নিপার প্রকোপ বাড়ছে হুহু করে, কোথায় দাঁড়িয়ে বামরাজ্য কেরল

Kerala Nipah Virus: ফের সংক্রমণ বাড়ল কেরালায়, কোঝিকোড়ে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

M

বেশ কিছুদিন ধরেই কেরলে নিপা ভাইরাসে সংক্রমণের হার বাড়ছে। এবার ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ করা হল কোঝিকোড়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শিক্ষাপ্রক্রিয়া ব্যাহত হবে না, অনলাইনে চলবে পঠনপাঠনের কাজ।

রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে সংক্রমিতদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির তালিকা। সংবাদমাধ্যম ANI- হাজার জনের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। উদ্বেগের কথা এই যে, সেই তালিকার ৩৭৫ জন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্মী। তারও মধ্যে অত্যন্ত বিপজ্জনক মাত্রায় রয়েছেন ১২২ জন।

কোঝিকোড় ছাড়াও অন্যান্য জেলার ২৯ জন সংক্রমিতদের সংস্পর্শে এসেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২২ জন মালাপ্পুরম জেলার, ৩ জন করে আছেন কন্নুর এবং ত্রিশুরে। একজন ব্যক্তি বাস করেন ওয়ানাড়ে।

কোথা থেকে এলো নিপা:
এই নিপা ভাইরাসের আক্রমণ প্রথম দেখা গেছিল ১৯৯৯ সালে মালেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের শূকর প্রতিপালনকারীদের মধ্যে। সেখান থেকেই এই ভাইরাসের ভয়াবহতা টের পাওয়া গেছিল। এরপরে বিভিন্ন সময়ে ভারতেও এই ভাইরাসের আক্রমণ দেখা যায়। বাদ যায়নি বাংলাদেশও। পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালায় বেশ কয়েকবার নিপা ভাইরাসের আক্রমণ দেখা গেছে।

সরকারের উদ্যোগ:
১. ঝুঁকিপূর্ণ নিপা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে।
২. কোরিকোড জেলার অন্তর্গত ৯ টি পঞ্চায়েতের মোট ৫৮ টি ওয়ার্ড কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে দোকানপাট খোলা রাখার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
৩. অনুষ্ঠান, সমাবেশে জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৪. জাতীয় সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বাস এবং অন্যান্য গণপরিবহন থামবে না কন্টেনমেন্ট জোনে।

পার্শ্ববর্তী রাজ্যে জারি সতর্কতা :

পার্শ্ববর্তী রাজ্য তামিলনাড়ু কেরালা থেকে আগত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে। কেরালার এই ঘটনার ফলে সতর্ক হয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য কর্ণাটকও। কেরালা থেকে আসা দ্রব্য, ফলমূল সবই নজরের মধ্যে আছে কর্ণাটক পুলিশের। রাজ্যের সীমান্তে জারি হয়েছে সতর্কতা। WHO এবং ICMR এর মত অনুযায়ী গোটা কেরালা রাজ্যই বিপদসীমায় অবস্থান করছে।


মোট কতজন আক্রান্ত কেরালায়:
এখনও পর্যন্ত ৬ জন ব্যক্তি নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত আছেন কেরালায়। ২১ জন ব্যক্তিকে মেডিকেল কলেজে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। সরকারের তরফে ১৯ টি দল রাজ্যজুড়ে আক্রান্তের তালিকার হিসেব রাখছে।

নিপা সংক্রমণের লক্ষণ:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO- নিপা সংক্রমণের নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ চিহ্নিত করেছে।
প্রাথমিক লক্ষণ:
১. জ্বর
২.মাথাব্যথা
৩. পেশিতে ব্যথা
৪. বমি
৫. গলা ব্যথা

জটিলতর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে-
১. শ্বাসকষ্ট বা প্রশ্বাসজনিত সমস্যা
২. এনসেফালাইটিস
৩. কাঁপুনি
৪. কোমা
-সংক্রমণের ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই যেকোনও লক্ষণ ধরা পড়তে পারে দেহে।
সংক্রমণ থেকে যেতে পারে ১৪ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত। এনসেফালাইটিসে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই যদিও সুস্থ হয়ে যান, তবু ২০% রোগীর মধ্যে সারাজীবনের মতো একাধিক স্নায়বিক রোগের প্রবণতা থেকে যায়।

নিপা ভাইরাসের চিকিৎসা:
এখনও কোনও ওষুধই আবিষ্কার হয়নি নিপা ভাইরাস সংক্রমণের। উদ্বেগের এই তথ্যের পাশাপাশি আশার আলো এটুকুই যে বর্তমানে এই রোগের ওষুধ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

More Articles