প্রথম দফায় হাইভোল্টেজ আসন কোনগুলি? বিজেপির থেকে উত্তরবঙ্গ কাড়তে পারবে তৃণমূল?
Lok Sabha Election 2024 1st Phase: প্রকাশ চিক বরাইক-কে আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী করাও তৃণমূলের 'মাস্টারস্ট্রোক' প্রমাণিত হতে পারে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে তাঁর।
দেশজুড়ে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে ৪৭ দিন ধরে। ৭ দফায় তা সম্পূর্ণ হবে। ১৯ এপ্রিল এই প্রায় দুই মাস ব্যাপী ভোটের সূচনা। উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফাতে ভোট হবে। সেদিন পশ্চিমবঙ্গের, উত্তরবঙ্গে ৩টি সংসদীয় কেন্দ্রে ভোট হবে। এছাড়াও ১৯ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট রয়েছে - আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ১ টি, অরুণাচল প্রদেশের ২ টি, অসমের ৫ টি, বিহারের ৪ টি, ছত্তিশগড়ের ১ টি, জম্মু ও কাশ্মীরের ১ টি, লক্ষদ্বীপের ১ টি, মধ্যপ্রদেশের ৬ টি, মহারাষ্ট্রের ৫ টি, মণিপুরের ২ টি, মেঘালয়ের ২ টি, মিজোরামের ১ টি, নাগাল্যান্ডের ১ টি, পুদুচেরির ১ টি, রাজস্থানের ১২ টি, সিকিমের ১ টি, তামিলনাড়ুর ৩৯ টি, ত্রিপুরার ১ টি, উত্তরপ্রদেশের ৮ টি আসনে।
প্রথম দফার হাই ভোল্টেজ আসন
- উত্তরপ্রদেশ - সাহারানপুর, মুজফফরনগর, রামপুর, পিলভিট
- অসম - ডিব্রুগড়, শোণিতপুর
- ছত্তিশগড় - বস্তার
- বিহার - গয়া, জুমাই
- জম্মু ও কাশ্মীর - উধমপুর
- মধ্যপ্রদেশ - ছিন্দওয়াড়া
- তামিলনাড়ু - চেন্নাই উত্তর, চেন্নাই দক্ষিণ, চেন্নাই মধ্য, কোয়েম্বাতুরে, তিরুনেলভেলি,কন্যাকুমারী, থুত্তুকুড়ি।
- রাজস্থান - বিকান
- পশ্চিমবঙ্গ - কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার
- মণিপুর
প্রথম দফার হেভিওয়েট প্রার্থী
- নিশীথ প্রামাণিক - কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (কোচবিহার)
- চিরাগ পাসওয়ান - লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান ( জুমাই, বিহার)
- নকুল নাথ - কংগ্রেস নেতা এবং মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ছেলে (ছিন্দওয়াড়া, মধ্যপ্রদেশ)
- কে আন্নামালাই - তামিলনাড়ুর বিজেপি প্রধান (কোয়েম্বাতুর, তামিলনাড়ু)
- তমিলিসাই সৌন্দর্যরাজন - তেলেঙ্গানার প্রাক্তন রাজ্যপাল (চেন্নাই দক্ষিণ)
- কানিমোঝি করুণানিধি - থুত্তুকুড়ি
- জিতিন প্রসাদ - বরুণ গান্ধির পরিবর্তে এবারের বিজেপির প্রার্থী (পিলভিট, উত্তর প্রদেশ)
হেভিওয়েট প্রার্থীদের রাজনৈতিক সমীকরণ
আরও পড়ুন- বাংলার একপেশে রাজনীতি বিজেপিকে জায়গা করে দিল । মুখোমুখি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য
পশ্চিমবঙ্গ
১৯ এপ্রিল আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে লোকসভা নির্বাচন। এই আসনগুলি অতীতে বামফ্রন্টের ঘাঁটি ছিল। সেখানে ২০১৪ সালে বামফ্রন্টের পাশা উল্টে দিয়ে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ২০১৯ সালে আবার পালা বদল হয়। ক্ষমতায় আসে বিজেপি। উত্তরবঙ্গের ৮ টি আসনের মধ্যে সাতটি আসনই বিজেপির গড় এখন। ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ২২ টি, বিজেপি ১৮ টি এবং কংগ্রেস ২ টি আসন পেয়েছিল। উত্তরবঙ্গে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া মোদি সরকার। কোচবিহারে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী উদয়ন গুহর মধ্যে তীব্র লড়াই হবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এই আসনে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভার প্রার্থী করেছিল অনন্ত রায়কে। অনন্ত 'গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন'-এর প্রধান। এই সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরেই আলাদা রাজ্যের দাবি জানিয়ে এসেছে। লোকসভা ভোটে অনন্ত মহারাজপন্থীর 'গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন' স্থানীয়দের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ে তোলার প্রধান ইস্যু সমর্থন করবে বলে দাবি করেছে বিজেপি। তাই তৃণমূলের কাছে এই আসন জেতা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জুড়ে প্রায় ৩.৯ মিলিয়ন রাজবংশী মানুষের বসবাস। অনন্ত রায় নিজেও রাজবংশী সম্প্রদায়ের। তবে তৃণমূলও পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন, রাজবংশী সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেছে। ২০১৯ সালের পর থেকে তৃণমূল আবারও আলিপুরদুয়ারে জায়গা করতে পেরেছে বলেও জানাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এদিকে প্রকাশ চিক বরাইক-কে আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী করাও তৃণমূলের 'মাস্টারস্ট্রোক' প্রমাণিত হতে পারে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। প্রকাশের নেতৃত্বেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে আলিপুরদুয়ারে বড় সাফল্য পায় তৃণমূল।
তামিলনাড়ু
এই রাজ্যে লোকসভায় ৩৯ টি আসন। প্রথম দফার নির্বাচনেই তামিলনাড়ুর সব লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হবে। তামিলনাড়ু বিজেপির পাখির চোখ। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণের এই রাজ্যে এডিএমকে-র সঙ্গে জোট করলেও জয় পায়নি বিজপি। ২০১৯ সালে তামিলনাড়ুতে ডিএমকে ৯ টি আসন ছেড়েছিল কংগ্রেসকে। এবারেও একই জোট সমঝোতা হয়েছে। ২০১৯ সালে ডিএমকে নেতৃত্বাধীন জোট ৩৯ টি আসনের মধ্যে ৩৮ টি আসনেই জয়ী হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল তামিলনাড়ুর প্রথম দফা ভোটের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী তামিলনাড়ু বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে আন্নামালাই। এবার তিনি কোয়েম্বাতুরের প্রার্থী। 'দ্য ক্যুইন্ট'- এর প্রতিবেদন বলছে, আন্নামালাই জনপ্রিয় হলেও, তামিলনাড়ুতে শেষমেষ টাকা সব রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দেয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, যে দল সবচেয়ে বেশি টাকা দেয় জনগণ তাকেই ভোট দেয়।
প্রথম দফা ভোটে চেন্নাই দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী তামিলিসাই সৌন্দর্যরাজন। বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব তিনি। তামিলিসাই তেলঙ্গানার রাজ্যপাল ছিলেন, লোকসভার প্রার্থী হওয়ার জন্য ২০ মার্চ রাজ্যপাল হিসেবে পদত্যাগ করে পুনরায় দলে যোগ দেন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে উত্তর চেন্নাইতে হেরেছিলেন তেলঙ্গানার প্রাক্তন রাজ্যপাল। তামিলনাড়ুর বিজেপির এক কর্মকর্তা 'দ্য ক্যুইন্ট'-এ দাবি করেছেন, 'তামিলিসাই তামিলনাড়ুর নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী'। ওই প্রতিবেদনেই তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক বিশ্লেষক রামু মান্নিভানা বলেছেন, তামিলিসাইয়ের নির্বাচনী এলাকা মিলাপুর, টি নগর, ভেলাচেরিতে ব্রাহ্মণ ভোটব্যাঙ্ক থাকলেও বিজেপি তাতে লাভবান হবে না। সুমন্থ রামন বলছেন, দক্ষিণ চেন্নাইয়ে ব্রাহ্মণ ভোটে ভরসা করে বিজেপির ক্ষমতায় আসার সম্ভবনা খুব কম।
মধ্যপ্রদেশ
এখানে প্রথম দফা ভোটে ছিন্দওয়াড়া আসনটি গুরুত্বপূর্ণ। এই আসন থেকে প্রতিটি লোকসভা ভোটে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এই আসনে জয়লাভ করেছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশের সব আসন হারলেও ছিন্দওয়াড়া জিতেছিলেন তাঁর পুত্র নকুল। এবারেও ওই কেন্দ্রেই প্রার্থী হয়েছেন নকুল। ২০১৪, ২০১৯ সালে বিজেপির রমরমা বাজারেও ওই আসনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। এই আসনে বিজেপি প্রার্থী বিবেক বান্টি সাহু। ছিন্দওয়াড়াতে ২০১৯-এ ২৬,০০০ ভোটে এবং ২০২৩-এ প্রায় ৩৬,০০০ ভোটে কংগ্রেসের কাছে হেরেছেন বিবেক বান্টি সাহু। এখানের ৭টি বিধানসভা আসনও কংগ্রেসের দখলে। আসনটি বিজেপি এবং কংগ্রেস দু'পক্ষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই আসনে জয় নিয়ে দু'পক্ষই আত্মবিশ্বাসী।
আরও পড়ুন- লোকসভা ভোটের সবচেয়ে বড় ঘুঁটি রামমন্দির? সমীক্ষায় ফাঁস বিজেপির যে অকল্পনীয় ছক
বিহার
গয়া আসনে, এনডিএ থেকে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম)-র জিতেন রাম মাঝি এবং আরজেডি-র মহাগঠবন্ধন থেকে কুমার সর্বজিৎ প্রার্থী হয়েছেন। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতেন রাম মাঝির বয়স ৭৯ বছর। অন্যদিকে, বুদ্ধ গয়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী কুমার সর্বজিতের বয়স ৪৯ বছর। সর্বজিতের বাবা রাজেশ কুমার ১৯৯১ সালে জিতেন রাম মাঝিকে হারিয়ে সাংসদ হয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তাঁর বাবার হত্যার পর সর্বজিতের রাজনীতিতে প্রবেশ। জুমাইয়ে আরজেডির মহাগঠবন্ধনের প্রার্থী অর্চনা রবিদাস এবং এনডিএ জোটে, লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান চিরাগ পাসওয়ানের শ্যালক অরুণ ভারতী প্রার্থী হয়েছেন। আরজেডি-র নেতা মুকেশ যাদবের স্ত্রী প্রথমবার ভোটে লড়বেন।
অন্যদিকে, জুমাইয়ে ২০১৪, ২০১৯ সালে চিরাগ দু'বার সাংসদ হয়েছেন। বিজেপি, জেডিইউ এবং আরজেডি- এই তিনটি দলের মোট ভোটব্যাঙ্ক প্রায় ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ আর কংগ্রেসের প্রায় ৬ থেকে ৯ শতাংশ। বর্তমানে বিজেপি এবং আরজেডির দল জেডিইউয়ের মোট ভোটের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে। পাসওয়ানের ভোট রয়েছে মোটামুটি ৬%। বিজেপি, জোট থেকে চিরাগকে হাতছাড়া করলে, কংগ্রেস এবং আরজেডির মোট ভোটের সমান হয়ে যাবে। 'দ্য হিন্দু'-র একটি প্রতিবেদনে এক শ্রমিক, মহেশ প্রসাদ বলেছেন, "আমি অরুণ ভারতীকে চিনি না, তবে হ্যাঁ আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভালো কাজ করেছেন। তাই আমি এনডিএ প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দেশের সেবা করার আরেকটি সুযোগ দিতে চাই। 'দ্য হিন্দু' তেই একজন পর্যবেক্ষক বলছেন, অউরঙ্গাবাদ আসনে এনডিএ এবং আরজেডি-র প্রার্থীর কাছে বহুজন সমাজবাদী পার্টির অনুজ কুমার কড়া প্রতিদ্বন্দ্বী।
উত্তরপ্রদেশ
হাইভোল্টেজ কেন্দ্র পিলভিট। উত্তরপ্রদেশের বৃহত্তম লোকসভা আসন। এই আসনে বিজেপির তুরুপের তাস জিতিন প্রসাদ। এককালে এই কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোট ছিনিয়ে নিয়েছিলেন মানেকা গান্ধি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির সাংসদ ১৯৮৯ সাল থেকে ৫ বার জয়ী হয়েছিলেন। তারপর তাঁর ছেলে বরুণ গান্ধি এই আসনে ভোটে লড়েছেন। এবার তাঁর বদলে প্রার্থী হয়েছেন জিতিন। এই আসনে এসপি থেকে ভাগবত শরণ গঙ্গোওয়ার এবং বিএসপি থেকে আনিস আহমেদ খান লড়ছেন।
অসম
উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে অসম রাজনীতির ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ। জোড়হাট আসনটি রাজনৈতিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু। এই আসন থেকে লড়ছেন এই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর ছেলে কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ। এটি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈর নির্বাচনী এলাকা ছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি কংগ্রেসের বাড়তি লাভ। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্বে বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত প্রবল হচ্ছে। অসমে সিএএ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। ডিব্রুগড়ে আদিবাসী, অহোম ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ভোট রয়েছে। এরা দীর্ঘদিন ধরে তপশিলি উপজাতির মর্যাদা চেয়েছিল কিন্তু পায়নি। তবে, এখানে নেপালি ও বাঙালিরা বিজেপির দীর্ঘদিনের ভোটব্যাঙ্ক। পদ্মশিবির প্রচারে কোনও খামতি রাখেনি। প্রথম দফার নির্বাচনী এলাকা কাজিরাঙায় সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রচারে গিয়েছিলেন। ইতিহাসে প্রথমবার কাজিরাঙায় জঙ্গলে কোনও প্রধানমন্ত্রী রাত্রিবাস করেন। হাতির পিঠে সাফারিও করেন।
আরও পড়ুন- লোকসভা নির্বাচন ২০২৪: বাংলায় মোট কত আসন পাবে বিজেপি?
মণিপুর
গত বছরের মে মাসে, উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশ সহ বিশ্ব। বিরোধীরা বারবার প্রশ্ন তুলেছে, লাগাতার হিংসার ঘটনা হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন যাননি মণিপুরে। জুনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গেলেও কোনও সুরাহা হয়নি। কিন্তু জোর কদমে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। মণিপুরের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মোদি ও বিজেপির ভূমিকা সমালোচিত। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সীতারমনের স্বামী পরাকলা প্রভাকর 'The Wire'-এর একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, বিজেপি ২৩০ টির বেশি আসন পাবে না। তার মধ্যে মণিপুর নিয়ে কেন্দ্র সরকারের অবহেলাকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
জম্মু ও কাশ্মীর
এই রাজ্যে পাঁচটি লোকসভা আসন রয়েছে। প্রতি দফায় ১ টি করে আসনে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে। প্রথম দফায় ভোট হবে উধমপুরে। এই লোকসভা আসন বিজেপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে এই আসন থেকেই তৎকালীন কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদকে হারিয়েছিলেন বিজেপির জিতেন্দ্র সিং। ২০১৯ সালেও বিজেপি আবার এই আসনে জয় পেয়েছিল। এইবার মন্ত্রিসভার সদস্য জিতেন্দ্রকে আবার উধমপুর আসন থেকেই প্রার্থী করা হয়েছে। তার মাঝে অনেক পরিবর্তনও হয়েছে। যেমন, ৩৭০ ধারা বাতিল, রামমন্দির উদ্বোধন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে লাদাখকে আলাদা করে দেওয়া। এই রাজ্যের স্থানীয়দের মূল দাবি ছিল, বিধানসভা নির্বাচন করা এবং পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি। দু'টির মধ্যে একটিও পূরণ করেনি কেন্দ্র সরকার। অন্যদিকে, ন্যায়যাত্রার পর জম্মু ও কাশ্মীরে কংগ্রেস ভালো সাড়া পেয়েছে।