অমৃতের সন্ধানে সমরেশ : সুমন চট্টোপাধ্যায়
Samareh Basu Kalkut : এই বেদনা-বিধূর কাহিনীর বয়স ৩৭! কালকূটের দ্বিতীয় অমৃতকুম্ভের সন্ধানে হরিদ্বার যাত্রার। সঙ্গী সাংবাদিকের মরমী কলমে। সমরেশ বসুর শতবর্ষে সুমন চট্টোপাধ্যায়ের বিনম্র পুষ্পাঞ্জলি
১৩৯২-এর ২৬ চৈত্র। খ্রিস্টাব্দের হিসেবে ১৯৮৬-র ৯ এপ্রিল। চৈত্র-অমাবস্যার সন্ধে নেমেছে হর-কি-পিয়ারির ঘাটে। চলছে গঙ্গা-আরতির প্রস্তুতি। গঙ্গার দু'পারে বাঁধানো নদীতটে থই থই পুণ্যার্থীর ভিড়। কোনওমতে একটা পাকাপোক্ত প্যাকিং বাক্সের উপরে ১০ টাকা দক্ষিণা দিয়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে আছি আমরা চারজন— ‘কালকূট’ সমরেশ বসু, তাঁর স্ত্রী ধরিত্রী বসু (টুনি বৌদি), শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আর আমি। পাতার ভেলায় ভাসানো জ্বলন্ত মাটির প্রদীপের আলোয় চিকচিক করছে কালো গঙ্গার কুলুকুলু ঘৃত-দীপ। জলের বুকে প্রতিবিম্ব পড়ে দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে প্রদীপের সংখ্যা। ঘাটের গুঞ্জনের মধ্যে হঠাৎ চিৎকার: ‘গেল গেল, ভেসে গেল।’ হাতের চেন ফস্কে ভেসে গেছে সাঁতার না জানা, অজানা, অনামী এক কিশোর। তাকে বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দিল ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের হলদে পোশাক পরা সাঁতারুরা। আর্তরব শুনে পাশে বসা সমরেশদা আমাকে বললেন, ‘আমি যদি এখানে মরে যাই, এই গঙ্গার স্রোতে ভাসিয়ে দিও। জীবন-মৃত্যুর নিরন্তরতা এই নিরন্তর স্রোতে বয়ে চলেছে। আমিও চলে যাব’। যে কোনওদিন চলে যেতে হবে, ‘কালকূট’ সমরেশদা তা বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছিলেন, ‘বুকে তার ছোবলের ঘা লেগেছিল যে’। তবু নিজেই কালকূট যিনি, বিষ তাঁকে কাবু করবে…

Whatsapp
Support quality writing
Encourge writers
Access on any device
