মঙ্গল গ্রহে এখনও লুকিয়ে রয়েছে জলের অস্তিত্ব! যে আবিষ্কার চমকে দিল বিজ্ঞানীদেরও

Mars Having Water Research : বিভিন্ন প্রাণী চলাফেরা করত? আরও বড় প্রশ্ন, আমাদের গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের মতো মঙ্গলেও কি নদী বইত? জল ছিল?

পৃথিবীর কাছের গ্রহ সে। ‘যমজ ভাই’ বললেও অত্যুক্তি হয় না। আর তাকে নিয়েই বহুদিন ধরে মানুষের নজরদারি চলছে। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে সৌরজগতের ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলকে নিয়ে। রুক্ষ শুষ্ক মাটি, উত্তাপের মধ্যেই চলছে তন্নতন্ন করে খোঁজার কাজ। গবেষকদের একটাই লক্ষ্য, জীবন কি এখনও টিকে আছে মঙ্গলে? যদি নাও থাকে, কোনও একসময় কি ছিল? এখানেও পৃথিবীর মতো বিভিন্ন প্রাণী চলাফেরা করত? আরও বড় প্রশ্ন, আমাদের গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রের মতো মঙ্গলেও কি নদী বইত? জল ছিল?

এতসব প্রশ্নের জন্য বহু বছর ধরেই লড়ে যাচ্ছে বিজ্ঞানীরা। মঙ্গলে অভিযানও হয়েছে, সেখানে মঙ্গলযান এখনও ঘুরে ঘুরে নানা তথ্য দিচ্ছে। মাত্র কয়েকমাস আগেই সেই কিউরিওসিটি মার্স রোভার জানান দিয়েছে, একটা না একটা সময় মঙ্গলে যে জল ছিল, তার প্রমাণ একটু একটু করে পাওয়া যাচ্ছে। বিশাল বড় একটি গহ্বর সেটা নাকি একসময় লেক ছিল। তার নীচেই সার বেঁধে রয়েছে স্ফটিক পাথর, যা জল না থাকলে হওয়া সম্ভব নয়। এরকম নানাবিধ তথ্য বিগত কয়েক বছর ধরে পাচ্ছেন গবেষকরা। তবে এবার একেবারে চমকে দেওয়ার মতো খবর দিলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, আগে তো ছিলই; মঙ্গল গ্রহে নাকি এখনও জল রয়েছে! আর সেটাও রয়েছে গোপন স্থানে!

আরও পড়ুন : মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝে রহস্যময় ‘সুপার-আর্থ’! পৃথিবীকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে এই গ্রহই?

৫৪ তম লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটরি সায়েন্স কনফারেন্সে সম্প্রতি এই চমকপ্রদ তথ্য পেশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। ঠিক কী বলা হয়েছে সেখানে? গবেষকদের দাবি, পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় গোটা মঙ্গল গ্রহটাই তন্নতন্ন করে খোঁজা হচ্ছে। বিশেষ করে মেরু অঞ্চলদুটি। কিন্তু এবার এই ‘আবিষ্কার’টি হল মঙ্গল গ্রহের নিরক্ষরেখার কাছের একটি অঞ্চলে। এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ডঃ পাস্কাল লি। তিনি বলেছেন, নিরক্ষরেখার কাছেই একটি হিমবাহের অস্তিত্বের জোরালো সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। যেখান থেকে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো গভীরে কোথাও একটু হলেও জলের অস্তিত্ব আছে।

কীভাবে খোঁজ পাওয়া গেল এই হিমবাহের? বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই হিমবাহের মতো বস্তুটি ভালো করে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আপাতত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা থেকে জানা যাচ্ছে যে, এটি প্রায় ৬ কিলোমিটার লম্বা এবং ৪ কিলোমিটার চওড়া। শুধু তাই নয়, গবেষণা বলছে এর ওপরে বেশ কিছুটা হালকা রঙের সালফেট লবণের আস্তরণ রয়েছে।

আরও পড়ুন : মঙ্গলের বুকে ‘অজানা’ উড়ন্ত বস্তুটি আসলে কী! সাড়া দিল ভিনগ্রহের বাসিন্দারা?

পাস্কাল লি-র বক্তব্য, এটা হতেই পারে যে, হিমবাহটির ওপরের অংশে এই লবনের আস্তরণ রয়েছে। তলায় হিমবাহের বরফ রয়েছে। কারণ, ইতিমধ্যেই সেখানে হিমবাহের বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই বিজ্ঞানীরা আশা রাখছেন, হয়তো একটু খুঁজলেই বরফ কিংবা জলও মিলতে পারে। এখনও সেটা সম্ভাবনার পর্যায়তেই রয়েছে। সঠিক করে এখনও কিছু বলতে চাইছেন না গবেষকদের দলটি। কিন্তু এই আবিষ্কারই ভবিষ্যতের গবেষণায় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

More Articles