নরেন্দ্র মোদি ওবিসি নন?
Narendra Modi: ওড়িশা থেকে রাহুল গান্ধি জানান, মোদি যতই নিজেকে ওবিসি বলে দাবি করুন না কেন, তিনি মোটেই ওবিসি সম্প্রদায়ে জন্মাননি।
ভোটের আর দেরি নেই। প্রায় প্রতিটি দলই যে যার মতো করে জনসংযোগ, প্রচারে লেগে পড়েছে। দিল্লিবাড়ির খেলায় যুযুধান বিজেপি এবং বিজেপি-বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। যেখানে এক ছাতার তলায় এসেছে প্রায় ছাব্বিশটি দল। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া জোটের তরফ থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ঘোষণা করে দিয়েছেন, ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলে ইন্ডিয়া জোটের সর্বপ্রথম কাজ হবে জাতিশুনানি করা। ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার মধ্যে বারবারই সেই কথাটিই তুলেছেন তিনি। এদিকে, ভোটের আগে কোনও তাসই ছাড়তে রাজি নন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দিন কয়েক আগেই নিজেকে ওবিসি বলে দাবি করেন তিনি। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে এবার অভিযোগ করলেন রাহুল।
ভোটের আগে প্রচার এবং জনসংযোগ বাড়াতে গত জানুয়ারি মাস থেকেই ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল। মণিপুর থেকে শুরু হয়েছে যাত্রা। সেখান থেকে অসম, বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড ঘুরে আপাতত ওড়িশায় পৌঁছেছে যাত্রা। আর সেখান থেকেই নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি আক্রমণ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘‘INDIA জোট ক্ষমতায় এলেই… ’’ যে যে প্রতিশ্রুতি দিলেন রাহুল
একদিন আগেই রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংরক্ষণ-সহ একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে সরব হন তিনি। এমনকী দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সংরক্ষণবিরোধী ছিলেন বলেও মন্তব্য করেন মোদি। আর চব্বিশ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই তাঁর পাল্টা দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি।
ওড়িশা থেকে রাহুল গান্ধি জানান, মোদি যতই নিজেকে ওবিসি বলে দাবি করুন না কেন, তিনি মোটেই ওবিসি সম্প্রদায়ে জন্মাননি। তিনি গুজরাটের তেলি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। আর এই সম্প্রদায় সাধারণত জেনারেল অর্থাৎ সাধারণ শ্রেণিভুক্ত। তবে ২০০০ সালে নাকি বিজেপি এই সম্প্রদায়কে জোর করে ওবিসিভুক্ত করে, এমনটাই অভিযোগ করেছেন কংগ্রেসনেতা রাহুল গান্ধি। ফলে জাত নিয়ে মিথ্যা বলেছেন বলেই দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা।
গোড়া থেকেই জাতিসুমারির প্রস্তাবে সায় নেই বিজেপির। তারা ওই পথে হাঁটতেও চান না। রাহুলের দাবি, সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী জাতিশুমারি করতে চাইছেন না বলেও তোপ দাগেন কংগ্রেস নেতা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাহুলের দেওয়া তথ্যে মোটেও ভুল নেই। মোদী যে ‘মোধ ঘাঞ্চি তেলি’ জাতিভুক্ত, তারা বিজেপির জমানাতেই গুজরাতে ওবিসি তকমা পেয়েছিল।
রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে তেমন অগ্রাধিকার পান না দেশের আদিবাসী রাষ্ট্রপতি। কিন্তু ভোট বড় বালাই। তবে আজ বলে নয়, গত এক দশক ধরেই রাজনীতির ময়দানে বারবার নিজের ‘প্রান্তিক জাতি’র পরিচয় তুলে ধরতে সক্রিয় হতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে গিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে ‘নিচু মানের রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। সেই অভিযোগকে কাজে লাগিয়ে মোদী পাল্টা অভিযোগ করেন, তিনি ‘নিচু জাতের মানুষ’ বলে কংগ্রেসের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। কংগ্রেস নিচু জাতের মানুষের রাজনীতির অধিকার কেড়ে নিতে চায় বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: মোদির পথের কাঁটা রাহুলই! বিরোধীদের কেন ফেলনা মনে করতে পারছেন না মোদিও?
২০২৪ ভোটের আগে সেই জাতি-দ্বন্দ্বই ফের উস্কে তুলেছে দুই দলই। একদিকে বিজেপি চাইছে অখণ্ড দেশে অভিন্ন আইন, অন্যদিকে জাতিসুমারি করে সংখ্যাগরিষ্ঠ আর সংখ্যালঘুর হিসেবটা চোখের সামনে স্পষ্ট করে তুলতে চাইছে কংগ্রেস। ভোটে জিতলে বিরোধী জোটের তরফে জাতিভিত্তিক সংরক্ষণের কথা বাড়ানোর কথাও জানিয়েছেন রাহুল।