প্রেমিকা নেই? গরুকে জড়িয়ে ধরেই কাটবে ভ্যালেন্টাইন্স ডে! আক্ষেপ মোচনের যে পথ দেখাল কেন্দ্র

Cow hug day : সিঙ্গেল থেকে মিঙ্গেল হতে চাইলে তাই মন প্রাণ ঢেলে ভালবাসুন গরুকে। গরুই হোক আপনার নতুন ‘ভ্যালেনটাইন’

আবার একটা ভ্যালেন্টাইন্স ডে এসে গেল, অথচ এবারেও ছিঁড়ল না ভাগ্যের শিকে! এদিকে বয়সও বুড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমশ, একটাও প্রেমিক অথবা প্রেমিকা জুটছে না? আর চিন্তা নেই, এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি আর একা নয়, পাশে থাকছে অন্যজনও। সিঙ্গেল থেকে মিঙ্গেল হতে চাইলে তাই মন প্রাণ ঢেলে ভালবাসুন গরুকে। গরুই হোক আপনার নতুন ‘ভ্যালেনটাইন’।

বিষয়টা শুনতে খানিক অবাক লাগছে ঠিকই তবে ঘটনাটা সত্যিই। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র পাশাপাশি এবার গরুকে আলিঙ্গন করার দিবস হিসেবেও পালন করার কথা তুললেন খোদ কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার হরিয়ানার ভারতের প্রাণী কল্যাণ দফতর বা অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার তরফ থেকে ঠিক এরকম একটি আর্জি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রের মৎস্য, প্রাণী ও ডেয়ারি মন্ত্রকের অধীনে থাকা এই বিশেষ দফতরটির আবেদনে জানানো হয়, আসন্ন ১৪ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইনস ডে-কে গরু আলিঙ্গন দিবস বা কাউ হাগ ডে হিসেবেও পালিত হোক।

আরও পড়ুন - Cow politics: গরু নিয়ে রাজনীতি, হত্যার পরিকল্পনা বারবার, একদিনে হয়নি…

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘ভারতীয় সংস্কৃতির মেরুদন্ড হল গরু। আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে, জীবনধারণে ও গ্ৰামীণ অর্থনীতির বিকাশে গরুর ভূমিকা অপরিসীম। কামধেনু যেমন একদিকে মানুষকে ধনসম্পদে ধনী করে তোলে, গোমাতার প্রকৃতি হল আমাদের লালনপালন করা।’ বিজ্ঞপ্তির দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে টানা হয় পশ্চিমী সংস্কৃতির আগ্ৰাসনের প্রসঙ্গ। বৈদিক সভ্যতার অবলুপ্তির কথাও তোলেন সরকার। আধুনিকতায় পাল্লা দিয়ে বর্তমান সময় পশ্চিমী সভ্যতার চাকচিক্য দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে পড়ায়, ভুলতে বসেছে নিজেদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে। কার্যত এইসব প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই গরুর প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা দিকটিতে জোর দিতে চেয়েছেন তাঁরা। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে, ‘গরুকে জড়িয়ে ধরলে শুধু ব্যক্তি নয়, গোটা সমাজই সুখী হবে। সমৃদ্ধ হবে আবেগ।’

সম্প্রতি এই বিষয়ক বিজ্ঞপ্তিটি টুইটারে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই নজর কেড়েছে সর্বত্র। আলোচনা পর্যালোচনার জেরে উঠে এসেছে নানান অভিমত। কমেন্টের বন্যা ধরা পড়েছে ইতিমধ্যেই। তর্ক, বিতর্ক ও টিপ্পনির ঝড় যে আরও চলবে, তা বলাই বাহুল্য! গরুকে নিয়ে মোদি সরকারের ‘বাড়াবাড়ি’ বলে তোপ দাগতেও ছাড়েননি কেউ কেউ। আরেকজন ব্যক্তি তো আবার ভ্যালেনটাইনস ডে-কেই কিছুটা রসিকতা করে লেখেন, ‘ডাইন অ্যান্ড ওয়াইন উইথ বোভাইন অন কাউলেনটাইন ডে’।

হল্যান্ডের গ্রামীণ এলাকায় প্রথম চালু হয় এই কাউ হাগ ব্যাপারটি। তারপর ক্রমেই সেটি সমগ্র হল্যান্ডের সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে। ইদানীং রটারড্যাম, স্যুইৎজারল্যান্ড এবং আমেরিকার ফার্মগুলি কাউ হাগিং সেশন প্রমোটও করছে। গবেষকদের একাংশের মতে, এই বিষয়টি নাকি মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি দূর করতেও সহায়তা করে। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো হয়নি। সাধারণ মানুষের কোর্টেই বল ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। সার্বিকভাবে গৃহীত হচ্ছে কিনা সেটা সময়ই বলবে।

More Articles