আগুন-ধোঁয়ার কুণ্ডলী ও দুই ফুটবলার! কীভাবে জন্ম নিল পৃথিবী বিখ্যাত এই ছবি?

Milan Derby's Most Iconic Photograph: আকারে-প্রকারে অনেকটা বেঁটেখাটো রুই কোস্তার কাঁধে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাতারাজ্জি… একে কি প্যাসিভ অ্যাগ্রেসন বলব? নাকি নিছক নির্ভেজাল বন্ধুতা?

এ যেন নন্দনে নরক!

স্টেডিয়াম জুড়ে জ্বলছে মশাল। পুড়ছে আতসবাজি। গ্যালারিতে দু’দলের সমর্থকেরা আক্ষরিক অর্থে সম্মুখ-সমরে। ফুটবলারদের মাঠের লড়াই, সাইডলাইনে দুই ম্যানেজারের স্নায়ুযুদ্ধ কার্যত উধাও। এরই মধ্যে খেলা চলছে বটে কিন্তু দু’পক্ষ ততক্ষণে বুঝে গেছে একটা বড়সড় অঘটন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। মাথায় চিন্তাটুকু আসতেই যা দেরি। মুহূর্তে একদিকের গোলপোস্টের পেছনের জটলা থেকে উড়ে এল বোতল। তারপর আগুনের গোলা। জখম গোলকিপার মাঠে বসে পড়ল। বাকি খেলোয়াড়েরা ছুটে এল৷ রেফারি বাঁশি বাজিয়ে ম্যাচ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিলেন। মিনিট কুড়ি পর দু-দল ফিরে এলেও পরিস্থিতি সামান্যতম বদলাল না। বাধ্য হয়ে হোম টিমের দুর্বিনীত সমর্থকদের জঙ্গিপনার শাস্তি হিসেবে রেফারি অ্যাওয়ে টিমকে ৩-০ গোলে বিজয়ী ঘোষণা করলেন।

খাতায়-কলমে এই হচ্ছে ২০০৫ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল সেকেন্ড লেগের মিলান ডার্বির ফলাফল। ফুটবলের ইতিহাসে আরও একটি ঐতিহাসিক পরিত্যক্ত ম্যাচ। সেদিনের স্টেডিয়াম-ফেরতা দর্শকদের চোখে সবচেয়ে ঘটনাবহুল, উত্তেজক ‘ডার্বি ডেল্লা মাডোনিনা’। কিন্তু আবিশ্ব ফুটবলভক্তদের স্মৃতিতে এই বাতিল ম্যাচ আসলে এক ছবির জন্মদিন। বিশ্ব-ফুটবলের অন্যতম ‘আইকনিক ছবি’ উঠেছিল এদিন… ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল। তুলেছিলেন বিখ্যাত ইতালিয় চিত্রগ্রাহক স্তেফানো রেল্লানদিনি (Stefano Rellandini)। ছবির কেন্দ্রে দুই ফুটবলার। বর্ণময় ছবির দুই বর্ণময় চরিত্র— এসি মিলানের রুই কোস্তা আর ইন্টার মিলানের মার্কো মাতারাজ্জি। মিলান ডার্বির ঐতিহাসিকতা, ধূম্রধূসর অগ্নিবলয়ের প্রেক্ষাপট, যুযুধান দুই সৈনিকের বৈরিতা ভুলে কাছাকাছি আসা, দাঁড়ানোর ভঙ্গিমার জটিল থাক ভেঙে সূক্ষ্ণ ইঙ্গিতময়তা আবিষ্কার! সময় যত গড়িয়েছে, এই একটিমাত্র ছবির নন্দন ও দর্শন ধীরে ধীরে ফুটবলপ্রেমীদের বলয় ডিঙিয়ে বিনোদন, সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী মহলের পরম আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে।

প্রায় দু-দশক আগে তোলা ছবির দিকে ফিরে তাকালে আজকাল আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন রেল্লানদিনি। অতশত কাটাছেঁড়ার পথে না হেঁটে তাঁর ব্যখ্যা বেশ সরল ও ছিমছাম—

"বন্ধুত্ব… এই ছবি আমায় মনে করিয়ে দেয় ফুটবল আসলে সমর্থকদের মারামারি নয়। স্রেফ অর্থ উপার্জন কিংবা ব্যবসাও ফুটবলের লক্ষ্য হতে পারে না… ছবিটা তোলার পর আমার মনে হয়েছিল, ফুটবল পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর খেলা।"

যদিও ছবি তোলার আগে পর্যন্ত এপ্রিলের সেই রাত রেল্লানদিনির কাছে মোটেও সুন্দর ছিল না। স্পন্দমান সান সিরো-য় মাঠের ধার ঘেঁষে বসার জায়গা পেয়েছিলেন তিনি। বরাত ছিল ছবি তুলে অতিদ্রুত এজেন্সিকে পাঠানো৷ মাঠের বাইরে লড়াইয়ের সুর গোড়া থেকেই ছিল সপ্তমে বাঁধা। প্রথম লেগে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা ইন্টার মিলানের লক্ষ্য ছিল কামব্যাক৷ দু-দলেই তারকাদের ভিড়৷ ওয়ার্ম আপে আদ্রিয়ানো, শেভচেঙ্কো, কাকা, পির্লো, মালদিনি, ভিয়েরি, জেনেত্তি, ভেরন। ডাগ আউটে রবার্তো ম্যানচিনি আর কার্লো অ্যান্সেলত্তি। ইতালিয় লিগের স্বর্ণযুগ চলছে সেসময়। দর্শকদের সমবেত সঙ্গীত, বিদ্রূপ, চিৎকার, হুল্লোড়, তীক্ষ্ণ শিস মিলেমিশে সে এক অদ্ভুত ক্যাকোফোনি— সান সিরো স্টেডিয়াম যেন ফুটন্ত কলোসিয়াম! রেফারি বাঁশি বাজানো মাত্র বাড়তে থাকা উত্তেজনার গনগনে আঁচ খেলোয়াড়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ম্যাচের গোড়ার দিকে মাতারাজ্জিকে ঢুঁসো মারেন শেভচেঙ্কো। কিন্তু তা কোনওভাবে রেফারির নজর এড়িয়ে যায়। ইন্টার সমর্থকেরা ক্ষোভে ফুঁসতে থাকে। ১৯ মিনিটের মাথায় সেই ‘খলনায়ক’ শেভচেঙ্কোরই গোলে মিলান এগিয়ে গেলে রোষ তুঙ্গে ওঠে।

দ্বিতীয় অর্ধে তেজ বাড়ায় ইন্টার। কোণঠাসা হতে থাকে মিলান ডিফেন্স। ৭১ মিনিটে কর্নার থেকে ক্যাম্বিয়াসো গোল করে সমতা ফেরালেও রেফারি ফাউল ঘোষণা করেন। গোল বাতিল। ব্যাস! এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়৷ মুহুর্মুহু উড়ে আসতে থাকে ঢেলা, আতসবাজি। আগুনের কুণ্ডলী আর ধোঁয়ার চাদরে স্টেডিয়ামের চতুর্দিক ছেয়ে যায়৷ এমন সময় দর্শকদের রোষের শিকার হন মিলানের গোলরক্ষক দিদা। স্ট্র‍্যান্ড থেকে ছোঁড়া আগুনের গোলার আঘাতে আহত হন তিনি। কালবিলম্ব না করে রেফারি ম্যাচ স্থগিত ঘোষণা করেন।

সৌভাগ্যবশত সেদিন উপদ্রুত গ্যালারির উল্টোদিকে ছিলেন রেল্লানদিনি। শারীরিকভাবে অক্ষত থাকলেও দামি ক্যামেরা আর ল্যাপটপ নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তা শুরু হয়। সেসময় রেল্লানদিনি রয়টার্সের হয়ে কাজ করতেন। ম্যাচ কভার-কালে ছবি তুলে তৎক্ষণাৎ এডিট করে নির্বাচিত ছবি এজেন্সির দপ্তরে পাঠাতে হতো। একেই তাড়াহুড়োর কাজ। তার উপর ঘেঁটে যাওয়া ম্যাচের অনিশ্চিত ভবিতব্য৷ তদুপরি ক্রমবর্ধমান সমর্থক-বিক্ষোভ। সবকিছু যখন এলোমেলো, তখনই রেল্লানদিনির চোখ যায় মাঠে৷ কুড়ি মিনিট পর দু-দল ফিরে এসেছে। কিন্তু শরীরী ভাষায় সেই তেজ নেই৷ প্রতিযোগিতার আমেজটাই ততক্ষণে উধাও৷ বরং, সকলে যেন অনেক বেশি ভারমুক্ত। অনেকটাই ‘ক্যাজুয়াল’। এরপর ঠিক কী হল সেকথা না হয় স্বয়ং ফোটোগ্রাফারের মুখেই শোনা যাক।

"...আমি তখন খেলোয়াড়দের ছবি তুলতে থাকি। কারণ তারা ধোঁয়া আর আগুনের ব্যাকড্রপে দাঁড়িয়েছিল। আমার মনে হয়েছিল খেলার বিরতির মুহূর্তকে ধরে রাখার এটাই সবচেয়ে ভালো উপায়৷ ঠিক সেসময় মাতারাজ্জি কয়েক সেকেন্ডের জন্য তার কনুই এলিয়ে রুই কোস্তার কাঁধে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। আমি ফ্রেমটাকে ধরতে জলদি ছবি তুলি। পরে মেমোরি কার্ড বের করে ল্যাপটপে ঢুকিয়ে শুরু করি দিনের সমস্ত ছবি দেখা। সেদিন মোট আটশো থেকে ন’শো-র মাঝামাঝি ছবি তুলেছিলাম। কিন্তু মাত্র একটিতেই রুই কোস্তার কাঁধে কনুইয়ের ভর দিয়ে দাঁড়ানো মাতারাজ্জির ফ্রেমটা এসেছিল। গুগলে এদিনের খেলা সার্চ করলে এর কাছাকাছি ধাঁচের অনেক ছবি চোখে পড়বে। কিন্তু আমার তোলা ওই একটিমাত্র ফ্রেম-ই নির্দিষ্ট মুহূর্তকে ধরে রেখেছে।"

এখন কিঞ্চিৎ আত্মশ্লাঘা অনুভব করলেও ১২ এপ্রিলের রাতে কিন্তু রেল্লানদিনি বুঝতে পারেননি তাঁর তোলা এই ছবি একদিন দুনিয়াজুড়ে চর্চার বিষয় হয়ে উঠবে। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি—

"আমি তক্ষুনি কোনও বিশেষত্ব বুঝে উঠতে পারিনি৷ কিন্তু একটু আলাদা তো অবশ্যই লেগেছিল। আর সে কারণেই তা এজেন্সিকে পাঠাই। আসলে ম্যাচ কভার করার সময় একজন ফোটোগ্রাফারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে ছবি তোলা, সঠিক মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দি করা। তারপর ক্লায়েন্ট ছবি নির্বাচন করলে এবং দর্শক বাহবা দিলে ছবির ভালোমন্দ আমাদের নজরে আসে।"

বিখ্যাত ফ্যাশন ফোটোগ্রাফার জো কুইগ (Joe Quigg)। ‘ম্যাক্স মারা’ (Max Mara), ‘এসকুয়্যার’ (Esquire), ‘বিএমডব্লু’ (BMW)-র মতো ব্র‍্যান্ডের হয়ে কাজ করেছেন। রেল্লানদিনির ছবি নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘দু'জন পুরুষ মডেলকে নিয়ে শ্যুট করার সময় এই আমেজটাই আমি তাদের ভেতর থেকে বের করতে চাইব। দুই ফুটবলারের পোজের মধ্যে একটা অন্তর্লীন বন্ধুত্ব ধরা আছে… যেন স্বাভাবিকতা থেকে ক্ষণিক বিরতি… আমার মনে পড়ে ওয়ার ফোটোগ্রাফির কথা। এই ছবিকে ১৯১৪-র ক্রিসমাস ট্রুসের কাছাকাছি বলা যেতে পারে।’ (★)

ছবির চালচিত্র এবং চরিত্র— দু'তরফেই ভরপুর বৈপরীত্য এবং সেই বৈপরীত্যকে ছাপিয়ে বন্ধুতার যে ইমেজ ফুটে উঠেছে তাকে একাধিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন কেউ কেউ। চরিত্রের কথাই ধরা যাক। এ যেন গোপাল-রাখাল দ্বন্দ্বসমাস! একদিকে ইতালির মার্কো মাতারাজ্জি। ডাকাবুকো ডিফেন্ডার। কাতানেচ্চিও ঘরানার যোগ্য উত্তরসূরি, বিনাযুদ্ধে সূচাগ্র মেদিনী না ছাড়ার দুর্দম জেদ। ‘জিদানের ঢুঁসো-পর্বে’-র কয়েক মাসে আগেকার কথা হলেও ততদিনে ক্লাব ফুটবলে বদমেজাজি অথচ কূটকৌশলী খেলোয়াড় হিসেবে মাতারাজ্জি দুর্নাম-সুনাম দুটোই কুড়িয়েছেন। অন্যদিকে পোর্তুগিজ রুই কোস্তা। আদ্যন্ত শিল্পী। ডিফেন্স ভেদ করে স্ট্রাইকারের পায়ে ঠিকানা-লেখা ফাইনাল পাস বাড়ানোয় কোস্তার প্রতিদ্বন্দ্বী সে-আমলে হাতেগোনা। এককথায় ঠান্ডা মাথার প্লে-মেকার৷ মাঠে এবং মাঠের বাইরে চলনে-বলনে, হাবেভাবে, শরীরী ভাষায় মাতারাজ্জির ঠিক উলটো মেজাজের চরিত্র।

এই দৃষ্টিকোণ থেকে ছবিটিকে বিশ্লেষণ করেছেন ক্রিস ম্যাকেঞ্জি (Chris Mackenzie)। পেশায় ইউনিভার্সিটি অব দ্য ওয়েস্ট অব স্কটল্যান্ডের ‘নিউ মিডিয়া আর্ট’ বিভাগের অধ্যাপক৷ ম্যাকেঞ্জির মতে, মাঠের ঘন সবুজ ঘাসের আস্তরণ, আগ্নেয়পর্দার সুতীব্র হলুদ আভা এবং লাল-গোলাপি ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ স্টেডিয়াম ছবির গোপনীয় ইঙ্গিতের সার্থক ব্যাকড্রপ ফুটিয়ে তুলেছে। সেই ইঙ্গিতকে খোলসা করতে ম্যাকেঞ্জির সংযোজন— 

"...আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, দুজনে ঠিক কী নিয়ে কথা বলছে? আকারে-প্রকারে অনেকটা বেঁটেখাটো রুই কোস্তার কাঁধে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মাতারাজ্জি… একে কি প্যাসিভ অ্যাগ্রেসন বলব? নাকি নিছক নির্ভেজাল বন্ধুতা? এই ছবি এমন ন্যারেটিভ তৈরি করেছে যাকে আমরা নিজেদের জ্ঞানগম্যি এবং পছন্দের রুচির দৌলতে অনেক স্তরে ব্যাখ্যা করতে পারি।"

আশ্চর্যের ঘটনা হচ্ছে, বহুস্তরীয় এই ছবি ছাপা কিংবা বাঁধাই করা— কোনও ফর্মেই রেল্লানদিনির কাছে নেই৷ আসল কপিটি অবশ্য রয়েছে। কিন্তু সেটাও অফিসের ডেক্সটপে। এক বন্ধু ছবিখানা প্রিন্ট করে মাতারাজ্জি আর রুই কোস্তাকে দিয়ে সই করিয়ে আনার কথা বলেছিল। পরে কোনও কারণে ভুলে যায়। সেদিন থেকে রেল্লানদিনির ডেক্সটপেই বন্দি রয়েছে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম চর্চিত ছবি।

এই নিয়ে অত মাথাব্যথা না থাকলেও ছবির কৃতিত্ব-গোপনের সংস্কৃতি নিয়ে বেশ বীতশ্রদ্ধ ইতালিয় ফোটোগ্রাফার। বিশ্ববন্দিত ছবি কারও ড্রইংরুমের দেয়ালে শোভা পাচ্ছে। কেউ টি-শার্টে ছাপিয়ে বিক্রি করছে৷ পোস্টার, পেইন্টিং সবই তৈরি হচ্ছে। এমনকী কিছুদিন আগে মাতারাজ্জিও তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে ছবিটি শেয়ার করেছেন। কিন্তু এত চর্চার মধ্যে চিত্রগ্রাহকের নাম নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করে না! যেন কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ফোটোগ্রাফার কোনওভাবে কোনওদিন ছবিটি তুলেছিল। অথচ স্তেফানো রেল্লানদিনি ততদিনে একজন প্রতিষ্ঠিত চিত্রগ্রাহক এবং ফুটবল সাংবাদিকতার পরিচিত মুখ!

দু'পক্ষেই বদল আসুক। ঘরোয়া আড্ডায় আইকনিক ছবিটি নিয়ে কথাপ্রসঙ্গে স্তেফানো রেল্লানদিনির নাম বলতে এরপর যেন কেউ ভুলে না যাই৷ অন্যদিকে শিল্পীজনোচিত তূষ্ণীভাব কাটিয়ে উঠুন স্তেফানো৷ একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর মেয়েকে এই ছবি সম্বলিত গ্রাফিক টি-শার্ট উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আশা করব, অচিরে তাঁর ঘরের দেয়ালজুড়েও শোভা পাবে আগ্নেয়বলাকার বর্ণময় ব্যাকড্রপ। যে-ব্যাকড্রপের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফুটবল… আর নিখাদ, নির্ভেজাল বন্ধুত্ব।

★ ক্রিসমাস ট্রুস: ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বড়দিন উপলক্ষে ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে একটি অনুমোদনহীন যুদ্ধবিরতি পালিত হয়। সেদিন যুদ্ধরত মিত্রশক্তি (মূলত ফরাসি এবং ব্রিটিশ) এবং কেন্দ্রীয় শক্তির জার্মান সৈন্যরা উপরমহলের অনুমতি ছাড়াই যুদ্ধ না করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুই দল পরিখা অতিক্রম করে একে অন্যের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও উপহার বিনিময় করে। এই দিনটির সবচেয়ে স্মরণীয় স্মৃতিটি ছিল, যুদ্ধের ময়দানে উভয়পক্ষের সৈন্যদের ফুটবল খেলা।

More Articles