কলকাতাতেই রয়েছে একাধিক ভিনটেজ বাংলো! যেভাবে রাত কাটাতে পারেন আপনিও

Kolkata Vintage Bungalows: কলকাতায় এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী বাংলোগুলির অনেকাংশই একটি এখন বিলাসবহুল হোটেলে রূপান্তরিত হয়েছে।

কলকাতার মধ্যে সত্যিই এক অন্য কলকাতা আছে। সবসময় হেঁটে দেখলেই হয় না। এই কলকাতায় থেকে দেখতে হয়। পলাশির যুদ্ধ পরবর্তী শহর, ঔপনিবেশিক যুগ, স্বাধীনতার যুগ, পালটে যাওয়া যাপনের যুগ কলকাতার দেওয়ালে দেওয়ালে খোদাই করা। কলকাতা শহর আস্ত এক আদিম গল্পকথক, অনন্ত তার গল্পরাশি। শুনতে হলে হাঁটতে হবে, কান পাততে হবে। সংস্কৃতি ও ইতিহাসের আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হবে কলকাতার রাস্তায় রাস্তায়, গলিতে, মহলে, স্মৃতিসৌধে এবং এর ঐতিহ্যবাহী বাংলোতে। বহু শতাব্দী প্রাচীন ডিভান থেকে শুরু করে বিখ্যাত বার্মা সেগুনের আসবাবপত্র, ঐতিহ্য ধরে রেখেছে অতীতের গোপনীয়তা।

কলকাতায় এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী বাংলোগুলির অনেকাংশই এখন বিলাসবহুল হোটেলে রূপান্তরিত হয়েছে। তবু তার কাহিনি রয়েছে অজানাই। কলকাতার বুকেই এই সমস্ত বাংলোতে একদিন দু'দিন কাটানো যায়।

১. কলকাতা বাংলো

কলকাতার এক ঐতিহ্যবাহী বিলাসবহুল বুটিক হোটেল। ১৭৯০ সালের দিকে, ব্রিটিশরা কলকাতায় উপনিবেশ স্থাপন করেছিল, যা হোয়াইট টাউন নামেও পরিচিত ছিল। যেখানে ভারতীয়রা বাস করত সেই এলাকাকে বলা হতো ব্ল্যাক টাউন। এখানেই প্রাসাদ, বিলাসবহুল বাংলো এবং ধনী বাঙালিদের নির্মিত বাসভবনে ভরে ওঠে। এই কলকাতা বাংলো সেই সময়ে প্রচলিত স্থাপত্যের দুর্দান্ত নিদর্শন।

আরও পড়ুন- জল বয় উলটো দিকে, তালে তালে লাফায় জমি! রহস্যময় এই অফবিট গন্তব্য পর্যটকদের অজানাই

২. গ্লেনবার্ন পেন্টহাউস

গ্লেনবার্ন পেন্টহাউস কলকাতার একটি বিলাসবহুল হেরিটেজ হোমস্টে। গ্লেনবার্ন পেন্টহাউসে থাকা অতিথিরা সাধারণ বাঙালি ঘরানার ডিভানে শুয়ে আরাম করে রাস্তার দৃশ্য দেখে আড়মোড়া ভাঙেন। বারান্দায় বসে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়া দেখতে দেখতে এক কাপ চায়ে চুমুকও দিতে পারেন অথবা বার্মা সেগুনের খাটে শুয়ে বইও পড়তে পারেন। বাংলোর ঘরের প্যারিসে তৈরি করা ‘হিন্দুস্তান’ ডিজাইনের ওয়ালপেপারও অতীতের কথা মনে করিয়ে দেবে।

৩. রাজকুটির

ঐতিহ্যবাহী বাঙালি স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত কলকাতার একটি হেরিটেজ হোমস্টে রাজকুটির। স্থাপত্যটি খানিক ধনী জমিদার বাড়ির মতো। এই রাজকুটির উঠোনের চারপাশে নির্মিত এবং প্রবেশদ্বারটি আসলে এক সিংহদুয়ার। প্রাচীন বটগাছ, গ্রামীণ বটতলা মনে করিয়ে দেবে ১৯ শতকের ইতিহাস। বিলাসবহুল এই বাড়ির প্রতিটি কোণ পুরনো সময়ের দলিল।

৪. এলগিন ফেয়ারলন

মাজ লেন এবং সাদার স্ট্রিটের সংযোগস্থলে ১৭৮০ সালে উইলিয়াম ফোর্ড এই ভবন তৈরি করেন। সেই সময়কার কাঁচা বাড়ির প্রেক্ষিতে এইটিই ছিল ইটের তৈরি পাকা বাড়ি। ২০১৮ সালে এলগিন হোটেলস অ্যান্ড রিসর্টস এই বাড়ি অধিগ্রহণ করে। এই বাড়ির সাম্প্রতিকতম মালিক ছিলেন মিসেস জেনিফার অ্যান ফাউলার। শতাব্দী প্রাচীন নিউমার্কেট এলাকাটি হোটেল থেকে মাত্র দুই মিনিটের পথ।

আরও পড়ুন- ঘিঞ্জি দিঘা, ভিড় দার্জিলিং নয়, এই রাজবাড়িগুলিই এখন শীতের সেরা ডেস্টিনেশন!

৫. লিডারস লিগ্যাসি হেরিটেজ হোমস্টে

মহাত্মা গান্ধী, রবি শঙ্কর, এবং ইন্দিরা গান্ধী এই হোমস্টেতে থাকতেন কলকাতায়৷ ১৯০০-এর দশকে নির্মিত এই বাংলোটি পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের বাসভবন। তাঁর ভাইঝি ইলিনা চন্দই এই হোমস্টের দেখভাল করেন, অতিথিদের স্বাগত জানান। এই হেরিটেজ বাংলো সম্পর্কে বহু কাহিনিই রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।

৬. কর্নার কোর্টইয়ার্ড

১৯০৪ সাল থেকে পরিত্যক্ত এই বাড়িকে একটি বিলাসবহুল হোটেলে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ১৯০৪ সালে এখানে বাস করতেন এক ধনী জমিদার পরিবার ছিল। ঘরে ব্যবহৃত রঙের এই শহরের স্পন্দনকে মনে করায়। হলুদ ট্যাক্সির রঙ বেঁচে থাকাকেই ফুটিয়ে তোলে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কথা মনে করায় আশমানি রঙ, হাতির দাঁতের রঙ মনে পড়ায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মার্বেলকে। দুর্গাপুজোর উৎসব মনে করায় এখানের সিঁদুরে লাল রঙখানি।

More Articles