হামাসদের হাতে পণবন্দি মার্কিন মা-মেয়েকে মুক্তি! শুধুই কাতারের মধ্যস্থতা নাকি নেপথ্যে অন্য কারণ?

Israel-Hamas War: এত সব ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই হামাসরা মুক্তি দিল দুই মার্কিন বন্দিকে। জানানো হয়েছে, মানবিক কারণেই কাতার সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের।

ইজরায়েল ও গাজার অশান্তি চলছেই। গাজা স্ট্রিপের উপর একের পর এক হামলা চালিয়েই চলেছে ইজরায়েল। ইতিমধ্যেই গাজা লক্ষ্য করে ৬ হাজারেরও বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। ইজরায়েলের অজস্র মানুষকে হত্যা করে তারা। অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় অসংখ্য ইজরায়েলবাসীকে। তার মধ্যে যেমন ইজরায়েলের নাগরিকেরা ছিলেন, ছিলেন অভিবাসীরা। এমনকী তার মধ্যে ছিল বহু মার্কিনও। গাজায় হামলার মাত্রা বাড়ালে পণবন্দিদের জীবন বিপন্ন হবে বলে আগেই হুমকি দিয়েছিস হামাস। তবে তার পরোয়া না করেই গাজাবাসীর উপরে একের পর এক হামলা শানিয়ে দিয়েছে ইজরায়েল। এর মধ্যে নদীতে বয়ে গিয়েছে বহু জল। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নাকি দুই মার্কিন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।

গত ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামলায় আরও অনেকের সঙ্গে হামাস জঙ্গিদের হাতে বন্দি হয়েছিলেন এক মহিলা ও তাঁর কিশোরী কন্যা। সম্প্রতি তাঁদের দুজনকে মুক্তি দিয়েছে হামাসরা। সম্প্রতি ইজরায়েল সফরে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যদিও বাইডেন গোড়া থেকেই ইজরায়েলকেই সমর্থন করে এসেছে। এমনকী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সুরে সুর মিলিয়ে গাজার হাসপাতালে রকেট হামলায় দায় ঠেলেছে স্থানীয় জঙ্গিদের উপরেই। এদিকে আবার মিশরের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন বাইডেন। সেই কথোপকথন শেষে গাজার শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মিশর। তাতে অনুমতিও দিয়েছে ইজরায়েল। এর মধ্যেই আবার গাজা সিটির একটি প্রাচীন চার্চে ফের রকেট হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা।

আরও পড়ুন: গাজার শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলল মিশর, কতটা চাপে ইজরায়েল!

এই এত সব ঘটনাপ্রবাহের মধ্যেই হামাসরা মুক্তি দিল দুই মার্কিন বন্দিকে। এর নেপথ্যে কি রয়েছে জো বাইডেনের উপস্থিতি, না অন্য কিছু, ভাবাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহলকে। জানানো হয়েছে, মানবিক কারণেই কাতার সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। ৫৯ বছরের জুডিথ তাই রানান ও তাঁর মেয়ে বছর সতেরোর শোশানা রানান। শিকাগো থেকে কিবুটজ নাহাল ওজে এসেছিলেন তাঁরা। সে সময়েই হামলা করে হামাজ।

Hamas Frees 2 American Hostages 'for Humanitarian Reasons'

জুডিথ ও শোশানা দুজনেরই ইজরায়েল ও আমেরিকার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। ৭ অক্টোবরের হামলার পরে তাঁদের অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস জঙ্গিরা। শুক্রবার গাজা স্ট্রিপ সীমান্তের কাছে ইজরায়েলি সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁদের। অবশেষে পরিবারের সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের। এ কথা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন খোদ ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট। জানা গিয়েছে, মা ও মেয়ে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন।

স্বাভাবিক ভাবেই এই দুজনের মুক্তি হামাসদের হাতে বন্দি অন্যদের কাছেও আশার আলোর মতো। তাদের পরিবারের তরফে হামাসের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্য বন্দিদেরও যাতে মুক্তি দেওয়া হয়, সেই মর্মে আবেদনও জানান তাঁরা। এই দুই মার্কিন নাগরিকের মুক্তিতে কাতার ও ইজরায়েলকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

আরও পড়ুন: ফের রকেট হামলা! গাজার হাসপাতালের পর এবার টার্গেট চার্চ!

তবে কেন বেছে বেছে রানান মা-মেয়েকেই মুক্তি দেওয়া হল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এর নেপথ্যে আমেরিকার হাত রয়েছে কিনা স্পষ্ট নয় তাও। হামাসদের তরফে শুধু এটুকু জানানো হয়েছে, কাতার মধ্যস্থতা করায় মানবিক কারণে ছাড়া হয়েছে ওই দু'জনকে। তবে শুধুই কি মানবিক কারণ, নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে অন্য আন্তর্জাতিক সমীকরণ, বুঝতে চাইছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে কি নতিস্বীকার করে নিতে চাইছে হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী নাকি সুতো আলগা করে ছেড়ে অন্য কোনও ঘুড়ির লড়াই খেলার ছক কষছে হামাসরা। কোথায় যেতে চলেছে ইজরায়েল-গাজা সংঘাত? ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেই অঙ্কটা।

More Articles