ছোট্ট জ্যোতি বসু থাকতেন এই বাড়িতেই! যেভাবে চোখ ধাঁধানো পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠল এই বাড়ি

Jyoti Basu Bardi Home: রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বারদির চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি বসুর এই বাড়িটি আসলে তাঁর দাদুর বাড়ি।

বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের বারদি গ্রাম। সেই গ্রামেই বিশাল এক বাড়ি আদ্যিকালের স্মৃতিগুচ্ছ হয়ে দাঁড়িয়ে। বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর শৈশবের স্মৃতি, কৈশোরের ইচ্ছা, বড় হয়ে ওঠার চড়াই উৎরাই সবটুকুই অদৃশ্য অ্যালবাম হয়ে সংরক্ষিত এই বাড়ির ইঁটে, বালিতে, ধূলিকণায়। এই বাড়িতে বেশ কিছুকাল কাটিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। কলকাতায় যখন স্কুলের ছুটি পড়ে যেত, বাবা ডাঃ নিশিকান্ত বসুর সঙ্গে এই বাড়িতেই চলে আসতেন জ্যোতি। দোতলার উত্তর দিকের একটি ঘর ছিল তাঁর বরাদ্দ। মুখ‌্যমন্ত্রী হওয়ার পর তিনবার, ১৯৮৭, ১৯৯৭ এবং ১৯৯৯ সালে এই গ্রামে যান জ্যোতি বসু। চেয়েছিলেন, নিজের এই পৈতৃক ভিটেয় একটি গ্রন্থাগার গড়ে উঠুক। সেই অনুযায়ীই ছ’বছর আগে বাংলাদেশের জনসাধারণের জন্য একটি গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা তৈরি করে বাংলাদেশ সরকার। সম্প্রতি এই বাড়িটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও ঘোষণা করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বাংলাদেশের এই ঠিকানা হয়ে উঠল বারদি পর্যটন কেন্দ্র। দোতলার সেই ঘরে এখনও দেওয়ালে ঝোলানো পারিবারিক ছবি। ছবির মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছেন জ্যোতি বসু। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে বারদির চৌধুরীপাড়ায় জ্যোতি বসুর এই বাড়িটি আসলে তাঁর দাদুর বাড়ি। জ্যোতি বসুর দাদু শর‍ৎ চন্দ্র দাস ছিলেন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁর একমাত্র মেয়ে হেমলতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রখ্যাত হোমিওপ্যাথিক চিকি‍ৎসক নিশিকান্ত বসুর। নিশিকান্ত বসু অবশ্য কলকাতাতেই কাজকর্মে ডুবে যান। জ্যোতি বসুর জন্মও হয় কলকাতার হ্যারিসন রোডে।

আরও পড়ুন- বারবার সুযোগ পেয়েও ‘ঐতিহাসিক ভুল’, জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হলে অন‍্যভাবে লেখা হত ভারতের ইতিহাস

বারদির এই বাড়িতে থাকার সময় জ্যোতি বসুর সমস্ত দেখভালের দায়িত্ব সামলাতেন আয়তুন্নেচ্ছা বিবি। ১৯৮৭ সালে আয়ুতুন্নেচ্ছার সঙ্গেই দেখা করতে সোনারগাঁও চলে আসেন জ্যোতিবাবু। বেশ কয়েক বছর হলো, আয়তুন্নেচ্ছা বিবি নেই। এখন তাঁর ছোট মেয়ে হাজেরা বিবি জ্যোতি বসুর পৈতৃক এই ভিটে এবং গ্রন্থাগার সামলান। জ্যোতি বসু তাঁর কাছে জ্যোতি দাদু।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় একাধিকবার মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠকে বসেছিলেন জ্যোতি বসু। সাহস জুগিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের। ২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা জ্যোতি বসুর পৈতৃক ভিটেতে বারদি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের কথা ঘোষণা করেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণকার্য শুরু হয়। করোনা পর্বের ভীতি কাটিয়ে অবশেষ কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। ৩ কোটি ৮৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্র। রেস্তোরাঁ, পিকনিকের জায়গা, গাড়ি পার্কিং সহ অন‌্যান‌্য সব সুবিধাই রয়েছে এখানে।

More Articles