কারও পৌষমাস, কারও সর্বনাশ! বিপুল কর্মী ছাঁটাইয়ের বাজারে যে চাকরির দরজা খুলে দিল জার্মানি

Germany Hiring Tech Laid Off Workers : ‘সুযোগের সদ্ব্যবহার’ করতে নেমে পড়েছে জার্মানির বেশকিছু সংস্থা। আমেরিকার এমন ‘সর্বনাশ’-এ ‘পৌষমাস’ তাদের।

বাংলার একটা প্রবাদ আছে, ‘কারও পৌষমাস তো কারও সর্বনাশ’। এই মুহূর্তে আমেরিকা জুড়ে চলছে আর্থিক মন্দা। জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে একটু একটু করে। তবে ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে চাকরির জগতে। আমেরিকাতেই অধিকাংশ বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হেড অফিস। প্রধান দফতর না থাকলেও অফিস তো রয়েছে। সেখানেই প্রতিদিন কয়েক হাজার করে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মাথায় হাত পড়েছে সবার। চাকরিটা থাকবে তো?

গুগল, মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যামাজন, আইবিএম সহ বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি গত নভেম্বর থেকেই কর্মী ছাঁটাই শুরু করেছে। কেউ আগে থেকে জানাচ্ছে, কেউ রাতারাতি বিনা নোটিশে কর্মী ছাঁটাই করছে। ফলে দুশ্চিন্তার মেঘ ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। এরই মধ্যে ‘সুযোগের সদ্ব্যবহার’ করতে নেমে পড়েছে জার্মানির বেশকিছু সংস্থা। আমেরিকার এমন ‘সর্বনাশ’-এ ‘পৌষমাস’ তাদের। জার্মানির ওই সংস্থাগুলির কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলে দিয়েছে। এবং তারা জানিয়েছে, যাঁদের কাজ চলে গিয়েছে, ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন, তাঁরা যেন জার্মানিতে চলে আসেন। এই দেশ তাঁদের স্বাগত জানাচ্ছে।

যেমন ধরা যাক ভক্সওয়াগন। জার্মানির বিখ্যাত এই অটোমোবাইল কোম্পানির সহযোগী একটি সংস্থা হল ক্যারিয়াড। মূলত ভক্সওয়াগনের সফটওয়্যারের দিকটা দেখে এই প্রতিষ্ঠানটি। তাদের চিফ পিপল অফিসার রেইনার জুগহোর পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন ‘They Fire. We Hire.’ ওরা ছাঁটাই করবে, আমরা কাজে নেব। এই মুহূর্তে এই কথাটিই রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তিনি বলছেন, ইউরোপ, চিন ও আমেরিকায় তাদের প্রায় ১০০-র কাছাকাছি শূন্যপদ রয়েছে। তাই যাঁদের রাতারাতি চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে তাঁরা যেন যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ করেন।

এমনিতেই জার্মানির আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মীসংখ্যা যথেষ্ট কম রয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, জার্মানিতে প্রায় এক লক্ষ ৩৭ হাজারটি শূন্যপদ রয়েছে। বেশিরভাগই সফটওয়্যার, আইটি ইন্ডাস্ট্রির অন্তর্গত। সেজন্য আমেরিকার এই বিপুল কর্মী ছাঁটাইয়ের সুবিধা নিতে চলেছে তারা। ইতিমধ্যেই জার্মানির প্রশাসন তাদের ইমিগ্রেশনের নিয়ম কানুন সরলীকরণ করার কাজে মন দিয়েছে। লিঙ্কডইনের মতো চাকরি খোঁজার সাইটে বারবার আবেদন জানানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আমেরিকায় হাজারেরও বেশি মানুষের চাকরি চলে গিয়েছে গত কয়েক মাসে। আগামী দিন এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই মানুষগুলির মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যারা নিজেদের কাজে যথেষ্ট পটু। তাঁদের জন্যই এমন সুযোগ তৈরি করছে জার্মানির আইটি সেক্টর। এখন সেই সুযোগ কতটা কাজে লাগাতে পারে এই দেশটি, সেই দিকেই নজর রেখেছে আন্তর্জাতিক বাজার।

More Articles