বুকে অসহ্য যন্ত্রণা, অজান্তেই বাড়ছে খারাপ কোলেস্টেরল, যে সব উপায়ে হতে পারে প্রতিকার

Reduce Bad Cholesterol : রক্তে বিভিন্ন ধরনের কোলেস্টেরল থাকলেও, এলডিএল বা লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন হচ্ছে সবচেয়ে ক্ষতিকারক

কথায় বলে, ‘সাবধানের মান নেই’, আর শরীর নিয়ে ঝুঁকি? নৈব নৈব চ! জীবন যখন একটাই তখন লুটেপুটে নিতে হবে বৈকি, তবে আপনার ফুর্তিই যদি ডেকে আনে অজানা বিপদের আশঙ্কা, তাহলে খুব বিপদ। সুতরাং দৈনন্দিন জীবনে কী করছে, কী খাচ্ছেন এসব নিয়েই মেনে চলুন সাধারণ কিছু নিয়ম। এতে আপনার শরীর চাঙ্গা থাকবে, আর আপনিও থাকতে পারবেন খোশ মেজাজে।

শরীর থাকলেই রোগ থাকবে, আজকাল কোলেস্টেরল জনিত সমস্যা ঘরে ঘরে। নিমন্ত্রণ বাড়ি অথবা নিছক কোনও অনুষ্ঠানে ভালোবেসে কিছু খেয়ে ফেললেই কপালে চিন্তার ভাঁজ। এই বুঝি বেড়ে গেল কোলেস্টেরল মাত্রা! আর তারপরই চাগাড় দেবে হাঁটু-কোমরে অসহ্য ব্যাথা অথবা গোড়ালি গলার মতো সমস্যা। কোলেস্টেরল হল রক্তে পাওয়া একটি মোম জাতীয় পদার্থ। এটি স্বাভাবিক মাত্রার বাইরে চলে গেলেই তৈরি করতে পারে, স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকি। যার জেরে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক পর্যন্তও হতে পারে।

রক্তে বিভিন্ন ধরনের কোলেস্টেরল থাকলেও, এলডিএল বা লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন হচ্ছে সবচেয়ে ক্ষতিকারক, এটিই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। বর্তমানে চিকিৎসকেরা বিভিন্ন ওষুধের পরামর্শ দেন, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। তবে সম্প্রতি পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে অন্য একটি দিক তুলে ধরেছেন।তিনি বলেছেন, কীভাবে স্বাভাবিক জীবনধারায় নির্দিষ্ট কিছু পরিবর্তনগুলি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে।

আরও পড়ুন - ভয়াবহ সঙ্কটে বাংলার ৮৬% পুরুষ! কোলে ল্যাপটপ রেখে ডেকে আনছেন মারাত্মক ঝুঁকি

১. স্বাস্থ্যকর খাবার খান

পুষ্টিবিদ তাঁর পোস্টে প্রথমেই স্যাচুরেটেড ফ্যাটের ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দেন। অর্থাৎ গরু বা খাসির মাংস, পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য শ্রবণের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এছাড়াও রোজকার খাদ্য তালিকা থেকে ট্রান্স ফ্যাট বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেন। ট্রান্স ফ্যাট হল আংশিকভাবে হাইড্রোজেনেটেড উদ্ভিজ্জ তেল। এগুলি মূলত দোকান থেকে কেনা মার্জারিন অথবা কুকি জাতীয় খাবারে পাওয়া জসিম এগুলি বর্জনের কথা বলেন তিনি। পরিবর্তে ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার কথা বলেন তিনি। খাবারে দ্রবণীয় ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন। উল্লেখ্য, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় ঘরে তৈরি গরুর ঘি, স্যামন, আখরোট এবং ফ্ল্যাক্সসিডের মতো খাবারে।

২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের কোনও বিকল্প নেই। পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রাও উল্লেখ করেন সেই দিকটি। দেহে বাড়তি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা ব্যায়াম এবং আধ ঘণ্টা সমতলে হাঁটার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এতে বাড়তি ফ্যাট ঝড় যায় এবং শরীর দ্রুত সুস্থতা ফিরে পায়। শুধু তাই নয়, কারও যদি শরীরে বাড়তি শর্করা থাকে, তবে সেই মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শারীরিক ব্যায়াম।

৩. ধূমপান ত্যাগ করুন

শরীরে এইচডিএল হাই-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় ধূমপান। যার জেরে বেড়ে যায় এলডিএল কোলেস্টেরল বা লো-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল। এতে শরীরে হৃদরোগ এবং ফুসফুস জনিত সমস্যা বাড়ে। তাই ধূমপায়ীরা যদি রস টানেন নিজেদের অভ্যাসে তবে ঠিক বিপরীত প্রতিক্রিয়া ঘটে, ফলে ধমনীতে রক্ত চলাচল বাড়ে। সুস্থ থাকে শরীর।

আরও পড়ুন - উচ্চ রক্তচাপ মানেই মৃত্যুর হাতছানি, ভারতে হু হু করে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি

৪. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা আমাদের শরীরকে খারাপ কোলেস্টেরলের দিকে ঠেলে দেয়। অতএব, ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত কম ওজন কমানো কোলেস্টেরলের সংখ্যা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন দ্রুত ওজন কমাতে গিয়ে এমন কিছু করবেন না যাতে শরীরে অন্য বিপদ আসন্ন হয়ে পড়ে। তাই এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতোই পদক্ষেপ নিন।

৫. অ্যালকোহল পানে রাশ টানুন

বিশেষজ্ঞদের মতে, অত্যধিক অ্যালকোহল পান গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা ডেকে আনতে পারে। তাই শরীরে খারাপ কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রয়োজন অ্যালকোহল পানে রাশ টানা। পুষ্টিবিদ ওই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে পরামর্শ দেন, সারাদিনে যেকোনও একটি পুষ্টিকর পানীয় যে কোনও বয়সী নারী পুরুষের জন্য জরুরি। তবে অতিরিক্ত অ্যালকোহল নৈব নৈব চ!

More Articles