মাত্র ১ ঘণ্টায় শহর থেকে শহরে! বন্দে ভারতের পর খেল দেখাবে 'নমো ভারত'

PM Modi flags off RRTS: উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে কম বিতর্কের মুখে পড়তে হয়নি বন্দে ভারতকে। তার দোসর নমো ভারতের পথও যে খুব সুগম হবে- এমনটা মনে হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই নাম পরিবর্তন নিয়ে তোপ দাগতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।

ঝড়ের চেয়েও দ্রুত গতিতে ছুটবে ট্রেন। বন্দে ভারতের পর ভারতে আসছে 'নমো ভারত'। তা এই নমো ভারতের প্রাথমিক ভাবে নামকরণ করা হয়েছিল ব়্যাপিডএক্স। তবে উদ্বোধনের ঠিক একদিন আগে সেই পরিষেবার নাম বদলে রাখা হল নমো ভারত। মোদি জমানায় বারবার নাম বদলেছে রেলস্টেশন থেকে শুরু করে জায়গা, এমনকী স্টেডিয়ামেরও। সম্প্রতি চাঁদের যে জায়গায় পা রেখেছিল চন্দ্রযান ৩, সেই জায়গাটার নাম শিবশক্তি রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফলে ভারতের প্রথম সেমি হাইস্পিড আঞ্চলিক রেল পরিষেবার নাম যে নমো ভারত হবে, তাতে আর আশ্চর্য কী!

শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের শাহিবাবাদ স্টেশনে দিল্লি গাজিয়াবাদ মেরঠ রিজিওনাল ব়্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম (RRTS)-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গেই প্রথম বারের জন্য যাত্রা শুরু করে ভারতের প্রথম ব়্যাপিডএক্স ট্রেনটিও। হাই ডিপো স্টেশনে পৌঁছনোর কথা সেই ট্রেনের। প্রধানমন্ত্রী পতাকা নাড়ার পর শাহিবাবাদ স্টেশন ছাড়ে ট্রেন। ওই উদ্বোধন অনুষ্ঠানেই ব়্যাপিড ট্রেনের নাম পাল্টে নমো ভারত রাখেন প্রধানমন্ত্রী। জানান, ভবিষ্য়তের আভাস মাত্র এই ট্রেন। আগামী দিনে আরও আধুনিক সব ট্রেন নিয়ে আসতে চলেছে ভারতীয় পরিবহণ ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: বন্দে ভারত কি আসলে ঢপের ঢক্কানিনাদ? বাংলা যা ভাবছে

জানা গিয়েছে, রূপান্তরমূলক আঞ্চলিক উন্নয়ন উদ্যোগ প্রকল্পের আওতাতেই এই ট্রেন চালু করা হচ্ছে। যা প্রতি ১৫ মিনিটে আন্তর্শহর যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হবে। প্রয়োজনে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই সফর সম্পূর্ণ করতে পারবে এই ট্রেনগুলি। একদিন আগেই এই ট্রেনের কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। ২১ অক্টোবর থেকেই পাকাপাকি ভাবে চলাচল করবে এই ট্রেনগুলি। আপাতত শাহিবাবাদ থেকে দুহাই ডিপো পর্যন্তই চলাচল করবে ওই ট্রেনপরিষেবাটি।

আপাতত শাহিবাবাদ থেকে দুহাই ডিপো পর্যন্ত ট্রেনটি চললেও আশা করা হচ্ছে গোটা করিডরটাই চালু করে ফেলা যাবে ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে। প্রায় ৮২.১৫ কিলোমিটারের রুট ঠিক করা হয়েছে। যা দিল্লি, গাজিয়াবাদ হয়ে মেরঠ পর্যন্ত যাওয়ার কথা। যতদূর জানা যাচ্ছে, ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে চলবে ট্রেনটি। যাতে থাকছে মহিলা কামরা ছাডাও একটি প্রিমিয়াম কোচ। পাশাপাশি ব়্যাপিডএক্সে থাকবেন রেলকর্মীরাও। দিল্লি থেকে মিরাট যাওয়ার পথে দ্বিতীয় কোচটি সংরক্ষিত থাকবে মহিলাদের জন্য। যেখানে থাকছে মোট ৭২টি আসন। পাশাপাশি অন্যান্য কোচেও ১০টি আসন থাকবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। যারা আরও একটু আরামে যাত্রা করতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য থাকছে প্রিমিয়াম কোচ। যা আরও বেশি জায়গাসম্পন্ন, আরামদায়ক। থাকছে রিক্লাইনিং সিট, বালিশ ও প্রতিটি আসনের জন্য চার্জিং পয়েন্ট।

PM Modi flags off RRTS PM To Flag Off 'Namo Bharat', India's 1st Regional Rapid Train Service

 

এই ট্রেনের টিকিট কাটতে যাতে যাত্রীদের অসুবিধা না হয়, তার জন্য নানা রকম টিকিটের ব্যবস্থাও রেখেছে কিউআর কোড বেসড টিকিট, ডিজিটাল কিউআর টিকিট র‌্যাপিডএক্স ট্র্যাভেল কার্ড ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড (এনসিএমসি) বা ওপেন লুপ কন্টাক্টলেস কার্ড-সহ একাধিক সুবিধা।

উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে কম বিতর্কের মুখে পড়তে হয়নি বন্দে ভারতকে। তার দোসর নমো ভারতের পথও যে খুব সুগম হবে- এমনটা মনে হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই নাম পরিবর্তন নিয়ে তোপ দাগতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। ব়্যাপিডএক্সের নাম বদলে 'নমো ভারত' রাখা নিয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, নমো স্টেডিয়াম থেকে নমো ট্রেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মমগ্নতার কোনও শেষ নেই। ইতিমধ্যে আমেদাবাদের একটি স্টেডিয়ামকে প্রধানমন্ত্রীর নাম দেওয়া হয়েছে, যেটি আদতে ছিল বল্লভভাই প্যাটেলের নামে।

আরও পড়ুন: বন্দে ভারতের স্লিপার কোচ কেমন দেখতে? ভারতে এমন চোখ ধাঁধানো ট্রেনও সম্ভব!

এই দিল্লি-গাজিয়াবাদ-মেরঠ করিডোর তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। জানা গিয়েছে, এক ঘণ্টারও কম সময়ে দিল্লি ও মেরঠের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবে এই ট্রেন। গাজিয়াবাদ, মুরাদনগর, মোদিনগর হয়েই গন্তব্যে পৌঁছবে ট্রেন। তবে এই মোদি ভারতও কি বন্দে ভারতের মতোই বিতর্কে জড়াবে নাকি মানুষকে খুশি করতে পারবে এই পরিষেবা সেটাই দেখার।

More Articles