ব্রাজিল থেকে তাইওয়ান, ফ্রান্স! আরজি করের বিচার চেয়ে বিশ্বজুড়ে যে মানববন্ধন দেখল মানুষ
RG Kar Global Protest: সুইডেনে মূলত মহিলারা কালো পোশাক পরে প্রতিবাদ জানান, প্রতিবাদী স্লোগান তোলেন, চিৎকার করে।
কঙ্গো থেকে জাম্বিয়া, নাইজেরিয়া থেকে ব্রাজিল, ফ্রান্স থেকে কানাডা, আমেরিকা থেকে ব্রিটেন। রবিবার বিকেলে বিশ্বজুড়ে এই সমস্ত দেশের দাবি ছিল একটাই, ‘বিচার'! ৮ সেপ্টেম্বর, রবিবার বিকেল ৫ টায় বিশ্বের ৩০ টিরও বেশি দেশের শতাধিক শহরে ডাক উঠেছে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস’! আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে জোহানেসবার্গ থেকে শুরু করে বেলফাস্ট এক হয়ে যায় রবিবার। আরজি করে নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ১ মাস পূর্ণ হলো। এই গোটা একমাসে সারা রাজ্য তো বটেই সারা ভারত এমনকী বিশ্বের মানুষ নিরন্তর পথে থেকেছেন। নির্যাতিতার জন্য স্বচ্ছ বিচার চেয়ে, দুর্নীতির বিরোধিতা করে বিশ্বজুড়ে মানুষ একে অন্যের হাত ধরল ৮ সেপ্টেম্বর।
এর আগে গত ১৪ অগাস্ট, যখন মেয়েদের রাত দখলের ডাক দেওয়া হয় সারা বাংলা জুড়ে তখনও বিশ্বের কিছু দেশে একই কর্মসূচি নেওয়া হয়। তবে তা এমন ব্যাপক আকার নিতে পারে ৮ সেপ্টেম্বরের বিকেল তারই প্রমাণ। ‘গ্লোবাল প্রোটেস্ট’-এ সাড়া দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আমজনতা যারা নিরাপত্তার দাবির স্বর তুলেছেন। যারা চিৎকার করে তিলোত্তমার খুনিদের বিচার চেয়েছেন, চেয়েছেন বিচার পাক সমস্ত নির্যাতিতাই। রবিবার প্রত্যেকটি দেশের মানুষ নিজেদের স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায় মানববন্ধনের ডাক দেন এই দাবিতেই।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি হচ্ছে এই মানববন্ধন। প্রায় ৭০ টি স্থানে রবিবার বিকেলে মানববন্ধন পালিত হয়। স্লোগান ওঠে বিশ্বজুড়ে উঠছে ঝড়/জাস্টিস ফর আরজি কর। আমেরিকা জুড়ে বিভিন্ন শহরের মানুষ নিজেদের মতো করে হোয়াটস্যাপ গ্রুপ তৈরি করে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রতিবাদীদের সংগঠিত করেছেন। যে সমস্ত মানুষ রাত দখলের ডাকে সাড়া দিতে পারেননি তারাও জুড়ে গিয়েছেন এবারের কর্মসূচিতে। আরজি করের প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি চাইছেন সকলেই, একজোট হয়ে।
বিশ্বজুড়ে মূলত বিভিন্ন দেশে বসবাস করা প্রবাসী বাঙালিরাই এই নাগরিক প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন। “বিশ্ব জুড়ে উঠেছে ঝড়, জাস্টিস ফর আরজি কর” স্লোগান দিয়ে একটি পোস্টার ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ‘গ্লোবাল প্রোটেস্ট’-এ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজধানী শহরগুলিতেও মানুষের প্রতিবাদ ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডন, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস, জার্মানির রাজধানী বার্লিন, ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন, স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে প্রতিবাদী পোস্টার ও স্লোগানে মুখর হয় রাজপথ।
আমেরিকার পরেই সবচেয়ে বেশি মানুষ বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যে। ব্রিটেনের ১৬টি জায়গায় রবিবার বিকেলে জমায়েত হয় সাধারণ মানুষের। তার মধ্যে রয়েছে লিভারপুল, ম্যাঞ্চেস্টার, লন্ডন থেকে শুরু করে বেলফাস্ট, নটিংহামের মানুষ গ্লোবাল প্রোটেস্টে সাড়া দিয়ে মানববন্ধন করেন। মেক্সিকো, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, সুইৎজারল্যান্ড, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, তাইওয়ান, স্পেন এবং নিউজিল্যান্ডেও সাধারণ মানুষ মানববন্ধন গড়ে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, বিচারের দাবি তুলেছেন।
আমেরিকার আটলান্টা, ডাবলিন, সান দিয়েগো, বস্টন, হিউস্টন, আইওয়া, মিনেয়াপোলিস, নিউ ইয়র্ক, সিয়াটল, ট্যাম্পা, ভার্জিনিয়ার মতো আরও বহু স্থানেই আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে, মেয়েদের নিরাপত্তার দাবিতে মানুষ পথে নামেন। সুইডেনে মূলত মহিলারা কালো পোশাক পরে প্রতিবাদ জানান, প্রতিবাদী স্লোগান তোলেন, চিৎকার করে।