যোগীরাজ্যের আসল চিত্র! রক্ত নিতে গিয়ে ১৪ শিশুর মর্মান্তিক পরিণতিতে শিউরে উঠছে দেশ

Uttar Pradesh Blood Transfusion Misery : এই শিশুদের কী হবে যারা অজান্তেই আক্রান্ত হয়ে পড়ল মারণ ভাইরাসে?

শিশুদের চিকিৎসা বরাবরই বিশেষ সচেতনতা দাবি করে। বিশেষ করে জটিল কিছু ব্যাধির ক্ষেত্রে শিশুদের নিরাপত্তা মাথায় রাখতে হয় সবার আগে। অথচ যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশের কানপুরের একটি সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ উঠছে তা শুনে শিউরে উঠতে হয় রীতিমতো। এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়া ১৪ জন শিশুর দেহে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি-এর মতো মারাত্মক সংক্রমণ ঘটেছে! ব্লাড ট্রান্সফিউশন হওয়া ওই ১৪ জন শিশুর দেহে কি তবে পরীক্ষা না করেই রক্ত দেওয়া হয়?

ঘটনাটি ঘটেছে লালা লাজপত রায় হাসপাতালে। ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, সম্ভবত ওই রক্ত কোনও পরীক্ষা না করেই শিশুদের দেহে প্রবেশ করানো হয়। সাধারণত শিশু হোক বা যে কোনও রোগী, তাঁদের যে রক্ত দেওয়া হয় তা দাতাদের থেকে নেওয়ার পরে নানা পরীক্ষা করে সবটা যাচাই করা হয়। রক্তে কোনও রকম ভাইরাস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে, নিশ্চিত করে তবেই তা দেওয়া হয় রোগীদের। এই শিশুদের ক্ষেত্রে দেহে রক্ত দেওয়া আগে তাতে ভাইরাস আছে কিনা সেই পরীক্ষাই কি করা হয়নি! নাকি পরীক্ষা করেও বিষয়টি নজরে আসেনি?

৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী ১৪ জন শিশু কানপুর শহর, ইটাওয়া এবং কনৌজ সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা। তাদের মধ্যে সাতজন হেপাটাইটিস বি, পাঁচজন হেপাটাইটিস সি এবং দু'জন এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন। থ্যালাসেমিয়া ব্লাড ডিজঅর্ডারের জন্য বেসরকারি হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালে রক্ত নিয়েছিলেন তারা, বদলে পেলেন মারাত্মক ভাইরাস!

 

আরও পড়ুন- যোগী বলছেন রাষ্ট্রীয় ধর্ম সনাতন, আদৌ কোনো রাষ্ট্রধর্ম আছে? কী বলছে সংবিধান?

অথচ এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটার পরেও আশ্চর্য শান্ত প্রশাসন! বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গ। মল্লিকার্জুন বলছেন, বিজেপির ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শাস্তি ভোগ করছে নিরপরাধ শিশুরা। “ডাবল ইঞ্জিন সরকার আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে দ্বিগুণ অসুস্থ করে তুলেছে," লিখেছেন মল্লিকার্জুন। তবে যে হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ, এমন সব ঘটনার পরে শান্ত সেই কানপুরের লালা লাজপত রায় হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগও! বিভাগের প্রধান অরুণ আর্য জানাচ্ছেন, কীভাবে ভাইরাস থেকে গেল রক্তে তার সঠিক কারণ স্পষ্ট নয়। তবে 'উইন্ডো পিরিয়ড' এর সময় এই ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।

যখন রক্ত দান করা হয়, তখন এটি অন্যের দেহে দেওয়ার জন্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য বিবিধ পরীক্ষা করা হয়। তবে যিনি রক্ত দিচ্ছেন ভাইরাস সেই দাতাকে সংক্রামিত করার অল্প কিছুকাল পরেই যদি রক্ত পরীক্ষা করা হয় তবে প্যাথোজেন অনেকসময়ই শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এই সময়কালকেই উইন্ডো পিরিয়ড বলা হয়। কর্মকর্তারা সংক্রমণের মূল কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন। হেপাটাইটিস এবং এইচআইভি দুই সংক্রমণেরই উৎস সন্ধান করা হবে। কিন্তু উৎস না হয় জানাও গেল। এই শিশুদের কী হবে যারা অজান্তেই আক্রান্ত হয়ে পড়ল মারণ ভাইরাসে? রক্ত পরীক্ষা নিশ্চিত করার দায় সরকারি হাসপাতাল কীভাবে এড়াতে পারে? প্রশ্ন উঠবে না কি?

More Articles