'আমার কাছে এটাই উৎসব': জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে যা বললেন তিলোত্তমার মা
RG Kar Junior Doctor Protest: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের একটি মেল পাঠান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। ওই মেলে প্রতিবাদরত চিকিৎসকদের নবান্নে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠানো হয়।
মুখ্যমন্ত্রী নিদান দিয়েছেন, "অনেক হলো এবার উৎসবে ফিরুন"। ঠিক তার পরদিনই আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্যভবন অভিযানের ডাক দেন। পাঁচ দফা দাবি রয়েছে তাঁদের। ১) আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করা, অপরাধের উদ্দেশ্য সামনে আনা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। ২) তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার। ৩) সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে ‘ব্যর্থ প্রমাণিত’ কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফা। ৪) রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। ৫) রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়া এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করা। এই দাবি নিয়েই মঙ্গলবার বৃষ্টি মাথায় করে স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান করেছেন চিকিৎসকরা। স্লোগান তুলেছেন, ‘‘ন্যায় বিচার পাচ্ছি না, উৎসবে আর ফিরছি না।’’ আর তাঁদের এই অবস্থানে যোগ দিয়েছেন তিলোত্তমার পরিবারও।
স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন তিলোত্তমার বাবা-মাও। নির্যাতিতার বাবা বলেন, “আশা করছি প্রশাসনের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তোমরা একটু ধৈর্য্য রাখো। তোমরা বাধ্য হয়েছ এই আন্দোলন করেছ। আশা করছি আমরা বিচার পাব।” আর তিলোত্তমার মা বলছেন, “আমার ছেলেমেয়েরা আজ রাস্তায়, তাই বাড়িতে থাকতে পারিনি, ছুটে এসেছি এখানে। প্রশাসন তোমাদের কোথায় দাঁড় করিয়েছে? মুখ্যমন্ত্রী উৎসবে যোগ দিতে বলছেন, আমার কাছে এটাই উৎসব।”
আরও পড়ুন- আরজি কর ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদ কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহিলা ভোট কমিয়ে দেবে?
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনকারীদের একটি মেল পাঠান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। ওই মেলে প্রতিবাদরত চিকিৎসকদের নবান্নে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠানো হয়। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অর্থাৎ স্বাস্থসচিব, তিনিই মেল করেছেন আন্দোলনকারীদের। এই বিষয়টা অত্যন্ত অপমানজনক। তাতে আন্দোলনের 'স্পিরিট' নষ্ট হচ্ছে বলেও মনে করছেন তারা। তাই দাবি না মেটায় অবস্থান তুলে নিয়ে কথা বলতে যাওয়ার পথে হাঁটতে চাননি চিকিৎসকরা।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, নবান্ন থেকে সরকারিভাবে মেল আসেনি। আন্দোলনের ৩২ দিনে পর তারা স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান করছেন। মেল করে ডেকে পাঠানোর কোনও অর্থই নেই এখানে। এর আগে লালবাজারে গিয়ে পুলিশ কমিশনারের হাতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবি করেছিলেন চিকিৎসকরা। আর বিনীত গোয়েল জানিয়েছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চাইলে তিনি ইস্তফা দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিনীত ইস্তফা দেননি। তাছাড়া দেখা করতে যাওয়ার প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা স্পষ্ট বলছেন, ভবিষ্যতে নবান্নে দেখা করতে গেলেও ১০ জনের দল যাবে না। সব মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদলই সেখানে উপস্থিত হবে।