জলকামান, লাঠিচার্জ! নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার! বুধে বনধের ডাক বিজেপির

Nabanna Abhijan: নবান্ন অভিযান 'শান্তিপূর্ণ' হবে জানিয়েছিলেন শুভঙ্কররা। অথচ হাওড়া ময়দানে ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।

অশান্তি হবে আশঙ্কা ছিলই। পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ-এর ডাকে নবান্ন অভিযান ঘিরে উত্তাল হলো পরিস্থিতি, আহত হলেন পুলিশকর্মীরা! এই নবান্ন অভিযানে সমর্থন জুগিয়েছিল বিজেপি। এই অভিযানের ডাক দেওয়া নেতৃত্ব শুভঙ্কর হালদার নিজে একজন আরএসএ সেবক। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের মিছিল এগোতেই হেস্টিংসের কাছে জলকামান চলে ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে। কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের (পিটিএস) কাছেও জলকামান ছোড়া হয়। ধুন্ধুমার হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। জাতীয় পতাকা হাতে নবান্ন অভিযানে নামেন আন্দোলনকারীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি ওঠে মিছিলে।

নবান্ন অভিযানে এসে গ্রেফতার হয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা প্রদীপ ঘোড়ুই। তিনি অবশ্য ছাত্র নন। ছাত্রসমাজের ডাক বললেও, এই মিছিলে যে 'ছাত্রদের' দেখা গেছে তাদের বয়স ছাত্রসীমার ঢের উপরে। নবান্ন অভিযান 'শান্তিপূর্ণ' হবে জানিয়েছিলেন শুভঙ্কররা। অথচ হাওড়া ময়দানে ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ছেন বলে অভিযোগ। আর ইটের ঘায়ে আহত হন পুলিশ কর্মীরা। নবান্ন অভিযানে অংশ নেওয়া 'ছাত্র'-দের ছোড়া বাঁশের টুকরো, আধলা ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় চণ্ডীতলা থানার পুলিশ আধিকারিকের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ, ফাটানো হচ্ছে কাঁদানে গ্যাসের শেল। মহাত্মা গান্ধী রোডেও ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান ছোড়ে।

হাওড়ার ফোরশোর রোডেও তুমুল উত্তেজনা দেখা যায়। সাঁতরাগাছিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হলে এক র‌্যাফকর্মীর মাথা ফেটে যায়। সাঁতরাগাছিতে অশান্তি নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। হাওড়া ব্রিজে আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড টপকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান ছোড়ে। প্রিন্সেপ ঘাটেও বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। নবান্নের দোরগোড়ায় পৌঁছলেও ভেতরে পৌঁছতে পারেনি বিক্ষোভকারীরা। শরৎ চ্যাটার্জি রোডে ব্যারিকেড ছিল পুলিশের। সেখানেই আটকে যায় মিছিল। পুলিশ সরে যেতে বললেও বিক্ষোভকারীরা না সরলে শেষপর্যন্ত পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। বাবুঘাটে পুলিশের দু’টি মোটরবাইক জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

নবান্ন অভিযান নিয়ে প্রথম থেকে সমর্থন ছিল বিজেপির। পরিস্থিতি অশান্ত হতেই সরব হয়ে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার অশান্তি শুরু হতেই "রাজ্য স্তব্ধ" করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তারপরেই বুধবার ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকে বিজেপি। বনধ ঘোষণার সময় বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বলব যে, মানুষের বাড়ি যেতে। আর বলতে বলব যে আপনার বাড়িতেও দিদি-বোন আছেন।"

এই বনধের প্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলছেন, "পুলিশ এখনও পর্যন্ত সংযমের পরিচয় দিয়েছে। সমস্ত প্ররোচনা সত্ত্বেও পুলিশ সংযত থেকেছে। পুলিশ গায়ে রক্ত মেখেছে। কিন্তু গুলি চালায়নি। পুলিশকে ইট-পাথর ছোড়া হলো। অরাজকতা তৈরি করার চেষ্টা করা হলো। তার উপরে বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে। বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে। এখন জাস্টিস ভুলে গিয়েছে। এখন চেয়ার চাই।"

More Articles