রশ্মিকার পর ক্যাটরিনা! টাইগার ৩-এর তোয়ালে দৃশ্যের 'ফেক' ছবি ভাইরাল

Tiger 3 Katrina Deepfake Photo : আসল ছবিতে ক্যাটরিনাকে হলিউডের একজন স্টান্টওম্যানের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে।

দিন কয়েক হলো, অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার মুখের ছবি ব্যবহার করে একটি ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া হয়। মুখটি রশ্মিকার অবশ্যই, তবে দেহটি নয়। এই অন্যের ধড়ে অপরের মাথা বসিয়ে দেওয়ার কৌশল নতুন কিছু না। তবে আধুনিক প্রযুক্তিতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এই কাজের দক্ষতা, এই কাজের চমক আরও বেড়ে গিয়েছে। প্রযুক্তির ভাষায় এই ধরনের ভুয়ো ভিডিওকে বলে ডিপফেক ভিডিও। রশ্মিকার পরে এবার এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শিকার অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ। মুক্তি পেতে চলেছে 'টাইগার ৩'। তাতে ক্যাটরিনা কাইফের একটি তোয়ালে দৃশ্য রয়েছে। কিন্তু এআই ব্যবহার করে তোয়ালে গায়েব করে সেই ছবিতে ক্যাটরিনাকে একটি অন্য বিশেষ পোশাক পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে সেই ছবি এখন ভাইরাল।

আসল ছবিতে ক্যাটরিনাকে হলিউডের একজন স্টান্টওম্যানের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। তোয়ালে পরা অবস্থাতেই একটি লড়াইয়ের দৃশ্য রয়েছে সেখানে। ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে ক্যাটরিনাকে তোয়ালের পরিবর্তে একটি লো-কাট সাদা টপ পরে দেখানো হয়েছে। ডিপফেক এআই টুল ব্যবহার করেই ছবিটিতে এসব পরিবর্তন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- রশ্মিকা মান্দানার ‘ডিপফেক’ ভিডিও ভাইরাল! AI-এর কেরামতিতে কতটা ঝুঁকির মুখে মহিলারা?

'টাইগার ৩' সিনেমাতে ক্যাটরিনার একটি দৃশ্যের অংশ তুলে তাতে ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করে ভাইরাল করে দেওয়া হলো। বিষয়টি এত সহজ না। যেমন জারা প্যাটেলের দেহে রশ্মিকার মুখ বসিয়ে দেওাটাও সহজ নয়। ডিপফেক প্রযুক্তি সহজেই মানুষের আসল ছবিকে ব্যবহার করে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে তা উপস্থাপন করতে পারে। ক্যাটরিনাকে অন্য পোশাকে দেখানো হয়েছে, রশ্মিকাকেও। পোশাক পরানো হোক, পোশাকহীন করে দেওয়া হোক, সবটাই অত্যন্ত সহজ। হ্যাঁ, প্রাথমিকভাবে মহিলারাই এর শিকার।

রশ্মিকা মান্দানার ক্ষেত্রে যে ধরনের ভিডিও প্রচার করা হলো তাতে এমন একটি লিফটে এমন পোশাকে তাঁকে দেখানো হলো যা আসলে রশ্মিকা ছিলেনই না। ডিপফেক ভিডিও জনমানসে রশ্মিকার অন্য এক চিত্র তৈরি তো করলই, আসল এবং নকল চেনার বা খতিয়ে দেখার বিষয়টিও নড়বড়ে করে দিল৷ রশ্মিকার ভিডিওটিতে দেখা যায় তিনি একটি লিফটে ঢুকছেন, একটি কালো পোশাক পরে৷ সাংবাদিক এবং গবেষক অভিষেক কুমার প্রথম জানান এই ভিডিওটি 'ফেক’। ভারতে ডিপফেক ভিডিও বা ছবির সমস্যা মোকাবিলার জন্য আইনি ব্যবস্থা এবং নিয়ন্ত্রণের কথাও বলেছেন তিনি৷

ডিপফেক প্রযুক্তির অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি পদ্ধতি। কিন্তু হামেশাই প্রতারণামূলক ডিজিটাল বিষয় তৈরি করতে তার সাহয্য নেওয়া হচ্ছে এবং এর সঙ্গে উন্নতমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জড়িত। এই প্রযুক্তিটি ভিডিও বা অডিও রেকর্ডিংয়ে একজন ব্যক্তির চেহারা এবং গলার স্বর বদলে দিতে পারে। কোনটা আসল, কোনটা নকল তার পার্থক্য করাও কঠিন করে তোলে।

আরও পড়ুন- ভাইরাল ভিডিওর নারী রশ্মিকা মান্দানা নন, কী ভাবে চিনবেন ডিপফেক?

রশ্মিকা মান্দান্নার ভিডিওর ক্ষেত্রে, মূল ফুটেজে ব্রিটিশ-ভারতীয় ইনফ্লুয়েন্সার জারা প্যাটেলকে দেখা গিয়েছে, কিন্তু ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিনেত্রীর মুখ দিয়ে তাঁর মুখ বদলে দেওয়া হয়েছে। এইভাবে এই প্রযুক্তি দিয়ে আখেরে কী কী করা সম্ভব তার একটা ধারণা সকলেই করতে পারবেন।

ডিপফেক হল এক ধরনের 'সিন্থেটিক মিডিয়া'। এখানে কোনও ইমেজ বা ভিডিওতে থাকা কোনও ব্যক্তিকে এআই ব্যবহার করে অন্য কারও সঙ্গে বদলে দেওয়া যায়। বিষয়টি আগেও হতো কিন্তু ডিপফেক ভিডিওগুলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে এখন আরও নিখুঁত তৈরি করা যাচ্ছে। ডিপফেক ভিডিওতে প্রায়ই মুখের অস্বাভাবিক অভিব্যক্তি বা নড়াচড়া দেখা যায়। যেমন, খুব ঘন ঘন চোখের পলক ফেলা, বেশিই নড়াচড়া করা। খুব ভালো করে খতিয়ে দেখলেই একটি ভিডিও আসল নাকি নকল তা বোঝা যাবে। ডিপফেক ভিডিওগুলিতে প্রায়ই চোখ ঝাপসা থাকে, বা ফোকাসহীন থাকে। ব্যক্তির মাথার নড়াচড়ার সঙ্গে এই চোখ মেলে না।

More Articles