৮ ঘণ্টার ঘুম প্রয়োজন নেই আর! বয়স অনুযায়ী কতক্ষণ ঘুমনো উচিত, নয়া হিসেব বিজ্ঞানীদের
Sleep Time According To Age: দিনে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুমের যে হিসেব সাধারণত দেওয়া হয়ে থাকে তা কিন্তু সব বয়সের ক্ষেত্রেই উপযুক্ত না।
ঘুম হয় না, এমন সমস্যায় কত মানুষ যে চারপাশে ভুগছেন, সামান্য কথোপকথনেই স্পষ্ট হয়ে যায়। ‘লাইফস্টাইল’ সংক্রান্ত যত লেখালিখিই হোক না কেন, ঘুম আনানোর একশো এক টিপস নিয়ে যত ইন্সটা রিলসই তৈরি হোক না কেন, অনিদ্রা, অল্পনিদ্রার সমস্যা জাঁকিয়ে বসছে। বয়স অনুযায়ী ঘুমের পর্যাপ্ত পরিমাণের রকমফের রয়েছে। দিনে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার ঘুমের যে হিসেব সাধারণত দেওয়া হয়ে থাকে তা কিন্তু সব বয়সের ক্ষেত্রেই উপযুক্ত না। সাধারণত ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ ঘণ্টা ঘুম দরকার। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কোন বয়সের মানুষের প্রতিদিন কত ঘণ্টা ঘুম দরকার, তা প্রকাশ করেছে।
বয়স অনুযায়ী কোনও মানুষের কতটা ঘুমনো উচিত?
সিডিসির প্রস্তাবিত ঘুমের নির্দেশিকা
নবজাতক (০-৩ মাস): ১৪-১৭ ঘণ্টা
শিশু (৪-১২ মাস): ১২-১৬ ঘণ্টা
বাচ্চা (১-২ বছর): ১১-১৪ ঘণ্টা
প্রি-স্কুল (৩-৫ বছর): ১০-১৩ ঘণ্টা
স্কুল বয়সের শিশু (৬-১২ বছর): ৯-১২ ঘণ্টা
কিশোর-কিশোরী (১৩-১৭ বছর): ৮-১০ ঘণ্টা
প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬০ বছর): ৭ ঘণ্টা বা তার বেশি
বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক (৬১-৬৪ বছর): ৭-৯ ঘণ্টা
৬৫ বছর এবং তার বেশি বয়সের প্রাপ্তবয়স্ক: ৭-৮ ঘণ্টা
আরও পড়ুন- যে কোনও স্থানে মাত্র ১২০ সেকেন্ডে গভীর ঘুমাতে পারেন আপনি এই মিলিটারি কৌশলে, কীভাবে?
বয়স ঘুমের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীর যাতে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে সেই জন্য আপনাকে কত ঘণ্টা ন্যূনতম বিশ্রাম নিতে হবে সেইটা আরও কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
ঘুমের গুণমান: ঘুমের মধ্যে ঘন ঘন বাধা এলে ঘুমের গুণমান নষ্ট হয়ে যায় ধীরে ধীরে।
ঘুম কম হওয়া: যদি কখনও ঘুম কম হয়, ঘুম না হয় তাহলে আপনার শরীরে সেই ঘটতি পূরণের জন্য আরও ঘুমের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
গর্ভাবস্থা: হরমোনের পরিবর্তন এবং শারীরিক অস্বস্তির জন্য গর্ভাবস্থায় ঘুমের মান খারাপ হতে পারে।
বার্ধক্য: মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘুমের ধরন পরিবর্তিত হয়। অল্পবয়সি প্রাপ্তবয়স্কদের মতোই, প্রায় একই পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন হওয়া সত্ত্বেও, বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের ঘুম সেভাবে হয় না। বয়স বাড়তে থাকলে ঘুম হালকা হয়ে যেতে থাকে। ঘুম আসতে বেশি সময় লাগে এবং ঘুম হয়ও অল্প সময়ের জন্য। বয়স্করা প্রায়শই রাতে একাধিকবার ঘুম ভেঙে জেগে ওঠেন।
আরও পড়ুন-রাতের পর রাত চেষ্টা করেও ঘুম আসছে না? শোওয়ার ঘরে যে যে ভুল করে চলেছেন আপনি…
ভালো ঘুমের স্বাস্থ্যের উপর একাধিক সুপ্রভাব আছে।
ঘুম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নানা সংক্রমণ এবং অসুস্থতার বিরুদ্ধে শরীরকে লড়াই করতে সাহায্য করে ভালো ঘুম।
ঘুম হরমোনগুলিকে প্রভাবিত করে যা খিদেকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই হরমোনগুলির ফলেই ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়। পর্যাপ্ত ঘুম স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ঘুম আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে, যার ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে হয়।
ঘুম স্বাস্থ্যকর রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং কার্ডিওভাসকুলার ফাংশন বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে।
ভালো ঘুম টাইপ ২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
ভালো ঘুম না হলে সারাক্ষণ যে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব থাকে তা মাতাল হয়ে গাড়ি চালানোর মতোই বিপজ্জনক। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনও মুহূর্তে।
ঘুম মনোযোগ, স্মৃতি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতেও সাহায্য করে। ফলে বয়স অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে আপোস না করাই শ্রেয়। শরীরকে সুস্থ রাখতে নির্দিষ্ট সময়, নিরবচ্ছিন্ন ঘুম একান্ত দরকার।