মধ্যবিত্ততাকে ঘেন্না করার সাহস গদ্যে দেখিয়েছে গৌতম
Bengali Poetry: গৌতমের শেষ কবিতার বই ১৯৯১-এ। ‘ধুলোমাটি’। তারপর সে দেখতে পায় কৈশোরের সেই চুমকি-বসানো অন্ধকার দিনগুলো
২-এল কর্নফিল্ড রোড, কলকাতা ১৯। মা আর ঠাম্মার সঙ্গে থাকে পিতৃহারা কিশোরটি। ফাঁক পেলেই বেরিয়ে পড়ে একা-একা। আশপাশের বস্তিতে। বস্তির ক্লাবে। খুল্লামখুল্লা জীবনে। সেখানে গলির ফুটবল আছে। নেশা আছে। গ্যারাজের ভাঙা গাড়ির ভেতর অচেনা আশ্রয় আছে। ফুটবল খেলতে খেলতে শুরু হয় খেপ খেলা। দক্ষিণে লেকের ওপারে রেলবস্তি থেকে উত্তরে পার্ক সার্কাস। কখনও মারপিট। রক্তাক্ত মুখে বাড়ি ফেরা। কোনওদিন-বা ফেরাও হয় না।
পেছনে, পরিবারের সব সদস্যই চাকরির এক একটা হিলটপে। এহেন বাড়ির ছেলে পাঁচিলে দিব্যি হাঁটছে, চলে যাচ্ছে বাইরে! কোথায়, ঠিক জানা যায় না। ভয় পেয়ে একদিন পাঠিয়ে দেওয়া হল পন্ডিচেরি— শ্রীঅরবিন্দ আশ্রমে।
বাঙালির তখন দুই মা। শ্রীশ্রীমা সারদামণি। শ্রীমা (দি মাদার) মীরা আলফাসা। দ্বিতীয় মায়ের আশ্রমে জায়গা হল তার। অমিতাভ সেনগুপ্তর। কালে-কালে সেই হল একদিন গৌতম সেনগুপ্ত। এ ছেলে কলকাতায় ফিরে কার খপ্পরে আর পড়বে, উৎপলকুমার বসুর ছাড়া?
একদিন ইব্রাহিম প্রভুর কাছে দাবি করে বসলেন— কিয়ামতের দিন কীভাবে আপনি মৃতদের জীবিত করবেন একটু দেখান, যাতে হৃদয়ে প্রশান্তি আসে। প্রভুর আসন থেকে উচ্চারিত হল, তুমি কি বিশ্বাস কর না? হজরত ইব্রাহিম বললেন, অবশ্যই করি। ঘোষিত হল— তাহলে চারটে পাখি ধরে পোষ মানাও। তারপর তাদের কেটে দেহের এক একটা টুকরো বিভিন্ন পাহাড়ের উপরে রেখে এসো। ফিরে এসে তাদের ডাকো। দেখবে, তোমার দিকে দৌড়ে তারা চলে আসবে। উড়তে উড়তে নয়, কেননা তাতে অন্যান্য পাখির সঙ্গে মিশে গিয়ে তোমার দৃষ্টিবিভ্রম ঘটতে পারে যে সেই চারটি পাখি কোন-কোনটি।
লেখা হয়ে গেল— ‘শেষ রাতের ছবি’। গৌতম সেনগুপ্তর প্রথম কবিতার বই। দ্বিতীয় বই ‘ধুলোমাটি’।
আরও পড়ুন : ‘ওয়েদারটা তোর হাসির মতো’, সোমক দাসের চিঠি ও প্রাচীন বটতলা
প্রথম যেদিন দেখি, সম্ভবত সেদিনই প্রথম— পাট্টার পাজামা, বোতাম-খোলা হাওয়াই শার্ট, হাওয়াই চপ্পল। কর্নফিল্ড রোড থেকে এতটা ঠেঙিয়ে সারকারিনার পেছনে, মাধব দাস লেনে। নিশীথের বাড়ি। আমাদের রোববারের আড্ডায়। সঙ্গে ছিল তার নতুন লেখা গল্প।
শেষপর্যন্ত গদ্যের দিকেই গেল গৌতম। কিন্তু সে গদ্য কেমন?
"১০ আগস্ট আমি, বিড়ি, ইমি গেলাম গুরুর জঞ্জির দেখতে। পাড়ায় ঢুকেই দেখি ট্রাম ডিপোর রুস্তম, মাবুর লেংড়ির মগাভাই রংসে সরবত খাচ্ছে, আমাদের পাড়ার শাহাজাদা শ্যু স্টোর্সের গায়ে হেলান দিয়ে। বিড়ি গ্লাসটা কেড়ে নিল। আমি কানের পাশে সিগারেটে ছ্যাঁকা দিলাম। ইমি গুরুর স্টাইলে লাথ মারল বাঁ পায়ে ছ'টা। ডান পায়ের দুটো ভৌমিক স্পেশাল, নেট ছেঁড়া।
১১ কিছু হল না। ১২ ময়দানের ছোট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে পাঁচ টাকা কুড়িয়ে পেলাম। ঠিক হল পরদিন ম্যাটিনিতে খোটে সিক্কে।
১৩ সকাল থেকে লোডশেডিং। জল নেই, ট্রাম নেই। হলও বন্ধ। এর মধ্যে কারা জিপে এসে আমাদের চ্যাম্পিয়ন স্ট্রাইকার টোটোদাকে মার্ডার করে গেল। দুপুরে মর্গ ফেরত দীপুদা কানের কাছে মুখ এনে বলল, এবার প্র্যাকটিসে দিল-জান লাগিয়ে দে বাপ। সিনিয়র টিমে তোর চান্স কিন্তু পাকা।
দু'দিন পর ক্লাবের দেয়াল থেকে বুক-ছেঁড়া মুমতাজকে নামিয়ে বিবেকানন্দের ছবি লাগিয়ে দিল বাবাভাই। লিখলে একলাইন, কিন্তু ব্যাপারটা অত সোজা নয়।
ওই ছবির সামনে ক্যাপটেন দীপুদা, জাহিরদা থেকে ভোলাদা, বড় গ্যারাজের জুলিবাবু এমনকী নাড়ুদাও বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকত। আমাদের টাচ্ তো দূরের কথা, বেশিক্ষণ দেখাও বারণ ছিল। একবার কী একটা এঁদো হলে বরমচারি দেখে বিড়ি লাফিয়ে কিস্ খেতে গিয়ে ছবির বুকটা ছিঁড়ে যায়। বড়োরা অ্যাকশনে ছিল বলে বেশি কিছু হয়নি। ফিরে এসে সব শুনে টোটাদা বিড়ির একটা দাঁত ভেঙে ব্যাপারটা সালটে দেয়।"
গল্পের নাম— ‘২৬/২’। রয়েছে ‘গল্প সমগ্র’-তে।
ঊনআশির শুরুতে যখন কলকাতা ছাড়ি, গৌতম তখনও দড়ির উপর হাঁটছে। পড়বে তো বটেই। কিন্তু কোনদিকে— কবিতার, নাকি গল্পের, স্পষ্ট নয়। ফের আসি ঊননব্বই সালের মাঝপর্বে। মাঝের দশ বছরের মধ্যে একদিন গৌতম হাজির পুরন্দরপুরে, আমার ওষুধের দোকানে। হাতে ব্রিফ কেস। ডেনড্রাইট বেচছে। একসঙ্গে ঘুরেছিলাম আমরা। আর তেমন কিছু মনে পড়ছে না কেন?
আমি যখন ফিরি, গৌতম কলকাতার বাইরে। শিলিগুড়িতে। হিন্দুস্থান লিভারে। সেলসের চাকরি কেমন লাগে? জানতে চাইলে একটা ঘটনার কথা বলেছিল। সম্ভবত ব্রিটিশ পেন্টসে তখন। মুম্বইয়ে। এক্সিকিউটিভদের মিটিং। এক এক করে সবার কথা শোনা হচ্ছে। শেষে প্রত্যেককে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে টার্গেট। ঠান্ডা কনফারেন্স হল। নরম মেঝে। লম্বা টেবিলের দু'দিকে নরম চেয়ার। প্রত্যেকের সামনে ফাইল। গৌতমের ‘টার্ম’ এলে অত্যন্ত বিনীত ভাবে সে বলে— ভগবানের কৃপা থাকলে টার্গেট সে পূরণ করে দেবে। কর্তারা মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকেন। ভগবান! এই বন্ধ ঘরে ভগবান এলেন কীভাবে?
একমাত্র গৌতমের চিঠিই পেয়েছি দুই ঠিকানায়।
প্রথম চিঠি কর্নফিল্ড রোড থেকে:
‘18th June 1981
Cal-19
শ্রী একরাম আলি,
আমি, অমিতাভ গুপ্ত এবং পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল আধুনিকতার তত্ত্ব ও প্রয়োগের দিক নিয়ে একটি ছোট পত্রিকা প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছি।
আমরা মনে করি আপনার সাহায্য ছাড়া এই সংকলন সার্থক হয়ে উঠবে না। অনুগ্রহ করে আপনার তিনটি নতুন লেখা অপ্রকাশিত কবিতা আমাদের পাঠিয়ে দেবেন। দয়া করে কবিতার সঙ্গে আলাদাভাবে তার Creative process-এর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ রাখবেন। এছাড়াও আরও একটি ছোট গদ্য, কবিতার আধুনিকতা সম্পর্কে আপনার মতামত আমাদের চাই। সেই গদ্যটিকে ১৫/১৬ লাইনের মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে ভালো হয়।
আমাদের সাধ্য সীমিত— তাই এত কথা বলতে হলো। August-এ পত্রিকা বেরোবে। কাজেই 4th July-এর মধ্যে আপনার লেখাগুলি না পেলে অত্যন্ত বিপন্ন বোধ করবো।
অনুগতভাবে
গৌতম সেনগুপ্ত"
এমন বিনীত ভাষা এবং আপনি-সম্বোধন আরও কয়েকটা চিঠির পর ঘুচে গেলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। সেই পত্রিকা অবশ্য পরিকল্পনার অতলেই ডুবে থেকেছে। বেরোয়নি। পরে যদিও গৌতম একাধিক পত্রিকা সম্পাদনা করেছে।
প্রথম যেদিন কর্নফিল্ড রোডে ওদের বাড়ি যাই, ঘর আলো করা এক প্রাচীনাকে দেখি, যিনি গৌতমের পিতামহী। দেওয়াল ঘেঁষে একটি সেলাইকল। মনে আছে গৌতমের মাকে। অনেক পরে গৌতমের মেয়ে বড়ো হলে হঠাৎ একদিন চমকে উঠি— ‘এ তো অবিকল তোমার মা!’
-তাই, না? এ-কথাটা বলার লোক কমে গেছে। হয়তো নেই-ই।
প্রথম চিঠির কাছাকাছি সময়েই লেখা আর একটা ছোট্ট:
"শ্রীচরণেষু একরাম,
কলকাতার শীত গুজবের মতো প্রায়। আপনার চিঠি পেয়ে ভয় হচ্ছে বেশ। তেঘরিয়ার পুকুর থেকে সিন্ধুঘোটক উঠবে না তো শেষমেশ? অমিতাভর নতুন গল্প শুনলাম এর মধ্যে। ময়দানের মেলায় আসছেন কি? সম্ভব হলে জানাবেন। প্রণাম নেবেন।
একান্ত অনুগতভাবে
গৌতম সেনগুপ্ত"
আরও পড়ুন : ‘সুনীল-শক্তি, ওঁরাই তো কবি… আমরা কবি নই’! অরুণেশ ঘোষকে যেভাবে চিনেছি চিঠিতে
চিঠিটি লেখা ২৫ জানুয়ারি। সাল ১৯৮৮-এর পর অস্পষ্ট। অমিতাভ, মানে অমিতাভ মণ্ডল। অমিতাভরও অনায়াস যাতায়াত গল্প আর কবিতার মধ্যে। তবে গৌতমের শেষ কবিতার বই ১৯৯১-এ। ‘ধুলোমাটি’। তারপর সে দেখতে পায় কৈশোরের সেই চুমকি-বসানো অন্ধকার দিনগুলো, যা আসলে ছিল বড়োদেরও বড়োদের। গৌতমের সেই বইয়ের একটা কবিতা:
"যদি শতেক বছর আরো থেকে যায় এ শরীর
ক্ষোভ নয় হিংসা নয় আমি এই সবুজ পাতার
সুর বলে যাবো। তোমারি ইচ্ছায় তোমারি
বিপক্ষে আমি প্রাণপণ তোমারি কুটীর ছাওয়ার
কাজ করে যাবো।"
তারপর শিলিগুড়ি। উত্তরবঙ্গ, সিকিম আর ভুটান ছিল তার কর্মক্ষেত্র। ততদিনে কর্নফিল্ড রোডের অনেক কিছুই ঝরে গেছে। বাগুইহাটিতে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে ওরা থাকে। ওরা, মানে সস্ত্রীক গৌতম আর ওদের মেয়ে। আর আমি খালের এপারে বৈশাখীতে। আসা-যাওয়া চলত। অনেকটা বয়স পর্যন্ত ভুলতে পারেনি কম বয়সে বাবাকে হারানোর কথা। হঠাৎ-হঠাৎ বলত— ‘আমার তো বাবা নেই।’ পরে সংযোজন হয়— ‘আমার তো বাবা-মা নেই।’
এই সময়ের একটা চিঠি:
"একরাম, কাগজের লোকেদের ভেতরের খবর দেওয়ার এক অতি নিম্নমধ্যবিত্ত বাঙালী দুরাশা থেকে এই চিঠি।
১) সিকিমে মদের দাম কম। কত কম? অনেক দাম বেড়ে বড় বোতল রাম ৫০৲। বারে পেগ দু-টাকা। ফলে পাহাড়ীদের আয় ভাগাভাগি করে নেয় সরকার ও মদ কোম্পানী। উপস্থিত গ্যাংটক থমথম করছে। বিলিতি রাজনৈতিক থ্রিলারের কায়দায় নীল জামা পরা পুলিশ ছিঁড়ে দিচ্ছে বিপক্ষ দলের পোস্টার। এখানে দোকান করতে গেলে কিন্তু কোটপরা হাসিমুখ ভাণ্ডারীর ছবি দোকানে রাখতেই হবে। বাঙালীর উৎপাত এখানে কম নয়। সেই আমাদের চেনা ন’দা, রাঙামেসো, শেলী, পম্পা, ছোটকা, রণি। তবুও দার্জিলিং-এর মতো এখনো বাঙালী এ শহরটিকে পুরোপুরি হাতিবাগান বানাতে পারেনি। যদিও চেষ্টার ত্রুটি নেই কোনো।
২) ভুটান তো রাজার দেশ। মদ ব্ল্যাকে ৫০ টাকা। এমনিতে শান্তি অঢেল। তবে এখনো এই ৯৪ সালেও রাজার বাড়ি ছাড়া অন্য কোনো বাড়িতে টিভি লাগানোর অনুমতি নেই। তাই গোটা দেশে একমাত্র টিভিটি চলে রাজার বাড়িতেই।
৩) রায়গঞ্জের কথা দিয়েই চিঠি শেষ করি। রায়গঞ্জের হোটেল পাহাড়ের মতো চকমিলানো নয়। অনেকটা আমাদের মতো মুখ লুকানো, হতশ্রী, দীন। অনেক অনুরোধে জলখাবারটুকু এরা ঘরে দিয়ে ওঠে কোনমতে। তবে এদের বৈশিষ্ট্য এবং বৈচিত্র্য হচ্ছে জলখাবারের ঠোঙায়। নমুনা হিসেবে আজকের জলখাবারের ঠোঙাটি পাঠালাম। ভালো থাকো। আগামী সপ্তাহে কলকাতা গেলে একবার ঢুঁ মারবো।
আরও পড়ুন : বাড়িতে পোষেন ডাইনোসর! জ্যোতির্ময় দত্তকে নিয়ে এমনই বিশ্বাস অনেকের
গৌতম’ ঠোঙাটি পেয়েছিলাম! খামে পাঠানো এটাই একমাত্র চিঠি। বোঝাই যাচ্ছে, চিঠিটি রায়গঞ্জ থেকে লেখা। ওর এই চক্কর দেওয়া চাকরি নিজেই শেষ করে গৌতম। শেষ পথে ছেড়ে দিয়ে। চিঠিরও পর্ব শেষ হয়। কিন্তু শেষ হয় না দড়ির উপর দিয়ে হাঁটা। এ-দড়ি কবিতার আর গল্পের উপর টাঙানো নেই। সত্যি-সত্যিই এটা মাদারির খেলা, যে-দড়িতে হাঁটতে শুধু শারীরিক ভারসাম্য রাখলেই চলে না। রাখতে হয় মানসিক ভারসাম্যও। গৌতম মাঝে-মাঝেই টলে গেছে। কিন্তু হাঁটছে। বাংলাভাষায় তার সেই নতুনতর হাঁটার একটা ছবির অংশ, ‘গ্রামার’ গল্প থেকে নেওয়া:
‘... আবে ওই নুলোটা, দয়লার জন্য তোর জুতা চাটছিল, উসকা হ্যান্ড ক্যায়সা গিয়া মালুম?... ও মালটা ছিল রান্ডিকা আজকাল কেয়া বোলতা হ্যায় বোল?... হাঁ, হাঁ, যৌনকর্মিকা বেটা, লেকিন মাদারচোদকা মালুমই নেহি থা উসকা মা কেয়া কাম করে। থাকত চাচা না ফুপার ঘরে। বিলিভ দিবি না, চুতিয়ানন্দন পড়ত, মতলব কোঠাবাড়ির লেড়কা লোগ য্যায়সা। কিতাব-উতাব নিয়ে। মা-র খোয়াইশ। সেসব কি আজ কা বাত। তব তো সোচতাম কি তুই ডিভিশন খেলবি, পেপারে ফোটু-উটু, কেয়াসে কেয়া হো গয়া... শালা সেভেন বুলেটস চ্যাম্পিয়ন স্ট্রাইকার নুন টাইমেও থাইয়ে সেলসব্যাগ সাঁটিয়ে পাঁইট প্যাঁদাচ্ছিস...
তো হাঁ, একদিন ও লেড়কা, কিসিকো পুছে বগর আ গয়া। অ্যাডড্রেস-উডড্রেস কাঁহা সে মিলা কোন জানে...। ওর মাকে তব পাংখাওয়ালা সুরেশ নিচ্ছে। ফ্রি মে পাংখা দেয়, উসকা ভি কেয়া কসুর। ইভিনিং মে আনে সে ধান্দা খোটা, ইস লিয়ে ম্যাটেনিং। গান্ডুটা ঘরে ঘুসে, দেড়া সাইজের সুরেশকে তুলে মুণ্ডুটা ভরে দিয়েছিল এই তন্দুরে। পিছে পিছে মা নামছে, হাফ-খোলা শাড়ি, খোলা চুল, বগর ব্লাউজ, পুরা মা কালী মাইরি, রড দিয়ে যা ক্যালাল না, বিনোদ খান্না ভি লাগে না, মারছে আর বলছে, নিজের বাপকে মার্ডার করে দিলি বোকাচোদা... শুনকে, ও শালা, আপনা রাইটওলা হ্যান্ড ঘুসিয়ে দিল, ওহি সেম তন্দুর মে।’
গৌতমও ঢুকিয়ে দিয়েছে ওর ডান হাত একই অন্ধকারে, যেখানে আগে ঘাপটি মেরে থাকত কবিতা। এখন আছে এরকমই ভয়ঙ্কর সব গদ্য। যেগুলোতে সে রেখে যাচ্ছে নিজের মধ্যবিত্ততাকে ঘেন্না করার এবং ধ্বংস করার সাহস।