মোদির প্রিয় ম: মুসলিম, মাদ্রাসা, মাংস... মণিপুর কই? প্রশ্ন মহুয়ার

Mahua Moitra: নির্বাচনে মোদি বাছাই করা কিছু শব্দ ব্যবহার করেন যা নির্দিষ্ট করে কিছু সম্প্রদায়কেই উদ্দেশ্য করে বলা।

মোদি লোকসভা নির্বাচনের প্রচার পর্যায়ে যে ঘৃণাভাষণ দিয়েছিলেন, তা নজিরবিহীন ছিল বিশেষ করে দু'টি ক্ষেত্রে। এক, দেশের একজন প্রধানমন্ত্রী নিজে দেশেরই এক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন এমন উদাহরণ খুব একটা নেই। দুই, লোকসভা নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি, অভিযোগ, প্রকল্পের আশ্বাস নিয়ে কথা হয়। এই প্রথম সরাসরি এক ধর্মকে অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে, এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ফলও পেয়েছেন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। মোদির সেই ঘৃণাভাষণের কথা সংসদে আবারও মনে করিয়ে দিলেন মহুয়া মৈত্র। বহিষ্কৃত হয়ে জনতার ভোটে জিতে আবারও সংসদে সাংসদের ভূমিকায় ফিরেছেন তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র।

সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উল্লেখ করে, মহুয়া মৈত্র বলেছেন মোদি সরকার সমালোচনামূলক বিষয়গুলি সযত্নে এড়িয়ে গেছে। মহুয়া সংসদে বলছেন, "রাষ্ট্রপতির ভাষণে ছয়টি থিম রয়েছে। উত্তর-পূর্বের বাজেট চার গুণ বেড়েছে, তবুও বক্তৃতায় 'মণিপুর' শব্দটি কোথাও নেই।"

নির্বাচনে মোদি বাছাই করা কিছু শব্দ ব্যবহার করেন যা নির্দিষ্ট করে কিছু সম্প্রদায়কেই উদ্দেশ্য করে বলা। মহুয়া বলছেন, "প্রধানমন্ত্রী 'মুসলিম', 'মাদ্রাসা', 'মাটন', 'মছলি' এবং 'মুজরা' শব্দ উল্লেখ করেছেন কিন্তু নির্বাচনী প্রচারের সময় একবারও 'মণিপুর' শব্দটি বলেননি। 'লুক ইস্ট' বা অ্যাক্ট 'ইস্ট'-এর দরকার নেই। আমরা চাই আপনারা পূর্বে কাজ করুন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বকে ভালোবাসুন।" মণিপুরের মানুষদের সঙ্গে যে তিনি আছেন, তা আবারও জোর গলায় বলেছেন মহুয়া মৈত্র।

আরও পড়ুন- বুলেট টেনের দেখনদারি, প্রাণ বাঁচানোর কবচে কম্প্রোমাইজ! যে সত্য ফাঁস করলেন মহুয়া

মণিপুরের পাশাপাশি কাশ্মীর ইস্যুতেও কথা বলেন মহুয়া। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় বলা হয়, কয়েক দশক ধরে বন্ধ থাকার পরে, কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপদ পরিবেশে ভোট হয়েছে৷ মহুয়া প্রশ্ন তোলেন, "যদি ৩৭০ ধারা বাতিল করা এতই ভালো কাজ ছিল তবে কেন শাসক দল বিজেপি অনন্তনাগ, বারামুল্লা, শ্রীনগর এই তিনটি উপত্যকা আসনে প্রার্থী দেওয়ারও সাহস করেনি?”

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে মহুয়া মৈত্র বলেন, "ক্ষমতাসীন দল আদর্শ আচরণবিধির সবচেয়ে গুরুতর লঙ্ঘন করলেও কমিশনাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ঘৃণাপূর্ণ বক্তৃতা দিয়ে এই দেশকে লজ্জিত করেছে। এই নির্বাচনী প্রচারের সময় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, সেসব দেখেও ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে ইসি যেভাবে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল তা ইতিহাসে লেখা থাকবে।"

এর আগে কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গেও বলেছিলেন, একজন প্রধানমন্ত্রীকে সমাজে এত বিভাজন সৃষ্টি করতে আগে দেখা যায়নি। তিনি বলেছিলেন, মোদি শুধুমাত্র 'ম' শব্দটি পছন্দ করেন — মুসলিম, মাটন, মঙ্গলসূত্র এবং মছলি।”

More Articles