'আমি বেরিয়ে যাওয়ার পরে হয়েছে', ১২১ জনের মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন ভোলে বাবা?

Hathras Stampede: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হাথরাসের এই পদপিষ্ট হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় অবশ্য 'ষড়যন্ত্র'-র গন্ধও পাচ্ছেন।

নারায়ণ সাকার হরি ওরফে ভোলে বাবা। তাঁর সৎসঙ্গে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন ১২১ জন মানুষ। তাঁর পায়ের ধুলো নিতে ছোটাছুটি, তাঁকে একবার স্পর্শ করতে দৌড়, লক্ষ লক্ষ মানুষের চাপে পিষে মরে গেছেন ১২১ জন। সেই ভোলে বাবা এই মর্মান্তিক ঘটনার পর পালিয়ে যান এলাকা ছেড়ে। হাথরাসের এই মর্মান্তিক ঘটনার ২ দিন পর মুখ খুলেছেন তিনি। ভোলে বাবা শোক প্রকাশ করে দাবি করেছেন, তিনি হাথরাসের ওই সৎসঙ্গের অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেই বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছিল। পদপিষ্ট হওয়ার জন্য 'অ্যান্টি-সোশ্যাল' কিছু মানুষকেও দায়ী করেছেন ভোলে বাবা।

নারায়ণ সাকার হরি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "আমি/আমরা মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রভু/পরমাত্মার কাছে প্রার্থনা করি।” মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের হাথরাস জেলায় ভোলে বাবার সৎসঙ্গে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে যে ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা। তাড়াহুড়োতে একে অন্যের উপর পড়ে গিয়ে, পিষে গিয়ে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাদের। সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে, ভক্তদের ধাক্কা দিয়েছিলেন ভোলে বাবার নিরাপত্তারক্ষীরা এবং জায়গাটিও পিচ্ছিল ছিল। যার ফলে পড়ে গিয়েই পদপিষ্ট হন মানুষ। প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা গেছে, যে এসডিএম সৎসঙ্গের জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন, তিনিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন- ৮০ হাজারের অনুমতি নিয়ে ২.৫ লক্ষ সমাগম! হাথরাসে কেন মহিলারাই পদপিষ্ট হলেন বেশি?

সৎসঙ্গের প্যান্ডেলে ২ লক্ষেরও বেশি মানুষের ভিড় হয়। নারায়ণ সাকার হরি অর্থাৎ ভোলে বাবা বেলা প্রায় ১২.৩০ টায় মঞ্চে পৌঁছন এবং অনুষ্ঠানটি ১ ঘণ্টা ধরে চলেছিল। বেলা প্রায় ১.৪০ নাগাদ নারায়ণ সাকার হরি প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে এসে জাতীয় সড়ক-৯১ ধরে ইটা-র দিকে যান। যখন ধর্মগুরু অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে বেরোন তখন তাঁর অনুগামীরা এক ঝলক তাঁর 'দর্শন' পেতে ছুটে যান, তাঁর পায়ের চারপাশ থেকে মাটি সংগ্রহ করতে হামলে পড়েন। এদের মধ্যে বেশি ছিলেন মহিলারাই।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হাথরাসের এই পদপিষ্ট হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় অবশ্য 'ষড়যন্ত্র'-র গন্ধও পাচ্ছেন। যোগী বলছেন, সেবাদারদের অর্থাৎ সৎসঙ্গ সংগঠকদের জন্য যে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছিলেন তাঁদের আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। মানুষ মারা যাচ্ছে দেখে সেবাদাররা পালিয়ে যায় বলে মারাত্মক অভিযোগ করেছেন যোগী। যোগী আরও বলছেন, "এটি যদি দুর্ঘটনা না হয়, তবে কার ষড়যন্ত্র? সমস্ত কিছু তদন্ত করা হবে। পুলিশ ও নাগরিক প্রশাসনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বিচার বিভাগীয় তদন্তের অংশ হবেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

নারায়ণ সাকার হরি পুলিশ বিভাগে চাকরি করতেন। চাকরি ছেড়ে দিয়ে ধর্মীয় প্রচারক হয়ে যান। এই মুহূর্তে মইনপুরীতে একটি আশ্রমে আছেন ভোলে বাবা। আশ্রমের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

More Articles