গুরু সচিন, শিষ্য বিরাট! ভারতের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান সচিনই
Inscript Debate: ৭০ টি আন্তর্জাতিক শতরানের মালিক অধিনায়ক বিরাট কোহেলি। মাস্টার ব্লাস্টারের ওয়ান ডে তে টপ স্কোর ২০০ এবং বিরাট কোহলির টপ স্কোর ১৮৩।
ক্রিকেট জগতে মহান কিংবদন্তি নিয়ে কারও সঙ্গেই কারও তুলনা করে চলে না। দলকে নিয়ে এগোন যাঁরা প্রত্যেকের মধ্যেই একটা না একটা ‘ঈশ্বর’ প্রদত্ত ক্ষমতা থাকে। সেই ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের দরবারে দেশের নামের পতাকা ওড়ান তাঁরা। সচিন হলেন সেই ‘ঈশ্বর’, ক্রিকেট জগতের ঈশ্বর। যে সচিনের সঙ্গে বিরাটের তুলনা করা যায় না, কখনই না। যাঁকে অনুসরণ করে বিরাট ক্রিকেট জগতে পা রেখেছেন তাঁর সঙ্গে তুলনা করা চলে নাকি! বিরাট যদি ছাত্র হন সচিন হলেন তাঁর শিক্ষক। সচিনকে যদি বিরাট টপকে চলেও যান তবুও সচিনের সমস্ত কৃতিত্ব কোনওদিন ভাঙতে পারবেন না।
যেভাবে বিরাট খেলছেন সেভাবে যদি খেলেন তাহলে সেঞ্চুরি সংখ্যায় মাস্টার ব্লাস্টারকে বিরাট পেরিয়ে যাবেন এমনটা মনে করেন ফাস্ট বোলার শ্রীসন্থ। এতে সচিনের কৃতিত্ব খাটো হবে না কখনও। সচিন ক্রিকেটের ঈশ্বর ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। কোনওদিন যদি সচিনের সব রেকর্ড ভেঙেও ফেলেন কেউ, মাস্টার ব্লাস্টার চিরকালই ক্রিকেটের সর্বেসর্বা রইবেন, একথাও সবাই মনে মনে ঠিকই বিশ্বাস করেন। তবে এটাও ঠিক, সব রেকর্ড ভাঙা সম্ভব হয় না।
ভারতের হয়ে ২০০ টি টেস্ট ও ৪৬৩ টি ওয়ান ডে খেলে তাঁর ঝুলিতে রান আছে যথাক্রমে ১৫৯২১ ও ১৮৪২৬। ১০০ টি আন্তর্জাতিক শতরান রয়েছে তাঁর। ওয়ান ডে দ্বিশতরান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ভারতে বড় বড় বোলারদের পরাজিত করেছেন একমাত্র এই সচিন তেন্ডুলকার। সচিন ব্যাট হাতে নামা মানে প্রত্যেক ভারতবাসীর ভরসা হয়ে মাঠে নামা। অন্যদিকে, ভারতীয় দলের হয়ে ৮৬ টি টেস্ট ও ২৬৩ টি ওয়ান ডে খেলে বিরাট কোহলির যথাক্রমে ৭২৪০ ও ১১৮৬৭ রান করেছেন। ৭০ টি আন্তর্জাতিক শতরানের মালিক অধিনায়ক বিরাট কোহেলি। মাস্টার ব্লাস্টারের ওয়ান ডে তে টপ স্কোর ২০০ এবং বিরাট কোহলির টপ স্কোর ১৮৩।
ক্রিকেট কেরিয়ারে এই দুই কিংবদন্তি একসঙ্গে খুবই কম খেলেছেন। বিরাট যখন ইংল্যান্ডের সফরে গিয়ে ম্যাচ খেলছেন তখন মোটেও ভালো ফর্মে ছিলেন না, বারবার আউট হয়েছেন তড়িঘড়ি। দেশে ফিরে এসে বিরাট কোহলি সচিনের কাছ থেকেই পরামর্শ নিয়েছিলেন। বিরাট কোহলির ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিয়েছিলেন সচিন। বিরাট সচিনের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই খেলার নতুন ধরন তৈরি করে ভক্তদের মন জয় করতে শুরু করলেন। সেই ধরন চলতে চলতে ভারতবর্ষ এক নতুন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানের পরিচয় পেতে থাকল। একমাত্র সচিনের প্রেরণা নিয়েই বিরাট কোহলি ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলার চেষ্টা করেছেন।
বিরাট যখন একটা ভালো জায়গায় পৌঁছন তখন সচিন সম্পর্কে কোহলিকেও অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। বিরাট কোহলিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, দু’জনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে। বিরাট উত্তর দিয়েছিলেন, যাঁরা তুলনার যোগ্য একমাত্র তাঁদেরকেই তুলনা করা চলে। এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর তুলনা করা হচ্ছে যে মানুষটিকে দেখে তিনি ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। “স্কিলের দিক থেকে আমার সঙ্গে কোনও তুলনা করা চলে না। একমাত্র কমপ্লিট ব্যাটসম্যান বলতে যা বোঝায় সচিন টেন্ডুলকার হলেন তাই।” আমি সবসময়ই বলেছি সচিনের সঙ্গে বিরাটের তুলনা করা অন্যায়। ক্রিকেট জীবনে সচিন তেন্ডুলকার যা দিয়ে গেছেন তারপরেও এই কিংবদন্তির সঙ্গে কারও তুলনা করা চলে কি আদৌ!
বয়সের হিসেবে, বিরাট মনে হয় না আর খুব বেশিদিন খেলতে পারবেন। যদি আর খুব বেশি দিন না খেলেন তাহলে সচিনের রেকর্ড ভাঙাও কখনই সম্ভব হবে না। অলরাউন্ডার হিসাবে সচিন ছিলেন দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। সমস্ত দিক থেকে বিচার করে দেখা যাচ্ছে, সচিন এবং বিরাটের মধ্যে দু’জনের কেরিয়ার যদি প্রায় সমান সমানও হয়ে যায় তাহলেও ক্রিকেট জগতে সচিন তেন্ডুলকারই সর্বোত্তম।