বিনা বিচারেই বন্দি নাবালক, মহিলারা? কোন ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে ইজরায়েল?

Palestinian Prisoners : মুক্তি পেতে চলা বন্দিদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সংযুক্ত পূর্ব জেরুজালেমের ১৪ বছর বয়সি অ্যাডাম আবুদা হাসান ঘেইট।

হামাস বলেছে, অপহৃত ও আটক ৫০ ইজরায়েলিকে মুক্তি দেবে তারা। বদলে ইজরায়েলকেও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। এই শর্তে রাজি হয়েই যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে। গাজায় আটক অপহৃতদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ইজরায়েল-হামাস ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তির পথে এগোচ্ছে। ইজরায়েল যে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে তাদের অধিকাংশই কিশোর। ইজরায়েল ৩০০ ফিলিস্তিনি বন্দির নাম প্রকাশ করেছে যারা এই চুক্তির অধীনে মুক্তি পেতে পারে।

চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে চার দিনের মধ্যে ৫০ জন ইজরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। পাল্টা শর্ত মেনে ইজরায়েল ১৫০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে। আরও অনেক বন্দিকেই পরবর্তীতে ৩:১ অনুপাতে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। ইজরায়েল যে তালিকে দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে, মুক্তি পেতে চলা বন্দিদের মধ্যে ৩৩ জন মহিলা, ১২৩ জন কিশোর যাদের বয়স ১৮ বছরের কম এবং ১৪৪ জন সাবালক।

মুক্তি পেতে চলা বন্দিদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সংযুক্ত পূর্ব জেরুজালেমের ১৪ বছর বয়সি অ্যাডাম আবুদা হাসান ঘেইট। গত মে মাসে বিদ্বেষী নাশকতামূলক কার্যকলাপ, একজন পুলিশ অফিসারকে আক্রমণ এবং পাথর ছোড়ার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই কিশোরকে।

তালিকায় সবচেয়ে বয়স্ক হানান সালাহ আবদুল্লাহ বারঘুটি নামে একজন ৫৯ বছর বয়সি মহিলা। গত সেপ্টেম্বরেই টাকা পাঠানো সহ হামাসের অন্য কার্যকলাপে সাহায্যের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন- গাজায় যুদ্ধবিরতি! বন্দি মুক্তিতে হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে কেন রাজি হলো ইজরায়েল?

এই মুক্তি পেতে চলা বন্দিদের মধ্যে ৪৯ জন হামাস সদস্য। ৬০ জন ফাতাহ সদস্য। ফাতাহ অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। ১৭ জন রয়েছেন বামপন্থী, পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) সঙ্গে যুক্ত তারা। বাকিরা সাধারণ নাগরিক, নির্দিষ্ট কোনও দলের নন।

এই বন্দি তালিকার সবচেয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তি ইসরা জাবিস। বয়স তাঁর ৩৮। ২০১৫ সালে একটি চেকপয়েন্টে তার গাড়িতে রাখা একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন। ওই বিস্ফোরণে একজন পুলিশ অফিসার আহত হন। ইসরা জাবিসকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

ইজরায়েলের মানবাধিকার সংগঠন হ্যামকড এই যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তির চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। হ্যামকড বলছে, মানুষকে বন্দি হিসাবে রাখা বেআইনি, এটি যুদ্ধাপরাধ। হামাসের উচিত সমস্ত বন্দিকেই নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া। পাল্টা ইজরায়েলকেও বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।

যাদের মুক্তি দেওয়া হবে তাদের বেশিরভাগই ছিলেন বিচারাধীন। এদের কারও বিরুদ্ধে পাথর ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে, কারও বিরুদ্ধে আবার খুনের অভিযোগ। তবে এই তালিকায় এমন মানুষরাও রয়েছেন যাদের কোনও অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক করে রাখা হয়েছে।

More Articles