মাঠে নামলেই ছয়ের বন্যা! আইপিএলে সেরা ছক্কা হাঁকিয়েছেন কোন ক্রিকেটাররা, জানেন?

Players With Most Sixes IPL : একের পর এক ছয় মেরে সেরার পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছেন। এক নজরে সেই ‘ছক্কাবাজ’দেরই নজরে রাখা যাক।

কখনও বোলিংয়ের জাদুতে উইকেট ছিটকে পড়ে যায়, কখনও আবার ব্যাটারের দাপটে কালঘাম ছুটে যায় বিপক্ষের অধিনায়কের। আবার যখন কোনও খেলোয়াড় অসামান্য, প্রায় অসম্ভব একটি ক্যাচ ধড়ে ফেলেন, গোটা স্টেডিয়াম লাফিয়ে ওঠে। এভাবেই নানা রঙে রঙিন হয়ে থাকে ক্রিকেটের জগত। আর সেই জগতেরই আরও রঙিন ছবি উঠে আসে আইপিএলে। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়রা নিজেদের সেরা ফর্ম দেখানোর জন্য মুখিয়ে থাকেন। উঠে আসে অনেক নতুন প্রতিভা। তারুণ্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতার মিশেল, সব মিলিয়ে এবারও আকর্ষণীয় হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হয়েছে ২০২৩-র আইপিএল।

গ্যালারিতে বসে থাকা দর্শকরা কীসে সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত হন? তাঁদের প্রিয় দল যখন জেতে, তখন তো আনন্দ হয় বটেই। কিন্তু ম্যাচ চলাকালীন টানটান উত্তেজনা, শেষ বল অবধি শিরদাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত, নখ কামড়ানো, এসব তো লেগেই থাকে। তারপর কোনও বোলার যখন উইকেট ছিটকে দেন, উল্লাসে ফেটে পড়ে গ্যালারি। আর টি-২০ ক্রিকেট মানে সেখানে ছক্কার বন্যা থাকবে না, তা কি হয়! গ্যালারিতে উড়ে আসা একের পর এক ছয় নিয়ে আরও বেশি উচ্ছ্বাস থাকে মানুষের। আইপিএলের ইতিহাস এমন অনেক প্রতিভাবান, কিংবদন্তি ক্রিকেটারের সাক্ষী থেকেছে, যারা মাঠে নামলে বিপক্ষ আলাদা করে প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। একের পর এক ছয় মেরে সেরার পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছেন। এক নজরে সেই ‘ছক্কাবাজ’দেরই নজরে রাখা যাক।

ক্রিস গেইল

এক নম্বরে ইনি থাকবেন না তো আর কে থাকবেন! ক্রিস গেইল যেন এক অতিমানবের নাম, দানবের শক্তি তাঁর গায়ে। ব্যাটে বলে লাগলে অধিকাংশ সময়ই ফলাফল জেনে যেতেন সবাই। কলকাতা নাইট রাইডার্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর আর পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলেছেন তিনি। ১৪২টি ম্যাচে মোট ৩৫৭টি ছয়ই মেরেছেন! এক কথায়, অবিশ্বাস্য! ক্যারিবিয়ান জায়ান্ট এখন অবসর নিয়েছেন। কিন্তু আইপিএল আর বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চ সবসময় তাঁকে মনে রাখবে।

এবি ডেভিলিয়ার্স

ক্রিকেটের ময়দানে তিনি ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি’। বাইশ গজে দাঁড়িয়েই গোটা মাঠ জুড়ে ছক্কা হাঁকানোর ক্ষমতা রাখেন তিনি। তাঁর দুরন্ত কিছু ইনিংস আজও ইতিহাসের পাতায় রয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর আর দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলেছেন। আর তাঁর অবদান নিশ্চয়ই নতুন করে বলার দরকার নেই। ১৮৪টি ম্যাচে ২৫১টি ছয় মেরেছেন। তাও ৩৬০ ডিগ্রি জুড়ে!

রোহিত শর্মা

ক্রিকেট মহলে এমনি এমনি তাঁর নাম ‘রো-হিট’ হয়নি। ভারতের বর্তমান অধিনায়ক নিজের ফর্মে থাকলে যে ঠিক কী করতে পারেন, তাঁর অনেক উদাহরণ দেখে নিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট। এখন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক তিনি। আগে ডেকান চার্জার্সের হয়েও খেলেছিলেন। ২২৭ ম্যাচে ২৪০টি ছয়, মুখের কথা নয়!

এমএস ধোনি

তিনি ক্যাপ্টেন কুল। ভারতের আদরের ‘মাহি’। ২০১১ সালে ছয় মেরেই ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। মহেন্দ্র সিং ধোনির সম্পর্কে যত বলা যায়, সেটা কমই হবে। ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু ২০২৩-র আইপিএল দেখছে তাঁর বুড়ো হাড়ে ভেল্কি। ২৩৪টি ম্যাচে ২২৯টি ছয় মেরেছেন তিনি। ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন প্রচুর। তিনি তো ‘মাহি’, তিনি আছেন মানে চেন্নাই সুপার কিংসের ধড়ে প্রাণ আছে।

কায়রন পোলার্ড

ইনিও আরেক ক্যারিবিয়ান বিগ হিটার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বরাবরের সঙ্গী এই খেলোয়াড় ব্যাট হাতেও ভয়ানক, বল হাতেও কার্যকরী। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের আইপিএল জয়ের পেছনে পোলার্ডের অবদান অনেক। ১৮৯ ম্যাচে ২২৩টি ছয়, এ কি মুখের কথা!

বিরাট কোহলি

ইনি না থাকলে ভারতের ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক ক্ষুব্ধ হতেন। সচিন পরবর্তী যুগে ভারতের সেরা ব্যাটার বললে অত্যুক্তি হয় না। ইতিমধ্যেই যা সব রেকর্ড স্পর্শ করেছেন, তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে দীর্ঘদিন অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন। এখনও এই দলেই আছেন, কেবল অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ২২৩টি ম্যাচে ২১৮ ছয়; এই সংখ্যা যাতে আরও বাড়ে, তারই অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব।

More Articles