মাত্র দু'মাসেই লাখপতি হওয়ার সুযোগ অল্প পুঁজির এই পরিবেশবান্ধব ব্যবসায়

আর অপেক্ষা করবেন না, চটপট কিছুটা পুঁজি জোগাড় করে নিয়ে নেমে পড়ুন পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসায় এবং কয়েক মাসের মধ্যেই হয়ে যান লাখপতি।

নিজের পায়ে দাঁড়াতে হলে আপনাকে প্রথমে উদ্যোগী হতে হবে। আর উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ঠিক কী করতে হবে? শুধুমাত্র চাকরির ওপর ভরসা না করে আপনাকে নিজে থেকেই শুরু করতে হবে কিছু একটা ব্যবসা। কিন্তু শুরুতেই একটা বড় ব্যবসা শুরু করা তো সম্ভব নয়, তাই শুরুতে আপনাকে এমন একটা ব্যবসা করতে হবে, যেখানে আপনি অল্প পুঁজিতে লাভ দেখতে পাবেন অনেকখানি।

বর্তমান যুগে আবিশ্ব দূষণের মাত্রা লাগামছাড়াভাবে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তাই এই মুহূর্তে সবকিছুর আগে প্রয়োজন এমন কিছু জিনিস, যা আমাদের পরিবেশের ক্ষতিও করবে না, আবার আমাদের সমস্ত প্রয়োজনকেও সামলাতে পারবে। ইতিমধ্যে সারা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জন করা শুরু করেছে। অনেক দেশ বুঝতে পেরেছে, কীভাবে প্লাস্টিক আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করে। কিন্তু প্লাস্টিক যদি বর্জন করতে হয়, তাহলে তার বিকল্প কোনও একটি জিনিস তো আনতেই হবে। আর তার জন্যই বর্তমান বিশ্বে জনপ্রিয়তা বাড়ছে কাগজের তৈরি ব্যাগের। কোনওভাবেই কাগজের ঠোঙার কথা কিন্তু হচ্ছে না। আমরা কথা বলছি কাগজের শপিং ব্যাগ এবং কাগজের তৈরি রিসাইকেল-যোগ্য বড় ব্যাগ নিয়ে। বর্তমানে সারা বিশ্বে এই ধরনের ব্যাগের জনপ্রিয়তা বাড়ছে এবং বহু মানুষ বর্তমানে এই ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। এই ধরনের ব্যাগ খুব সহজে রিসাইকেল করা যায় এবং পরিবেশের কোনওরকম ক্ষতি করে না।

কোথায় কাজে লাগে এই পেপার ব্যাগ?
মূলত শপিং করার ক্ষেত্রে পেপারব্যাগ বেশি ব্যবহার করা হলেও এখন গিফট প্যাকিং, খাদ্যদ্রব্য প্যাকিং, ওষুধ-পত্র প্যাকিংয়ের কাজে, জুয়েলারি প্যাকিং, বিজ্ঞাপন এবং সাধারণ নিত্য-প্রয়োজনীয় কাজে এই ধরনের পেপার ব্যাগ এবং কাগজের তৈরি জিনিস জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন: অল্প পুঁজিতে বিশেষ মুরগি পালন, লক্ষ টাকা রোজগারের হাতছানি, জেনে নিন কীভাবে

ব্যবসায়িক সম্ভাবনা

প্লাস্টিক বা সেরকম কোনও পদার্থের একাধিক প্রতিদ্বন্দী থাকলেও কাগজের তেমন কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী এই মুহূর্তে বাজারে নেই। কাগজের ব্যাগের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল প্লাস্টিক ব্যাগ, এবং এই মুহূর্তে তার জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তাই মার্কেটে কাগজের ব্যাগের জনপ্রিয়তা অনেকটাই বেশি। তার পাশাপাশি, শপিং মল এবং বড় বড় শপিং সেন্টার তৈরি হওয়ার কারণে সেই সমস্ত জায়গাতেও কাগজের তৈরি ব্যাগের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। যদি কোনও বড় শপিং করতে হয়, তখন যেমন ব্যবহার করা হচ্ছে কাপড়ের তৈরি ব্যাগ, তেমনি ছোটখাটো শপিং কিংবা জামা-কাপড়ের শপিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে কাগজের তৈরি মোটা শপিং ব্যাগ। তাই যাঁরা নতুন নতুন ব্যবসার জগতে প্রবেশ করতে চাইছেন, কাগজের তৈরি ব্যাগের ব্যবসা অবশ্যই তাঁদের জন্য দারুণ সুযোগ হতে চলেছে।

মূলধন এবং পুঁজি
কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা অত্যন্ত স্মল স্কেলের একটি ব্যবসা। আপনাকে এর জন্য খুব বেশি খরচ করতে হবে না। ন্যূনতম পুঁজি যদি আপনি সংগ্রহ করতে পারেন, তাহলেই আপনি কাগজের ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন। তবে এই কাগজের ব্যাগ তৈরি করার ব্যবসায় প্রধান খরচ হবে কিন্তু মেশিন কিনতে, জমি কিনতে এবং কর্মচারীদের মাইনে দিতে। মেনটেনেন্স, ট্রান্সপোর্টেশন এবং মার্কেটিং মাসে মাসে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে এই ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে ট্রান্সপোর্টেশন এবং মার্কেটিংয়ের খুব একটা কিছু খরচ নেই। মেনটেনেন্সের জন্য ন্যূনতম খরচ আপনাকে করতে হয়।

এবার মেশিনের দামের ব্যাপারে বলা যাক। যদি আপনি কাগজের ব্যাগ তৈরি করার মেশিন কিনে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে আপনার খরচ পড়বে মোটামুটি ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। কাগজের ব্যাগ তৈরি করার ক্যাপাসিটি অনুযায়ী এই মেশিনের দাম বাড়তে পারে। একটি সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংক্রিয় মেশিন এক ঘণ্টায় ১৫,০০০টি কাগজের ব্যাগ তৈরি করে ফেলতে পারে। যদি আপনি সঠিক রিসার্চ এবং সঠিক পরিকল্পনা করেন, এবং সঠিক সাপ্লায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে পারেন, তাহলে অত্যন্ত কম খরচের মধ্যে আপনি এই ব্যবসা শুরু করে দিতে পারবেন।

কীভাবে কোম্পানি রেজিস্টার করবেন?
ব্যবসা সঠিকভাবে শুরু করার আগে আপনাকে আপনার কোম্পানি রেজিস্টার করাতে হবে এবং আপনার কাছের মিউনিসিপালিটি থেকে আপনাকে আপনার কোম্পানির একটি সঠিক ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করতে হবে। তারপরে আপনাকে উদ্যোগ আধার রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করতে হবে। এই রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি কিন্তু স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রি বিকল্পটি বেছে নেবেন এবং সেই অনুযায়ী আপনার ট্রেড লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন করবেন। এখানে বলে রাখা ভালো, আপনি আপনার কোম্পানি এলএলসি অর্থাৎ লিমিটেড লায়াবিলিটি কোম্পানি অথবা স্বাধীন ব্যবসা হিসেবে রেজিস্টার করতে পারেন। তবে যেভাবেই রেজিস্টার করুন না কেন, তার সঠিক কাগজপত্র এবং সঠিক রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বের করবেন। এই সমস্ত কাজ হয়ে গেলে এবার আপনি বাণিজ্যিকভাবে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট তৈরি করা
আপনার ব্যবসার আকার অনুযায়ী একটি সঠিক ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, আপনার ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটের জমি যেন কোনওভাবেই খুব একটা বেশি দামি না হয়। না হলে আপনার ব্যবসা খুব একটা বেশি লাভের মুখ দেখতে পাবে না। এর সঙ্গেই, যদি আপনার ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট মার্কেট থেকে অনেকটাই দূরে চলে যায়, তাহলে আপনাকে ট্রান্সপোর্টেশন খরচ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তাই এমন একটা জমি বেছে নেবেন, যেটা একদিকে যেমন সস্তা, এবং অন্যদিকে শহরের বাজারের মোটামুটি কাছাকাছি। যদি আপনি শহরতলি এলাকায় কোনও ভালো জমি খুঁজে নিতে পারেন, তাহলে খুবই ভালো। কিন্তু কখনওই গ্রামের মধ্যে জমি কিনবেন না। গ্রামের রাস্তা খারাপ হলে এবং মার্কেট থেকে দূর হলে আপনার আমদানি-রপ্তানির খরচ কিন্তু অনেকটা বেড়ে যাবে। তার পাশাপাশি শ্রমিকদের খরচ, কর, সবকিছুই অনেকটা বাড়বে গ্রামের মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট তৈরি করলে।

কী কী কাঁচামাল লাগে?
পেপার ব্যাগ তৈরি ব্যবসা যদি আপনি শুরু করতে চান, তাহলে আপনাকে কিছু কোয়ালিটি প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে এবং যদি আপনার পেপার ব্যাগের কোয়ালিটি যথেষ্ট ভালো হয়, তাহলে আপনি কিন্তু খুব সহজেই জনপ্রিয়তা পেয়ে যেতে পারবেন। পাশাপাশি, যদি কম দামের মধ্যে আপনি ভালো কোয়ালিটির ব্যাগ দিতে পারেন, তাহলে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকেও অনেকটা এগিয়ে আসবেন আপনি। মার্কেটের ফোকাস যেন সব সময় আপনার ওপর থাকে, সেজন্য প্রথমেই ভালো কাঁচামাল নিয়ে ব্যবসা করতে নামুন। পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনার মূলত ছয় ধরনের কাঁচামাল প্রয়োজন। এর মধ্যে রয়েছে পেপার রোল, প্রিন্টিং কেমিক্যাল এবং কালি, আঠা, সুতো, পলিমার স্টিরিও এবং ফ্লেক্সো কালার। তবে কখনওই একগাদা জিনিস কিনে ব্যবসা করতে নামবেন না। আগে দেখে নিন আপনার ব্যবসায় প্রফিট কতটা হচ্ছে এবং আপনি কতটা সফল হতে পারছেন ব্যবসায়ী হিসেবে। যদি আপনি সফলতা পান, তাহলেই আপনি পরবর্তীকালে কাঁচামাল স্টক করুন।

পেপার ব্যাগ তৈরির মেশিনপত্র
এই মুহূর্তে বাজারে একাধিক ধরনের কাগজের ব্যাগ রয়েছে। তাই আগে আপনি ভেবে নিন, কোন ধরনের কাগজের ব্যাগ আপনি তৈরি করতে চান। সেই হিসেবে ক্রয় করুন সঠিক মেশিনপত্র। মেশিন কেনার সময় আপনি অবশ্যই একটু দামি মেশিন কিনবেন। যে মেশিনের কর্মক্ষমতা বেশি এবং অনেক বেশি শক্তপোক্ত, সেই মেশিন আপনাকে অনেক বেশি রিটার্ন দিতে পারবে। ৫ লাখ থেকে ৮ কি ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাম হয়ে থাকে এই ধরনের মেশিনের। তাই একেবারে সস্তার মেশিনটি না কিনে একটু দামি মেশিন কিনুন।

উপরন্তু একটু ভালো মেশিন যদি আপনি কেনেন তাহলে তার সঙ্গে আপনি আরও কিছু আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র পেয়ে যাবেন। এর মধ্যে রয়েছে, স্টিরিও ডিজাইন রোলার, ফ্ল্যাট ফোমিং ডাই, ৩ হর্সপাওয়ারের একটি মোটর, যা আপনার প্রধান ড্রাইভ চালাতে পারবে, এবং তার সঙ্গেই থাকবে একটি ডাবল কালার অথবা ৪টি কালারের ফ্লেক্সো প্রিন্টিং ইউনিট অ্যাটাচমেন্ট। পারলে ব্যবসা শুরু করার আগে আপনি নিজে গিয়ে একটি পেপার ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট ঘুরে আসুন। তারপরেই এই ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা নিন।

শ্রমিকের প্রয়োজন
যে কোনও ব্যবসা ভালোভাবে চালানোর জন্য অবশ্যই শ্রমিকের অত্যন্ত প্রয়োজন। যদি আপনার কাছে প্রশিক্ষিত এবং ভালো শ্রমিক থাকে তাহলে আপনি খুব ভালোভাবে পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসা করতে পারবেন। এই পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসার জন্য মূলত মহিলা শ্রমিকদের বেশি কাজে নেওয়া হয়। আপনি স্থানীয় মহিলা শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনার ব্যবসার জন্য শ্রমিক নিয়োগ করতে পারেন। তবে তাঁদের তদারকি করে নিজে এই কাজ একবার শিখিয়ে নিতে পারলে খুব ভালো হয়।

ব্র্যান্ডিং এবং প্রোমোশন
আপনি যতই ভালো প্রোডাক্ট তৈরি করুন না কেন, সবশেষে আপনার যেটা সবথেকে বেশি প্রয়োজন, সেটা হলো ভালো প্রেজেন্টেশন। কোয়ালিটি ভালো হলেও যদি আপনার ফাইনাল প্রোডাক্ট দেখতে ভালো না হয়, তাহলে তা বাজারে চলবে না। তাই অবশ্যই নিজের প্রোডাক্টের প্রেজেন্টেশন এবং সৌন্দর্যের বিষয়টা মাথায় রাখবেন। আপনার ক্রেতাকে আরও উৎসুক করে তোলার জন্য আপনি নিজের কোম্পানির একটি ভালো লোগো তৈরি করতে পারেন। শুধুমাত্র ক্রেতাকে আগ্রহী করার জন্য নয়, যে কোনও ব্যবসার প্রমোশনের জন্যও লোগো প্রয়োজন। তাই কোনও একটি ভালো ফ্রিল্যান্সার ডিজাইনার দিয়ে আপনি নিজের কোম্পানির একটি যথাযথ লোগো তৈরি করতে পারেন।

এর পরে যা প্রয়োজন, তা হলো প্রোমোশন এবং মার্কেটিং। পেপার ব্যাগ ব্যবসার বিশেষ কিছু মার্কেটিংয়ের প্রয়োজন হয় না। যেটুকু লাগে, সেটুকু হল শুধুমাত্র স্থানীয় সংবাদপত্রে এবং ম্যাগাজিনে মার্কেটিং। তার পাশাপাশি আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে অনলাইন ওয়েবসাইট তৈরি করে মার্কেটিং করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ব্যবসা সঠিকভাবে অনলাইনে নিয়ে যেতে হবে। নতুবা আপনি সরাসরি শপিং মল এবং শপিং মার্কেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সঙ্গে চুক্তি করেও নিজের তৈরি প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত মার্কেটিং করতেই হবে না।

কতটা লাভ হতে পারে?
যদি আপনি পেপার ব্যাগ তৈরি করার ব্যবসায় নামতে চান এবং একটি ভালো মেশিন ক্রয় করে পেপার ব্যাগ তৈরি করতে শুরু করেন, তাহলে আপনি বেশ ভালোই লাভের মুখ দেখতে পারবেন। যদি আপনার মেশিন প্রত্যেক মিনিটে ৬০টি করে ব্যাগ তৈরি করতে পারে, তাহলে আপনি প্রতি ব্যাগে ১০ পয়সা করে লাভ পাবেন। অর্থাৎ, প্রতি মিনিটে আপনি ৬ টাকা করে লাভ করতে পারবেন। যদি আপনার মার্কেট খুব ভালোভাবে চলে এবং আপনি বড় কিছু শপিং মল এবং শপিং কমপ্লেক্সের সঙ্গে চুক্তি করে নিতে পারেন, তাহলে আপনি প্রতিদিন ২,৮০০ টাকা করে লাভ করতে পারেন, অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় ৭০,০০০ টাকার কাছাকাছি। তবে হ্যাঁ, পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসায় অনেকে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই আগে কিছু প্রোডাক্ট তৈরি করে মার্কেটিং এবং শপিং মলের সঙ্গে কিছু চুক্তি সেরে ফেলুন। প্রচুর প্রোডাক্ট তৈরি করে তারপর যদি আপনি চুক্তি করতে চান, তাহলে কিন্তু আপনি ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে?
প্রথমত, আপনাকে আপনার ব্যাগের সাইজ নির্ধারণ করতে হবে। শপিং মলের জন্য সাধারণত একটু বড় ব্যাগ প্রয়োজন হয়। আবার যদি আপনি কোনও ওষুধের দোকানে কাগজের তৈরি ব্যাগ দেন, সেক্ষেত্রে একটু ছোট ব্যাগ প্রয়োজন। তাই আপনার ক্রেতার সঙ্গে আগে আলোচনা করে নেবেন এবং জেনে নেবেন তাদের কী আকারের ব্যাগ প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, আপনার লোগো সবসময় অন্য কোম্পানির থেকে আলাদা হতে হবে, এবং আপনার প্রিন্টিং কোয়ালিটি কোনওভাবেই খারাপ হলে চলবে না।

তৃতীয়ত, পেপার ব্যাগ তৈরি করার সময় ডিজাইন তৈরি করে একটু পেপার বাঁচিয়ে রাখবেন। যদি কোনওভাবে মেশিন সঠিকভাবে আঠা পেস্ট না করতে পারে, তাহলে আপনি সেই ব্যাগ আবার সঠিক জায়গায় নিয়ে আসার আরেকটা সুযোগ পেয়ে যাবেন।

চতুর্থত, আপনার ব্যাগে অবশ্যই আইলেট ফিট করবেন এবং লেস ফিট করবেন। এবং মনে রাখবেন, আপনার ব্যাগের হাতল যেন কোনওভাবেই খুলে না যায়।

পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসা কেন শুরু করবেন?
যদি আপনি সঠিকভাবে সমস্ত সর্তকতা নিতে পারেন, এবং ভালোভাবে ভালো জায়গা বেছে নিয়ে এবং ভালো কর্মীদের নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে অবশ্যই এই পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক। এই ব্যবসায় আপনি একাধিক লাভের সুযোগ পেয়ে যাবেন। পাশাপাশি, ভারত-সহ সারা বিশ্বের পরিবেশের যা পরিস্থিতি, তাতে পেপার ব্যাগ এই মুহূর্তে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস হয়ে উঠেছে। যে কোনও মানুষ যে কোনও ‌সময় পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারে। খুব একটা বেশি পুঁজি এই ব্যবসায় প্রয়োজন হয় না। খুব বেশি বড় জমিও লাগে না এই ব্যবসা শুরু করার জন্য। শুধু মেশিনের জন্য যদি আপনি ফান্ডিং জোগাড় করতে পারেন, তাহলেই খুব সহজে এই ব্যবসা আপনি শুরু করতে পারবেন। এমনকী, যদি আপনার নিজের বাড়িতে একটু জায়গা থাকে, তাহলে আপনি নিজের বাড়ির অতিরিক্ত জায়গাকে কাজে লাগিয়েই পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার লাগবে শুধুমাত্র ভালো রিসার্চ এবং ভালো সোর্স। তাহলেই আপনি লাভের মুখ দেখতে পারবেন এই ব্যবসায়। তাহলে আর অপেক্ষা করবেন না, চটপট কিছুটা পুঁজি জোগাড় করে নিয়ে নেমে পড়ুন পেপার ব্যাগ তৈরির ব্যবসায় এবং কয়েক মাসের মধ্যেই হয়ে যান লাখপতি।

 

More Articles