G20 সম্মেলনে চৈনিক ব্যাগ রহস্য! প্রকাণ্ড ব্যাগে করে কী এনেছিল চিন?

G20 Chinese Bag Mystery : কূটনৈতিক সৌজন্যের কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তাকর্মীরা ওই ব্যাগটিকে নিয়েই ঢুকতে দেন চিনের প্রতিনিধিকে।

চিন ভারতের সম্পর্ক কোনদিকে যাবে, জি২০ সম্মেলন ইন্দো-চিন সম্পর্ক নিয়ে কী বার্তা দেবে এসব নিয়েই রাজনীতিবিদদের, কূটনৈতিক চিন্তকদের ভাবনা ছিল। ভারতে আগত এইসব ভিনদেশি অতিথিদের আতিথেয়তায় দিল্লিজুড়ে তোলপাড় পড়েছিল। শহরের সেরা সেরা হোটেলে সমস্ত ঘর বুকড! সেরা সেরা গাড়ির বন্দোবস্ত, সেরা উপহার এবং নিরামিষ খাবার! চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জি২০ সম্মেলনে আসেননি। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। জি২০ সম্মেলনে ভারত চিন সম্পর্ক কোনদিকে গেল তা ঠিক ঠাহর না করা গেলেও, চিন যে ভারতে এসে প্রায় ঘুম ছুটিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল একথা বলাই যায়। সৌজন্যে একটি চৈনিক ব্যাগ! যে পাঁচতারা হোটেলগুলিতে জি২০ অতিথিরা ছিলেন, সেখানকার একটি রহস্যময় ব্যাগ নিয়ে কালঘাম ছুটে যায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির।

খোলসা করে বলা যাক! ঘটনার সূত্রপাত জি২০ সম্মেলনে আসা একজন চিনা প্রতিনিধির ব্যাগ ঘিরে। চিনের ওই প্রতিনিধি দলের একজন সদস্যের ব্যাগ এতখানিই বিশাল ছিল যে স্বাভাবিকভাবেই তা নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ টানে। হোটেল তাজ প্যালেসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা ওই ব্যাগটিকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এই প্রতিনিধি দলটির জন্য নির্দিষ্ট প্যাসেজ তৈরি করা হয়েছিল। তাঁদের ব্যাগপত্তরও পরীক্ষা করা হচ্ছিল একটি নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে। সেখানেই ঢাউস এই ব্যাগটি নজরে আসে। সন্দেহ প্রবল, কিন্তু একে অতিথি, তাও আবার চিনের! দুই দেশের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না মোটেও। সেখানে চিনের অতিথিকেই সন্দেহ করলে ব্যাপারটা কোনদিকে বাঁক নেবে বুঝতে না পেরে কূটনৈতিক সৌজন্যের কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তাকর্মীরা ওই ব্যাগটিকে নিয়েই ঢুকতে দেন চিনের প্রতিনিধিকে।

আরও পড়ুন- গোদি মিডিয়ার সুধীর ভাই আর তাঁর সাংবাদিকতা

ব্যাগ নিয়ে নিজের ঘরে চলে যান প্রতিনিধি। রুম সার্ভিসের দায়িত্বে যে কর্মী ছিলেন তিনি ওই ব্যাগে কিছু 'সন্দেহজনক জিনিস' দেখেন বলে জানান। ব্যাপারটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়। দ্রুত এই বিষয়ে আলোচনা করে ঠিক করা হয়, ব্যাগগুলি স্ক্যান করে দেখা হবে। বিষয়টা সোজা না। একবার মালপত্র নিয়ে চেক ইন করে ফেলেছেন, আবার একই জিনিস করতে চিনের দল রাজি হবেনই বা কেন! হলেনও না।

নিরাপত্তাকর্মীরা হোটেলের রুমের বাইরে প্রায় ১২ ঘণ্টা পাহারায় দাঁড়িয়ে থাকেন, কিন্তু চিনা কর্মকর্তারা কিছুতেই তাঁদের ব্যাগ পরীক্ষা করতে দিতে রাজি হননি। প্রসঙ্গত, জি-২০ সম্মেলনের পরবর্তী আয়োজক ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টও একই হোটেলেই ছিলেন। দীর্ঘ আলোচনার পরে চিনা প্রতিনিধিদল তাদের ব্যাগগুলি দূতাবাসে নিয়ে যায়। ১২ ঘণ্টার নাটকীয় টানাপোড়েন সত্ত্বেও জানা যায়নি ওই ব্যাগে আসলে কী ছিল।

নজরদারির কোনও সাজসরঞ্জাম এনেছিল চিনারা? নাকি ব্যক্তিগত ইন্টারনেট পরিষেবা? একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলছেন এই ধরনের সরঞ্জামগুলি সাধারণত যোগাযোগ চ্যানেলগুলি জ্যাম করতে ব্যবহৃত হয়। তবে আসলে ওই চৈনিক ব্যাগে কী ছিল তা জানা যায়নি।

More Articles