হুবহ পুরীর আদল এবার বাংলাতেই! কী কী থাকছে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের অন্দরে?
Jagannath Temple in Digha: এসেছে রাজস্থানের বংশী পাহাড়ের পাথর, পুরীর আদলেই দীঘায় গড়ে উঠছে জগন্নাথ মন্দির
“সব তীর্থ একবার, পুরী তীর্থ বারবার”,বাঙালিদের মধ্যে খুবই প্রচলিত ছিল এই কথাটি। আর কোথাও ভ্রমণের সুযোগ হম আর নেই হোক পুরী ভ্রমণের সুযোগ কমবেশি সকলেই চেটেপুটে নিয়েছেন একটা না একটা সময়ে। সময়ের সঙ্গে বাঙালির এই ভ্রমণ তালিকায় যোগ হয়েছিল আরও দুটি জায়গা, সেগুলি হল দীঘা এবং দার্জিলিং। হাতে দিন কয়েকের ছুটি পেলেই তাই দিপুদা। আজকাল সেই পরিচিত ভ্রমণের ধারণাটা অনেক বদলে গিয়েছে, এখন অফবিট ভ্রমণের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। মন্দারমনি, তাজপুর, বকখালি, ইত্যাদি একাধিক সমুদ্র দেখার মিনি সংস্করণ হাতের কাছে পেলেও দীঘা পুরীর বিকল্প আজও নেই। তার একটা বড় কারণ অবশ্য ঢেউয়ের প্রকৃতি। আর পুরীর ক্ষেত্রে আসল কারণটা হল স্বয়ং জগন্নাথ দেবের মন্দির।
ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো করে রথের উৎসব হয় পুরীতেই। পুরী বেড়াতে গিয়ে জগন্নাথ দেবের দর্শন না করে ফিরে আসেন এমন বাঙালি পাওয়া দুষ্কর। অথচ কম খরচে সমুদ্র ভ্রমণের স্বাদ উপভোগ করতে যারা বারবার পুরী যাওয়ার বিকল্প হিসেবে ডাইস্কে বেছে নিতেন তাদের সঙ্গে অবশ্য জগন্নাথ দেবের দেখা মিলত না। কিন্তু এবার সেই কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন একেবারে পুরীর আদলে দিঘাতেও তৈরি হতে চলেছে জগন্নাথ দেবের মন্দির। ফলে এবার থেকে দীঘাতেও মিলবে সমুদ্র সহযোগে তীর্থের স্বাদ।জানেন দেখতে কেমন হবে সেই মন্দির?
আরও পড়ুন - মুম্বই হল দিঘা! কাঁথি অবধি নতুন মেরিন ড্রাইভে কতটা সহজ হল সৈকত পর্যটন?
ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে মন্দির নির্মাণের, ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে মন্দির নির্মাণের কাজ। সম্পূর্ণ পাথর দিয়ে তৈরি হতে চলেছে এই মন্দির। এমনকী অভিনব সেই পাথর কাটার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজস্থানের বংশী পাহাড় থেকে আনা হয়েছে বিখ্যাত স্যান্ডস্টোন, ব্যবহার করা হচ্ছে মন্দির নির্মাণের কাজে। পাশাপাশি রয়েছে কংক্রিট এবং ঢালাইয়ের কাজও। বিভিন্ন সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, প্রযুক্তিবিদ, কারিগর-সহ মোট ২০০ জন এই মন্দির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
এ যেন পুরীর মন্দিরের হুবহু এক রেপ্লিকা! দৈর্ঘ্যে প্রস্থে সমান, শুধু তাই নয় পুরীর মন্দিরের গায়ে থাকা সমস্ত স্থাপত্য কীর্তিকে একেবারে একই রকম ভাবে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন দীঘার মন্দিরের শিল্পীরাও। পাশাপাশি নতুন এই মন্দিরে তৈরি করা হবে প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে তোরণ, গর্ভগৃহ, ভোগ রান্নার জন্য আলাদা জায়গাও। আলোকসজ্জার ক্ষেত্রেও থাকবে বিশেষ আকর্ষণ। মোট কুড়ি একর জমির উপর নির্মিত এই আকর্ষণীয় মন্দিরটির জন্য আনুমানিক খরচ হতে পারে ১০০ কোটি টাকা। দীঘা রেল স্টেশনের একেবারে কাছেই তৈরি করা হচ্ছে এই মন্দির ফলে এই মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন হলে এর হাত ধরে পর্যটকের ভিড় আরো বাড়বে বলেই আশা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের পর্যটন খাতকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার, তার হাত ধরে অবশ্য আয়ও বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। এবার সেই তালিকায় যোগ হতে চলেছে দিঘার এই আকর্ষণীয় জগন্নাথ দেবের মন্দির। পুরী ভ্রমণের স্বাদ এবার সম্পূর্ণটাই মিলবে রাজ্যের মধ্যেই, ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির কাছে এ মন্দির যে খুবই আকর্ষণীয় হতে উঠবে, তা বলাই বাহুল্য!