এই প্রথম মানুষের মাথায় বসল 'চিপ'! যে অভাবনীয় কাণ্ড ঘটাল এলন মাস্কের নিউরালিংক

Elon Musk Neuralink Brain Implant : নিউরালিংকের এই ব্রেইন ইমপ্লান্ট, 'লিঙ্ক' আসলে একটি কম্প্যাক্ট ডিভাইস। পাঁচটি কয়েন একসঙ্গে একের উপর একটি রাখলে যেমন আকার নেবে ঠিক তেমনই দেখতে।

অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়। কিছু যুগ আগে তাও ভাবা যেত না অবশ্য। কিন্তু মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন? সম্ভব? যুগান্তকারী ঘটনা ঘটিয়েছে এলন মাস্কের 'নিউরালিংক'। এই প্রথম সফলভাবে একজন মানব রোগীর মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নিউরোটেকনোলজি ফার্ম নিউরালিংক-এর এই ব্রেইন ইমপ্লান্টের নাম 'লিঙ্ক'। সফল মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনের পরে ধীরে ধীরে রোগীও সুস্থ হয়ে উঠছে বলেও জানা গেছে।

নিউরালিংকের নেপথ্যে রয়েছেন এলন মাস্ক। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ এই খবরটি শেয়ার করে মাস্ক বলছেন, "গতকাল নিউরালিংক প্রথম মানুষ হিসেবে একজনের দেহে একটি ইমপ্লান্ট করেছে এবং সে সুস্থ হয়ে উঠছে। প্রাথমিক ফলাফলগুলি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। নিউরোন স্পাইক ডিটেকশনের ক্ষেত্রে বেশ আশাজনক ফলাফল দেখা গিয়েছে।"

নিউরালিংক মানুষের দেহে মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনের পরীক্ষা শুরু করার জন্য গত বছর মার্কিন নিয়ন্ত্রকদের কাছ থেকে অনুমোদন পায়। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো মানুষের মস্তিষ্ক এবং কম্পিউটারের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের পথ তৈরি করা। এএলএস এবং পার্কিন্সন রোগের মতো স্নায়বিক রোগের চিকিৎসায় বিপ্লব ঘটানো। এছাড়া মানুষের ক্ষমতা বাড়ানো এবং মানুষ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মধ্যে একটি সিম্বায়োটিক সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে মাস্কে নিউরালিংক।

আরও পড়ুন- ৭০ ঘণ্টা কাজের দাবি সত্যিই ন্যায্য? কতক্ষণ কাজ করেন এলন মাস্ক, সুন্দর পিচাইরা?

নিউরালিংকের এই ব্রেইন ইমপ্লান্ট, 'লিঙ্ক' আসলে একটি কম্প্যাক্ট ডিভাইস। পাঁচটি কয়েন একসঙ্গে একের উপর একটি রাখলে যেমন আকার নেবে ঠিক তেমনই দেখতে। এটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের মধ্যে বসিয়ে দেওয়া হয়। নিউরালিংক ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর সদর দফতর ক্যালিফোর্নিয়ায়। ৪০০ জনেরও বেশি কর্মচারী কাজ করেন এখানে।

এলন মাস্ক কিন্তু এই ব্রেইন-কম্পিউটার ইন্টারফেস গবেষণার ক্ষেত্রে একা নন। এলন মাস্ক বিনিয়োগের জন্য অন্য ইমপ্লান্ট ডেভেলপার সিনক্রোনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন বলে জানা যায়। Synchron-এর ইমপ্লান্ট প্রথম হয় ২০২২ সালের জুলাই মাসে। একজন মার্কিন রোগীর মধ্যে ঢোকানো হয়েছিল ওই ডিভাইস। এই ডিভাইস মাথায় বসানোর জন্য মাথার খুলির অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হয় না।

তবে, নিউরালিংক নিরাপত্তা বিধি নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। এই মাসের শুরুতেই রয়টার্স জানিয়েছিল, বিপজ্জনক উপকরণ পরিবহন সংক্রান্ত মার্কিন পরিবহন বিধি লঙ্ঘনের জন্য সংস্থাটিকে জরিমানা করা হয়েছে। গত নভেম্বর মাসেই, ইউএস সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের তদন্তের দাবি ওঠে। অভিযোগ ছিল এলন মাস্ক নিউরালিংকের ব্রেইন ইমপ্লান্টের নিরাপত্তা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করছেন।

তবে এসব বিতর্ককে পাশে সরিয়ে রেখে যদি শুধু মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনের বিষয়টি দেখা যায়, তাহলে বিশ্বের কাছে এ এক তাক লাগানো ঘটনা। নিউরালিংক 'হিউম্যান-কম্পিউটার ইন্টারঅ্যাকশন'-এর নতুন যুগের সূচনা করে ফেলেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে রয়েছে এই বিষয়টি। ফলাফল কোন দিকে বাঁক নেবে, সময়ই তা প্রমাণ করবে।

 

More Articles