টাইটানিক নেহাত শিশু! জলে নামতে প্রস্তুত বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল এই জাহাজ

Icon of the Seas Cruise: জাহাজের 'সুইট নেবারহুড'-এ রয়েছে ভূমধ্যসাগরীয় রেস্তোরাঁ এবং দোতলা সানডেক।

ইতিহাস জানে যে ইতিহাস থেকে আমরা কিস্যু শিখিনি। শুধু ইতিহাস কেন, আজকাল বর্তমান থেকেও কিছু শেখার পাটখানি চুকেবুকে গিয়েছে। মানুষ নিডর সেকথা হলফ করে বলা যাবে না, কিন্তু মানুষের মাথাখানি ভর্তি। ফলে নতুন কোনও ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়ার স্থান নেই, পুরনো ঘটনাও 'ডিলিট'-এর খাতায়। নাহলে সেই ১৯১২ সালে টাইটানিক এবং ২০২৩ সালে টাইটানিকের সন্ধানে গিয়ে টাইটান ডুবে যাওয়ার পরেও বিনোদন ও বিলাসের শখ মেটেনি! সাম্প্রতিক টাইটানিক সাবমেরিন বিপর্যয় এবং সেই শতাব্দী প্রাচীন টাইটানিক জাহাজ ডুবে যাওয়ার তোলপাড় করা ঘটনার পর মাঠে থুড়ি সমুদ্রে নামছে নয়া টাইটানিক! নাম তার 'আইকন অফ দ্য সি'জ'। নতুন এই ক্রুজ জাহাজটির মালিকদের দাবি, এটিই 'বিশ্বের বৃহত্তম ক্রুজ জাহাজ'।

আরএমএস টাইটানিক এক সময় বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজ ছিল। রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল তৈরি করেছে এই আইকন অফ দ্য সি'জ। টাইটানিকের চেয়ে এই জাহাজটি নাকি পাঁচগুণ বড়!

আইকন অফ দ্য সি'জ ১,১৯৮ ফুট লম্বা! এর মোট ওজন ২৫০,৮০০ টন। বিলাসবহুল এই ক্রুজ জাহাজে ২০টি ডেক, ৭ টি সুইমিং পুল এবং ওয়াটার স্লাইড রয়েছে। বিশাল বড় এই জাহাজটিতে ৭,৬০০ জন যাত্রী থাকতে পারবেন এবং ২,৩৫০ জন ক্রু সদস্যও পৃথকভাবে থাকতে পারবেন।

১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া বিশ্বের প্রথম বিলাসবহুল জাহাজ টাইটানিক ছিল ৮৫২ ফুটেরও বেশি লম্বা। এর ওজন ছিল ৪৬,৩২৯ টন। টাইটানিকের তুলনায় আইকন অফ দ্য সি'জ ওজনেও পাঁচগুণ ভারী। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সমুদ্র পাড়ি দেবে এই আইকন অফ দ্য সি'জ।

আরও পড়ুন- আশ্চর্য মিল! টাইটানিকে মৃত দম্পতির বংশধরই নিখোঁজ ডুবোজাহাজ টাইটানের চালকের স্ত্রী!

কী কী আছে এই জাহাজে?

এই জাহাজের সামনের দিকে রয়েছে 'অ্যাকোয়াডোম'। সেখানে ৫৫ ফুট জলপ্রপাত দেখা যাবে এবং ২২০-ডিগ্রি ভিউও মিলবে।

জাহাজের 'সুইট নেবারহুড'-এ রয়েছে ভূমধ্যসাগরীয় রেস্তোরাঁ এবং দোতলা সানডেক।

জাহাজটির মধ্যে একটি পাঁচ-ডেক উঁচু এবং খোলা সেন্ট্রাল পার্ক রয়েছে যেখানে বিস্তর গাছপালা রয়েছে।

'চিল আইল্যান্ড'-এ চারটি সুইমিং পুল এবং একটি সুইম-আপ বার রয়েছে।

'থ্রিল আইল্যান্ড'-এ সমুদ্রের বৃহত্তম ওয়াটারপার্ক রয়েছে, যার নাম 'ক্যাটাগরি ৬'।

'সার্ফসাইড' নামে একটি পারিবারিক এলাকা আছে।

সমুদ্রের সরাসরি দৃশ্য দেখার জন্য 'রয়্যাল প্রমেনেড' রয়েছে।

'দ্য হাইডওয়ে'-তে একটি ১৮০-ডিগ্রি ভিউসহ ইনফিনিটি পুলও রয়েছে।

আরও পড়ুন- কোনওদিন ডোবেইনি আসল টাইটানিক! আড়ালে ছিল কোন ষড়যন্ত্র?

আইকন অফ দ্য সি'জ চড়তে গেলে কত টাকা খসাতে হবে?

২০২২ সালের অক্টোবরে দ্য আইকন অফ দ্য সি'জ-এর টিকিট বুকিং শুরু হয়। তখন মাথাপিছু টিকিটের দাম ১,৫৩৭ ডলার থেকে শুরু হয়েছিল। বর্তমানে, রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মিয়ামি থেকে পশ্চিম ক্যারিবিয়ান পর্যন্ত চলবে এই ক্রুজ। বিলাসবহুল এই জাহাজে এখন ঘর ভাড়া নিয়ে থাকার সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দামই ১,৮৫১ ডলার!

২০২৪ সালের মার্চ মাসে যদি ঘুরতে চান তাহলে আইকন অফ দ্য সি'জ-এর সবচেয়ে দামী স্যুটের ভাড়া হচ্ছে ১০,৮৬৪ ডলার! দ্য আইকন অফ দ্য সি’জ-এর পূর্ব ক্যারিবিয়ান ভ্রমণের সাত দিনের প্যাকেজও রয়েছে।

More Articles