে পারফেক্ট।

অ্যাভোকাডো ডিম স্যালাড

এমনিতেই অ্যাভোকাডোকে পুষ্টির পাওয়ার হাউস বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও ভিটামিন। এটা এমনিতেই রোগ কমাতে সাহায্য করে, আর এর সঙ্গে ডিম যেন বাড়তি স্বাদ যোগ করে।

গ্রিলড এগ- চিকেন স্পিনাচ স্যালাড

এক কাপ লেটুস, নুন দিয়ে ভাপানো পালং শাক, অল্প মশলায় গ্রিল করা একটি চিকেন ব্রেস্ট, একটি টম্যাটো, অল্প পেঁয়াজ ও ক্যাপসিকাম কুচি, সিদ্ধ ডিম, লেবুর রস, কয়েকটি আমন্ড, নুন, গোলমরিচ এবং পারমেজ়ান চিজ় মিশিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন গ্রিল়ড চিকেন স্পিনাচ স্যালাড।

এগ চিকেন চিজি স্যালাড

যারা চিকেন খেতে ভালোবাসেন অথচ ভাবছেন রোগা হতে গেলে চিকেন ছাড়তে হবে, তাদের চিন্তার দিন এবার শেষ। সেদ্ধ চিকেন ব্রেস্টের টুকরো, সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ, টুকুরো টুকরো করে কেটে রাখা চিজ, গোলমরিচ গুঁড়ো, লবণ, মেয়োনিজ, ধনেপাতা কুচি, লেটুস অথবা বাঁধাকপির পাতা নিয়ে নিন। চিকেন ব্রেস্টের টুকরো, চিজ, লবণ, গোলমরিচ গুঁড়ো একসঙ্গে মেশান, পরিমাণ মতো মেয়োনিজ যোগ করুন। এবার এটি বাঁধাকপি বা লেটুস পাতার উপর পরিবেশন করুন।

ডিম-টমেট্যোর স্যালাড

যাদের হাতে একদম সময় নেই, চটজলটি জলখাবার বানাতে হবে তাদের জন্য একেবারে পছন্দের স্যালাড হল ডিম-টমেট্যোর স্যালাড। টমেট্যো কুচি, পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, ডিম সেদ্ধ করে কেটে নিন। এবার ওপর থেকে সৈন্ধব লবণ, গোলমরিচ গুঁড়ো, অলিভ অয়েল ছড়িয়ে বানিয়ে ফেলুন ডিম এবং টমেটোর স্যালাড। পাঁচ মিনিটে তৈরি হয়ে যাবে পছন্দের স্যালাড।

আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোয় সারা রাতের প্ল্যান! রইল কলকাতার সেরা রুফটপ লাউঞ্জের সেরা ঠিকানা-মেনু-খরচ

উপকারিতা

ডিমে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন বি-১২ আপনি যা খাচ্ছেন সেই খাবারকে এনার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। আবার ডিমে আছে ভিটামিন-এ, যা দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করতেও সহায়তা করে। কেবলমাত্র ডিমেই রয়েছে ভিটামিন-ডি, যা পেশীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ডিমের সবচেয়ে বড় গুণ হল, ওজন কমাতে সাহায্য করে। জলখাবারে রোজ একটি ডিম মানে সারাদিনের এনার্জি সঞ্চয় করে রাখা। গবেষণায় দেখা যায়, শরীর থেকে দিনে প্রায় ৪০০ ক্যালোরি কমাতে পারে সকালে একটি ডিম খাওয়া। তার মানে মাসে ওজন কমার পরিমাণ প্রায় তিন পাউন্ড। সমীক্ষা বলছে, ৬৫% বডি ওয়েট, ১৬% বডি ফ্যাট, ৩৪% কোমরে জমে থাকা মেদের পরিমাণ কমাতে পারে ডিম!

ডিমে আছে আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস। বিশেষত মেয়েদের মেনস্ট্রুয়েশনের জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডিমের মধ্যে থাকা আয়রন এই ঘাটতি মেটাতে পারে সহজেই। জিঙ্ক শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই সেদ্ধ কিংবা স্যালাড হিসেবে খাবারে ডিমের গুরুত্ব রয়েছে।

More Articles