যত না জমজমাট গল্প ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল নীরবতা! মনে পড়ে কবি গৌতম বসুকে

একমাথা থাকথাক চুল, ঘনকৃষ্ণ, টিকোলো নাক, দৃষ্টিতে উনিশ শতকীয় বিন্যাস— গৌতম বসু।

বলখের অধিবাসী, মরমি সাধক, হজরত আবু বকর ওয়াররাক বহু দিন ধরে হজরত খিজিরের সাক্ষাৎপ্রার্থী। এজন্যে প্রতিদিন তিনি কবরস্থানে যেতেন— যদি দেখা হয়। যাওয়া-আসার পথের সময়টুকু আবৃত্তি করতেন কোরআন।

একদিন কিছু দূর গিয়েছেন, শান্ত, সৌম্য শ্বেতবস্ত্র-পরিহিত এক ব্যক্তি বললেন— ‘চলুন, আমরা এক সঙ্গে হাঁটি।’ কিছুটা পথ যাওয়ার পর আগন্তুক বললেন— ‘বহুদিন ধরে যার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে আপনার, আমিই সেই খিজির। আজ দেখা হলো বটে, কিন্তু আপনার পক্ষে ভালো হলো না কি মন্দ, ভেবে দেখবেন। আসা-যাওয়ার পথে প্রতিদিন কোরআন আবৃত্তি করতেন। সেটি আজ হলো না। আমার মতো মানুষও যদি কোরআন থেকে দূরে রাখতে পারে, তাহলে অন্যের সান্নিধ্যে এলে আপনার অবস্থা কী দাঁড়াবে! এই জন্যই বলি— লোক-সংসর্গ থেকে দূরে, নির্জনে, বাস করাই ভালো।’

সাধক হয়তো-বা কিছুটা কবি। যেমন কবিকেও সাধনা করতে হয়। তবু এই দুই দলের মাঝখানে রয়ে গেছে কোনও পুলসেরাত বা বৈতরণীর মতো বিভাজিকা নদী। আর তাই, ‘অন্নপূর্ণা ও শুভকাল’ পাঠানোর পর, ১০ নভেম্বর ১৯৮২, এক চিঠিতে পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল জানিয়েছিলেন— ‘একটা খেদ থাকছে-ই যে, যদি এঁকে তুমি দেখতে!’

একমাথা থাকথাক চুল, ঘনকৃষ্ণ, টিকোলো নাক, দৃষ্টিতে উনিশ শতকীয় বিন্যাস— চোখ মুদলে, ধোঁয়াটে কফি হাউজের পরিপ্রেক্ষিতে বা বসন্ত কেবিনে, এই দৃশ্য আজও দেখতে পাই।

গৌতম বসু।

অনেকের ক্ষেত্রে দেরি হয় বটে। কিন্তু গৌতমের ক্ষেত্রে আমার বা আমার ক্ষেত্রে গৌতমের সম্পর্ক বেশ চটজলদিই আঠালো হয়েছিল। পরে কখনও ভয়ংকরভাবে ধ্বসে গেছে সে-সম্পর্ক। আবার মাথা তুলেছে হয়তো-বা গৌতম বসুরই ঔদার্যে।

কিছু ভয় বৃষ্টির রাতের জন্য সঞ্চিত থাকত
ঝড়ের যন্ত্র যখন অবিরাম প্রসবিনী, কিছু ভয়, অনাথ;
শব্দও একপ্রকার অন্ধকার, যার উদ্দেশে কান পাতা রয়েছে
যার ভিতর, তমসা তাদের পথের কাঁটা, অহর্নিশ
জল বিতরণ করে, বৃক্ষের কুহক; আর এমন
নিদ্রা শোভা কেউ দেখেছে, কেউ দ্যাখেনি
শূন্যতা থেকে আলোর ফাঁস ঝোলে, প্রথম রহস্য
অথবা সব রহস্যের শেষ, মাতার বঁটিতে সন্তানের মাথা।


এ সেই ‘অন্নপূর্ণা ও শুভকাল’। ১০-সংখ্যক কবিতা। কবিতাটিতে ‘ভয়’ দু'-ভাবে এসেছে। প্রথম পংক্তিতে ঝড়-বিষয়ে কিছু স্মৃতি— জমিয়ে রাখা। তারপরই এগিয়ে আসে বাংলা কবিতায় কয়েকটি নতুন তথ্য। আসে অবিরাম উৎপাদনকারী ‘ঝড়ের যন্ত্র’ ('মডার্ন টাইমস'?)! কিছু ভয় সেই যন্ত্র-নির্গত। উৎপাদিত ভয় তখন অনাথ। কেননা, এ-যন্ত্র অপূর্বকল্পিত। আমরা আরও জানতে পারি— ‘শব্দও একপ্রকার অন্ধকার’, যেখানে আমাদের দৃষ্টি চলে না। কান পেতে রাখতে হয় সদ্য পালক গজানো শব্দছানাটির জন্য। আর, ওই-যে গ্রহচন্দ্রতারা, নীহারিকা মণ্ডল— আলোর ফাঁস সেসব! শূন্যতা থেকে তারা ঝোলে। এসবেরই সঙ্গে বা নীচে আমরা রয়েছি। সেখানে অবিরাম সংঘটিত হয়ে চলেছে— বলি। আমাদের ‘মাতার বঁটিতে সন্তানের মাথা’!

ব্যাখ্যা করার বা সূত্র ধরিয়ে দেওয়ার বাজে উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে নয়, কবিতাটিকে— সেই সূত্রে কবিকে— অন্যভাবে দেখার চেষ্টামাত্র। প্রকৃতপক্ষে কবি এখানে একটা শব্দ। অন্ধকারনিঃসৃত অব্যয়। একটা অনিশ্চয়তা। এর বেশি কিছু নয়।

একরাম,
গদ্যটা শেষ পর্যন্ত পারলুম না। কবিতাটি সম্পূর্ণ হয়েছে, পাঠাচ্ছি। পছন্দ না হ’লে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করবেন। ভালো থাকবেন।

ইতি ২৪.১২.৮২
গৌতম বসু

এটিই প্রথম চিঠি। তারিখ ২৪-১২-৮২। ছোট্ট কাগজে লেখা সংক্ষিপ্ততম চিঠিটি উদ্ধার করি খামের ভেতর থেকে। এটি একমাত্র চিঠি, এনভেলাপে পাঠানো। ‘পুনর্বসু’ পত্রিকার লেখা-সংক্রান্ত। এরপর থেকে সব চিঠিই পোস্টকার্ডে। যেমন পরের চিঠি। তারিখ ২৮-০৪-৮৩।

দীর্ঘদিন ধ’রে আপনাকে চিঠি লেখার কথা ভেবেছি, ‘অন্য এক’ পাওয়ার পর বিশেষ ক’রে, কিন্তু আশ্চর্য, লিখতে বাধ্য হলুম বহু পুরোনো আপনার একটি গদ্য আবার হাতে আসার পর। বহুকাল আগে, বোধহয় ১৯৭৫ হবে, আপনি আত্মপ্রকাশে নিজের লেখা প্রসঙ্গে একটি এক পাতার গদ্য লিখেছিলেন— সেটা বেজায় ভালো লাগলো। কিন্তু এখন লিখতে-লিখতে মনে হচ্ছে এই চিঠিটা আসলে আপনার নতুন লেখা সম্পর্কে।…

তখন গৌতমরা থাকতেন বেলগাছিয়া ভিলার ফ্ল্যাটে। আমারও মনে নেই, আর নানা জনকে জিজ্ঞেস করেও হদিশ পাওয়া গেল না ‘অন্য এক’-নামে কোনও পত্রিকার। সমরেন্দ্র দাস-সম্পাদিত ‘আত্মপ্রকাশ’ ছিল সাতের দশকের প্রতিনিধি-স্থানীয় পত্রিকা।

প্রেসিডেন্সির সিঁড়ি। কথা হচ্ছিল আমারই প্রথম বই প্রকাশের বিপত্তিগুলো নিয়ে। তখন থাকি প্রেস থেকে আন্দাজ শ'দেড়েক কিমি দূরে। দেখাশোনা করা অসম্ভব। আরও অসম্ভব দরকারি অর্থের সংস্থান করা। সে-আলোচনায় আরও কেউ-কেউ ছিলেন নিশ্চয়ই। কিন্তু মনে আছে তিন জনের কথা। পার্থপ্রতিমের, গৌতমের আর আমার। কেননা, সেই সন্ধেতেই ঠিক হয়— প্রেসের কাজটি করবেন পার্থ। প্রকাশক হবেন গৌতম।

উচ্ছ্বাস ও অভিযোগ দূর করতে না পেরে, প্রত্যক্ষ দেখা না হওয়ার সূত্রে এই চিঠি। প্রথমেই অভিযোগ: একজন গেরিলার কথা, আণবিকতা, সামুদ্রিক ঘুঘু ভাল লাগলো না, এই ক্ষুদ্র তালিকার সঙ্গে 'উত্তরফাল্গুনী' যোগ করতে যাচ্ছিলুম (বইটি সঙ্গে নিয়েই লিখতে বসেছি), কিন্তু আপাতত তা করা গেল না। ভালো লাগল না ব্লার্ব; পুলিশ, দালাল— এই যে দারুণ মানুষগুলোকে আপনার কবিতায় রহস্যময়ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় তারা এই ব্লার্বের কারণে দারুণ আহত হয়েছেন মনে হয়। ‘অতিজীবিত’ আমাকে এতদূর টেনেছে যে এই দুঃখ ভোলার নয়।…

কলকাতা থেকে লেখা। চিঠির তারিখ ৩১-০৮-৮৩। বইটি বেরিয়েছিল— জুলাই ১৯৮৩। অর্থাৎ প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ‘প্রকাশকের’ এই চিঠি! তারপর আরও:

একটি বাঁশির কথা, বসন্তপূর্ণিমা, সন্ধ্যাচিত্র, নক্ষত্রলোকের কথা-র বিষয়ে কিছু বলার স্পর্ধা আমার নেই। এইমাত্র বুঝি, কবিতাগুলো লেখা হয়েছে; কী ভাবে, কেন, মস্তিষ্কের কোন্ রহস্যে— এসবের কোনো উত্তর নেই, শিহরিত হওয়ার কথাও মনে হচ্ছে না আর, বাতাসের মতো কবিতাগুলো আমার সঙ্গে থেকে গেলো। ‘বসন্তপূর্ণিমা’র মতো যদি কিছু লিখতে পারি, আপনাকে স্মরণ করবো।…

হা-হা শব্দে হাসি, অন্যের কষ্টে মুষড়ে পড়া, পকেটে একটু ভালো সিগারেট— এসব কখনও বাড়তে পারে, কখনও কমতে। কিন্তু গৌতম বসুর জন্মই-যে ছ-হাজার সাতশো ফুট উঁচুতে— দার্জিলিঙে! সেই পুরাতন কুয়াশার ভেতর, যে-কুয়াশায় সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রগুলো তখনও হারিয়ে যেতে অনেক দেরি। কিন্তু তাঁর কবিতা? উষ্ণদেশীয় সঙ্গত পেরিয়ে তারা পৌঁছতে চেয়েছে চিন্তার শেষাংশে— নীরব উষ্ণতায়। পৌঁছেছে কখনও-বা বিরান ভূমিতে।

এক-আধটা গল্প কি আর নেই, যাতে অন্তত খানিকটা হলেও জমে যেতে পারত? না, সত্যিই নেই। রসিকতায় ভরপুর। তবু গৌতম-বিষয়ে জমজমাট গল্প তেমন কিছু নেই। ছিল নীরবতা। আজ অবিশ্বাস্য মনে হলেও, কখনও দু'-এক মাইল হেঁটেছি দুজনে; সে-হাঁটা পুরু নীরবতারই দিকে। বসে থেকেছি বিখ্যাত নদীতীরে। অলস স্রোতে চোখ ভাসিয়ে। যে-স্রোতের ছলাৎছলতা ছিল না।

১৯৮৫ সাল। গৌতমরা তখন কান্দিতে। বদলির চাকরিসুত্রে। আমি তখন গ্রামে। একবার গেছি তাঁদের সেই সদ্য-পাতা ছিমছাম সংসারে। সে-যে কী আতিথেয়তা! শম্পার খুবই পরিশ্রম হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা এমনই নিষ্ঠুর-যে আড্ডায় গল্পে কবিতায় ছিলাম জঙ্গল-চিরে-নদী-বয়-ধীরে যেমন। একদিন গেলাম খড়গ্রামে, তাঁর অফিসে। গ্রামীণ বাসের ঝাঁকানির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গল্প করতে করতে। আরেক দিন, মানে সারা দিন, বহরমপুর। একটা সময় রিকশা ছেড়ে আমরা— স্কুল-পালানো দুই কিশোর যেন— এলোমেলো হাঁটতে থাকি। সেবারই সম্ভবত বিখ্যাত ঘটক-বাড়ি দেখিয়েছিলেন গৌতম। পাড়াটা কি গোরাবাজার? মনে নেই। হাঁটতে হাঁটতে কাজল-কালো গঙ্গা।

নদীর চাহনির আশায় স্থলের মানুষ বলে
তাকাও, তাকাও, অন্তত কোনও ইঙ্গিত…

৭-সংখ্যক কবিতার অংশ। ‘অন্নপূর্ণা ও শুভকাল’। ততদিনে বইটি জীর্ণ হয়ে আসছিল। কিন্তু কবিতাগুলো দিন দিন হয়ে উঠছিল অতিকায়।

আপনি সহসা নিষ্ক্রান্ত হওয়ার পর নির্মলের সঙ্গ পাওয়া গেলো। নির্মল এবার বিশেষ অসুস্থ ছিলেন মনে হয়, যে কারণে সোমবারের পর আটকে রাখার সাহস হ’লো না। আপনারা এখনো ধারে কাছে আছেন, নিজেকে এইরকম বোঝাবার চেষ্টা করি।

জনৈক সাহেবের রবীন্দ্র-অনুবাদে মহানগর উত্তাল, খবর পাই। দূর মফঃস্বলে তার কোনো ঢেউই পৌছোয়নি, তবু কলকাতা থেকে এক কপি ইংরেজি রবীন্দ্রনাথ আনিয়ে পড়ে ফেলেছি।
আপনার উট একেবারে ছেলেমানুষ! নির্মল যে পাথর দান করেছেন আমায়, তার সাহায্যেই সে এখন ব’সে থাকতে পারে। আমার অচল ঘড়িটার পাশে তার জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে!
এর মধ্যে হঠাৎ কয়েকদিনের জন্য শান্তিনিকেতন ঘুরে এলুম, সে এক অসামান্য অভিজ্ঞতা। বোলপুর থেকে শান্তিনিকেতন যাওয়ার রাস্তাটি এত ভালো লাগে, কি বলবো!...

কান্দি থেকে লেখা চিঠি। ১২-৯-৮৫। কিন্তু তার আগে— ১০-৯-৮৫— পৌঁছে গেছে নির্মল হালদারের চিঠি:

গতকাল কান্দী থেকে ফিরেছি। অভিরূপ কান্দীতে পৌঁছোয়নি।… এসেই চোখের অসুখ। বাঁ চোখ লাল। জল পড়ছে, ব্যথা। যাবতীয় ঠান্ডা আক্রমণ করেছে।…

গৌতম বসুর চিঠিতে উল্লিখিত জনৈক সাহেব— উইলিয়ম রাদিচে। সে-বছরই পেঙ্গুইন ইন্ডিয়া থেকে প্রকাশ পায় রাদিচে-কৃত অনুবাদকর্ম ‘রবীন্দ্রনাথ টেগোর: সিলেক্টেড পোয়েমস’। আর, টেবিলশোভন পুচকে উটটি ছিল সম্ভবত পোর্সিলিনের। সেটির পা ভেঙে যায়!

নির্মল হালদারের চিঠির অভিরূপ— ‘আমপাতার মুকুট’-এর কবি ও অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার।

সেবারই কান্দিতে একটা বিভ্রান্তিতে পড়েছিলেন। আমি যাওয়ার কয়েকদিন আগের ঘটনা। সস্ত্রীক কলকাতা ফিরবেন। ভোরে বাস। স্ট্যান্ডে পৌঁছনোর জন্য রিকশা বলা আছে। চেনা। প্রস্তুত হয়ে, দরজা বন্ধ করে, রিকশার জন্যে দাঁড়িয়ে। রিকশা আর এল না। ব্যাপার কী? এরকম তো হওয়ার কথা না! পরে রিকশাওলাই উলটে বলে— তাকে তো কাল ভোরে আসতে বলা হয়েছে! আজ তো নয়! এই আজ এবং কালের জটিলতা রিকশাওয়ালা ছেলেটি গৌতমকে অনেক চেষ্টাতেও বোঝাতে পারেনি।

ইসলামি চান্দ্রদিন শুরু হয় সন্ধেবেলা। যেহেতু বাঙালি মুসলমান সারাদিন বেঁচে থাকে সৌরদিনে, সূর্যের তাপও লেগে থাকে তার মস্তিষ্কের কোষে কোষে। কিন্তু, চাঁদ উঠুক না উঠুক, শেষ বিকেল থেকে শুরু হয়ে যায় তার চান্দ্রদিন! ফলে পরদিনের ভোর মানে, তার হিসেবে পরশুর ভোর। সবটা শুনে গৌতম হাসতে হাসতে ঝুঁকে পড়েছিলেন— ‘ওরে বাবা, এতটা জানব কী করে!’ তারপরই ফের স্বমূর্তি— ‘কিন্তু একরাম, এটা জানা তো উচিত ছিল!’

এই হচ্ছেন গৌতম বসু। বা, এরকমও নন।

অনেক পরে, আমি তখন ‘আজকাল’-এ। সিদ্ধান্ত হলো— রবিবারের পাতায় কবিতা ছাপা হবে। তখন আমরা থাকি বেশ কাছাকাছিই। অন্য অনেকের সঙ্গে গৌতমকেও বলা হলো কবিতার জন্য। বেশ কয়েকবার ফোনের পর এল কবিতা। সঙ্গে একটা চিরকুট:

এত বয়সেও, বড় কাগজে লেখা পাঠানোর কথা উঠলেই ভয়ের এক বিচিত্র অনুভূতি কাজ করে।
তবু আপনি বলেছেন ব’লে ভেবে নিচ্ছি লেখাটা বীরভূমের কোনও পুঁচকে কাগজে পাঠালাম।

এইটুকুই। এটাই শেষ চিঠি। তারিখ ১৭-৬-১৩। দেখতে-না-দেখতে সেও তো ন'-বছর কেটে গেল! আর তাঁর মৃত্যু? ক'মাস হলো? ছোটোবেলা থেকে শুনে আসছি— সন্ধের মুখে আকাশে তাকাতে নেই। হঠাৎ যদি একটিই তারা দেখা যায়! একাকী তারা দেখা বা গোনা নাকি ঘোর অমঙ্গলের। আর সেই অমঙ্গলটুকু ধেয়ে যায় মায়ের দিকে। কবিতামাতৃকার এমন অমঙ্গল কে চায়?

More Articles