১০ বছর পর প্রথম! কেন রাহুল গান্ধিকে সংসদে বিরোধী দলনেতা করল কংগ্রেস?

Rahul Gandhi: ২০০৪ সাল থেকে সংসদে থাকা সত্ত্বেও এটিই রাহুলের প্রথম সাংবিধানিক পদ।

লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। দলের সাংসদ কেসি ভেনুগোপাল জানিয়েছেন, কংগ্রেস পার্লামেন্টারি পার্টির (সিপিপি) চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি প্রো-টেম স্পিকার ভর্তৃহরি মাহতাবকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে রাহুল গান্ধি ১৮ তম লোকসভার বিরোধী দলের নেতা হবেন। রাহুল গান্ধি পরিবারের তৃতীয় সদস্য যিনি লোকসভার বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করবেন। রাহুলের বাবা-মা, সনিয়া এবং রাজীব গান্ধিও লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদে ছিলেন।

গত ৯ জুন, দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডব্লিউসি) রাহুল গান্ধিকে লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবে নিয়োগের জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে। অবশ্য তখনই রাজি ছিলেন না রাহুল। সিডব্লিউসির বৈঠকের পরে, রাহুল গান্ধি বলেছিলেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে তাঁর কিছুটা সময় দরকার।

আরও পড়ুন- সংসদে উচ্চবর্ণ ওবিসি সমান সমান, স্বাধীনতার ৭৭ বছর পরে প্রথমবার

রাহুল বিরোধী দলীয় নেতা হওয়াতে এবার কংগ্রেস বিরোধী দলনেতার পদটি ফিরে পেয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রাপ্ত আসন সংখ্যা গতবারের থেকে প্রায় দ্বিগুণ। ২০১৯ সালে সারা দেশে ৫২টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। এবার ৯৯টি আসনে জিতেছে তারা৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অবস্থা ছিল আরও শোচনীয়। মাত্র ৪৪টি আসন জিততে পেরেছিল কংগ্রেস৷

২০১৪ এবং ২০১৯ সালে বিজেপির পরে সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বেও, কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল হতে পারেনি। প্রধান বিরোধী হতে গেলেও ন্যূনতম যে আসন দরকার সেই মানদণ্ডের ঢের নীচে ছিল রাহুল-সনিয়ার দল। যে দল লোকসভা নির্বাচনে ১০ শতাংশের কম আসন পেয়েছে তারা নিম্নকক্ষে বিরোধী দলের নেতার পদ দাবিই করতে পারে না।

আরও পড়ুন- সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছরের, তাও কেন বিনা বিচারে ৪ বছর বন্দি উমর খালিদ?

রাহুল গান্ধি তর্কাতীতভাবে এই মুহূর্তে কংগ্রেসের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ। তাই তাঁকে বিরোধী দলের নেতা করার পদক্ষেপটি যে বড় সিদ্ধান্ত তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে দেশে মোদি বিরোধী হাওয়া প্রবল হচ্ছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধীদের ভূমিকাটা যে ঠিক কী তা কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোট প্রমাণ করে দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি সরকারের একনায়কতন্ত্রের দিকে যাত্রাকে প্রতিহত করতে পেরেছে কংগ্রেস। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম কোনও বিরোধী দল এই সংখ্যা অতিক্রম করতে পেরেছে। প্রধান বিরোধী হতে গেলে ৫৪ টি আসন (লোকসভার মোট আসনের ১০%) দরকার ছিল। কংগ্রেসের হাতে ৯৯ টি আসন। বিরোধী দলের নেতার পদে থাকার কারণে ইন্ডিয়া জোটের সমস্যাগুলিকে আরও জোরালোভাবে সংসদে তুলে ধরতে পারবেন রাহুল গান্ধি। এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। ভারত জোড়ো যাত্রা এবং ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি৷ এই দু'টি যাত্রাই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ প্রশস্ত করে।

২০০৪ সাল থেকে সংসদে থাকা সত্ত্বেও এটিই রাহুলের প্রথম সাংবিধানিক পদ। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালে ইউপিএ ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের অধীনে মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার জন্য রাহুলকে চাপ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।

More Articles