বুলেট টেনের দেখনদারি, প্রাণ বাঁচানোর কবচে কম্প্রোমাইজ! যে সত্য ফাঁস করলেন মহুয়া

Mahua Moitra on Bullet Train: মহুয়া বলছেন, মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেনের জন্য ১.০৮ লক্ষ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে কেন্দ্র।

২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাঁকে। টাকার বিনিময়ে সংসদে মোদির বিরুদ্ধে, আম্বানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। বহিষ্কৃত হওয়ার পর সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, জনতার ভোটে নির্বাচিত হয়ে ফের সংসদে ফিরবেন। ফিরলেনও। এবারের লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর আসনে জিতে ফের সাংসদ হয়েছেন মহুয়া মৈত্র। চেনা ভঙ্গিতে, চেনা মেজাজে ফিরেছেন তিনি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সেই একই আক্রমণাত্মক মেজাজ ধরে রেখেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে ঘটা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে রেলের 'কবচ' নিরাপত্তার ঢক্কানিনাদ নিয়ে সওয়াল করেছেন মহুয়া।

একের পর এক রেল দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বুলেট ট্রেনের সমালোচনাও করেছেন মহুয়া। কেন্দ্র জানিয়েছে মুম্বই-আমেদাবাদ বুলেট ট্রেন চালু হবে। এদিকে সাধারণ যাত্রী ট্রেনগুলির নিরাপত্তা তথৈবচ। ২০২৩ সালের করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর সেই জুন মাসেই ফের পশ্চিমবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সোমবার সংসদের যৌথ অধিবেশনে এই একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন মহুয়া।

আরও পড়ুন- ‘কুরুসভায় সেদিন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ হয়েছিল!’ মোদি-শাহকে মনে করিয়ে দিলেন মহুয়া

মহুয়া বলছেন, “মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেনের জন্য ১.০৮ লক্ষ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে কেন্দ্র। প্রতি কিলোমিটারের জন্য খরচ পড়বে ২০০ কোটি টাকা। সেখানে ট্রেন দুর্ঘটনা রুখতে কবচ সিস্টেম চালু করতে প্রতি কিলোমিটারে ৫০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। আমাদের দেশে সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ২৬ হাজার কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। ফলে দেশজুড়ে কবচ সিস্টেম চালু করতে মোট খরচ পড়বে ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সেখানে শুধুমাত্র একটা বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১.০৮ লক্ষ কোটি টাকা।”

এবারের দুর্ঘটনাতেও দেখা গেছে কবচ সিস্টেমের কথা ঘটা করে বলা হলেও তা প্রয়োগ হয়নি, প্রয়োজনীয় টেন্ডারও ডাকা হয়নি। ২০২৩ সালে যখন ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে দু'টি ট্রেনের সংঘর্ষ ঘটে , সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২৯০ জনেরও বেশি যাত্রীর মৃত্যু হয়। কোনও কবচ সিস্টেম ছিল না সেখানেও। এই ঘটনার বীভৎসতা দেখার ১ বছর কেটে গেছে। জলপাইগুড়িতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষে ১০ জন মারা গেলেন। এই ১ বছরেও কবচ সিস্টেমের বন্দোবস্ত করতে পারল না রেল। মহুয়া বলছেন, “একটি সমীক্ষা বলছে, যেভাবে টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে, তাতে ৫০ বছর লাগবে দেশের সমস্ত রেল ট্র্যাক কবচ সিস্টেমের আওতায় আনতে।”

আরও পড়ুন- কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ‘সুরক্ষা কবচ’ কোথায়? এত বড় দুর্ঘটনার দায় কার?

রেল জানিয়েছিল, দুর্ঘটনা এড়াতে কবচ ব্যবস্থা চালু হবে। যাতে ট্রেন সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতে পারবে। ট্রেনের এই স্বয়ংক্রিয় সুরক্ষা ব্যবস্থায় একই লাইনে দু'টি ট্রেন চলে এলে আগে থেকেই সতর্ক হয়ে যাবেন চালক। অথচ মুখে বলা হলেও কাজের কাজ হয়নি। মহুয়া মৈত্র সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব ফিরে পেয়েই বুলেট বনাম কবচের প্রশ্ন তুলে দিয়ে রেলের যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিমানবন্দরগুলির দুর্দশা নিয়েও। নবনির্মিত বিমানবন্দরগুলির ছাদ ভেঙে যাওয়া, দিল্লি বিমানবন্দরে এক বৃষ্টিতে ছাদ ভেঙে মৃত্যু, প্রগতি ময়দানের টানেল ভেসে যাওয়ার মতো দিকগুলি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন মহুয়া।

More Articles