কবিতা তো ফ্রি, ফেসবুকে পাওয়া যায়, হতাশা ঢাকে পুরস্কার
Bengali Poetry: কবিতার থেকে এসব হইহট্টগোল বড় নয়, অথচ কোলাহলে সবচেয়ে বেশি চাপা পড়ে যায় কবিতাই।
একজন বাঙালি কবিকে পুরস্কার নিয়ে রীতিমতো নাকানিচোবানি খাওয়ানো হলো। সবটা দেখে রে রে করে উঠল ফেসবুক। যতজন বিরুদ্ধাচরণ করলেন, তাঁরা সকলেই কবির পাঠক হলে, বাংলাভাষার কাব্যসেবকদের আক্ষরিক এত বড় পাঠকবৃত্ত থাকলে বাংলা কবিতার, বাঙালি কবির রেলাটাই আলাদা হতো। দু'দিনের ফুটকড়াই এত আওয়াজ করে ফাটার আগে, এই দিচ্ছি এই নিচ্ছি- এসব টানামাঞ্জা করার আগে, দু'বার ভাবত। স্পষ্ট করে বললে, কবির পাশে যতজন আছেন, কবিতার পাশে ততজন নেই বলেই চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে কবির হতাশা, কুচোচিংড়ির স্পর্ধা। কবি অর্থ পান না, পাঠক পান না, কেবল কী এক অমোঘ টানে ঘুরে মরা, ফলে একটা পর্যায়ে এসে কবি যশ চাইতে পারেন, চাইতেই পারেন, আলো এসে গা ভাসিয়ে দিক একটা দিনের জন্য। এই চাওয়ার মধ্যে কোনও অন্যায় নেই, তবে বিচারবোধের অভাব থাকলে পচা শামুকে পা কাটার সম্ভাবনাও প্রবল। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই পাওয়া-না পাওয়াগুলিই কি কবিতা লেখার পুরস্কার? একজন কবি কি এই ধরনের পুরস্কারই প্রত্যাশা করেন? রাষ্ট্র, সমাজ কি তাকে এভাবেই পুরস্কৃত করার কথা ভাবে? ভাবতে চাই।
রাষ্ট্র একজন কবিকে দু'ভাবে পুরস্কৃত করে বলেই মনে হয়। কে কোন বরমাল্যে মাথা গলাবে, তা নির্ভর করছে তাঁর জীবন-অভিপ্রায়ের ওপর৷ একদলের ভাগ্যে থাকে বুলেট। আর একদল পায় চেয়ার৷ এর মাঝে যে বিরাট সেজ, মেজ, ন, রাঙা-র দলটা আছে, শাসক তাদের চেনে না। রাষ্ট্র চায়, কবি আমার হয়ে গান লিখবে, ভোটের স্লোগান লিখবে, সাংস্কৃতিক মস্তানি করে গ্যাং বানাবে, দু'পাঁচশো টাকা ছড়াবে গডফাদারের ঢঙে। এই বৃত্তের বাইরে যদি কেউ থেকে থাকে সে নীরব হয়ে থাকবে। রাজকবি একেই পুরস্কার ভেবে অভ্যস্ত। আবার এর উল্টোফুটের যে কবি, যার নীরব হয়ে থাকার কথা, তিনি নিয়ম ভেঙে বুক পেতে বুলেট নেবেন, এইটাই তাঁর নিয়তি। সবচেয়ে বড় কাব্য-পুরস্কার। এমনটাই ঘটেছিল লোরকার ক্ষেত্রে। ফ্রাঙ্কোর বাহিনী স্পেনের গ্রানাদা শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে রাস্তার ধারে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারে লোরকাকে। একই ধরনের দৃষ্টান্ত আমরা দেখতে পাই ওপিস মান্দালস্তামের ক্ষেত্রে। ১৯২২ নাগাদ যখন বলশেভিকরা রাশিয়ার দখল নিয়েছে, ঠিক সেইসময় প্রকাশিত হয় মান্দালস্তামের কাব্যগ্রন্থ ত্রিস্তিয়া। রাষ্ট্রপ্রদর্শিত আদর্শের কড়িকাঠ পেরিয়ে তখন একটু একটু করে তাঁর কবিতা পৌঁছতে চেয়েছিল ব্যক্তিগত বেদনার পরিসরে। মান্দালস্তাম লিখছেন-
তোমাকে ছাড়া আমার ভয় করছে
আমার উপর তোমার এমন জোর আগে কখনও ছিল না।
আমি যা কিছু চাই, তাইই পাই,
আমার মধ্যে আর এতটুকুও হিংসা নেই
আমি তোমায় ডাকছি।
-এসো, আমার কাছে
(ক্লেরেন্স ব্রাউন ও ডব্লিউ এস মারউইনের অনুবাদের অক্ষম তর্জমা)
মান্দালস্তাম কৌমের মঙ্গলের কথা না বলে ব্যক্তিগত প্রেমের কবিতা লিখছিলেন। লিখছিলেন স্তালিন এপিগ্রাম, যা সরাসরি আঙুল তোলে শাসকের দিকে। তাঁকে যেতে হল গুলাগ শিবিরে। শ্রমশিবিরে ঘুরে ঘুরে অসহনীয় মৃত্যু হলো একজন কবির। মান্দালস্তামের গ্রেফতারির ঘটনার ১৩ বছর আগে 'আনন্দময়ীর আগমনে' কবিতাটি লেখার জন্য রাষ্ট্র গ্রেফতার করবে এক তরুণ কবিকে, নাম- নজরুল ইসলাম। তিনি আত্মপক্ষ সমর্থনে বিচারককে লেখেন,
আমি কবি, অপ্রকাশ সত্যকে প্রকাশ করবার জন্য, অমূর্ত সৃষ্টিকে মূর্তি দানের জন্য ভগবান কর্তৃক প্রেরিত। কবির কণ্ঠে ভগবান সাড়া দেন। আমার বাণী সত্যের প্রকাশিকা, ভগবানের বাণী। সে বাণী রাজবিচারে রাজদ্রোহী হতে পারে, কিন্তু ন্যায়বিচারে সে বাণী ন্যায়-দ্রোহী নয়, সত্য-দ্রোহী নয়। সে বাণী রাজদ্বারে দণ্ডিত হতে পারে, কিন্তু ধর্মের আলোকে, ন্যায়ের দুয়ারে তাহা নিরপরাধ, নিষ্কলুষ, অম্লান, অনির্বাণ, সত্য-স্বরূপ।
আরও পড়ুন: স্রেফ শ্যামাসংগীতই নয়, স্বতন্ত্র শাক্তদর্শন ছিল নজরুলের
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, বিপদ জেনেও একমাত্র সত্যের আনুগত্য করতে চান সমাজ-সংসারের কিছু কবি। নীরব না হওয়ার মাশুল তাদের গুণতে হয় সব যুগেই। নজরুল ইসলাম বন্দি হওয়ার পরেই জেলখানার অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ৩৮ দিন অনশন করলেন যে-বছর, তার ১০০ বছর পর ভারতে এক কবিকে পাওয়া গেল এক হাসপাতালের পেচ্ছাপের চৌবাচ্চায় অচৈতন্য অবস্থায়। অশক্ত সেই শরীর কোভিড বাসা বেঁধেছে, রাষ্ট্র তখন তাঁকে জেলবন্দি করে রেখেছে। রাষ্ট্রের পছন্দসই আচরণ করেননি কবি ভারভারা রাও।
এই সমস্ত তাৎক্ষণিক গ্লানি শরীরে-মনে সব দেশের সব রক্তাক্ত সময়ের কবিকে বইতে হলেও, কবিতার আবহমান যাত্রায় এই অধ্যায়গুলি সোনার জলে লেখা থাকে। পাল্টানো সময়ে মুখে মুখে ফেরে কবির যাত্রাপথের ফুলছড়ানো আখ্যান। মহাসময় পুরস্কৃত করে এই কবিকে।
কিন্তু একজন কবি স্রেফ রাষ্ট্রশক্তির সঙ্গে সংলাপে যাবেন, তাও তো হয় না। কবির নিহিত যাত্রাপথও থাকে, সে পথে তিনি পাঠকের সঙ্গে ব্যক্তিগত সংলাপ তৈরি করতে করতে যান। জীবনানন্দ ধরিয়ে দিচ্ছেন এই সূত্রটা-
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চ’লে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে:
সে কেন জলের মতো ঘুরে-ঘুরে একা কথা কয়!
অবসাদ নাই তার? নাই তার শান্তির সময়?-বোধ কবিতার অংশবিশেষ
নিজের লিখনভঙ্গিমাকে কবি নানা আতসকাচের নিচে ফেলে দেখেন, জলের মতো ঘুরে-ঘুরে স্বগতকথন তৈরি করেন, এক পথ থেকে অন্য পথে পা ফেলেন চকিতে। দূর থেকে মেধাবী পাঠক তাঁর এই অভিপ্রায়কে লক্ষ করবে, বুঝবে নিজের মতো করে, আলোচিত হবে বিষয়, ছন্দ, প্রকরণ- কবির কাব্যযশপ্রার্থনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ওপরের দিকে থাকে এই বোধটিই। লেখা কবিকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো করে রাখে, আর কয়েকজন মেধাবী পাঠক সেই বিচ্ছিন্ন মনকে আবার জীবনের দিকে নিয়ে আসে, এই তো চলাচল। পৃথিবীর সমস্ত কবির প্রাথমিক চাহিদা, বলা ভালো সমস্ত শিল্পীর জীবনশর্তই এই৷ এখানে একটা মনে রাখা জরুরি, বাজারমূল্যের বিচারে অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে কবিতার ফারাক আছে। অন্তত বাংলা কবিতার। বাঙালি শিল্পীরা আজীবন ছবি এঁকে যান আন্তরিক তাড়নায়। কিন্তু এও বিশ্বাস করেন, একদিন তাঁর ছবি কেউ না কেউ অনেক দামে কিনে নিয়ে যাবে। তাঁর সৃষ্টি ভালো চাক্ষিকের দৃষ্টি কাড়বে, পাশাপাশি বাজারে মূল্যও পাবে। এই বোধই অনেককে আজও চালিত করে স্রেফ ছবি এঁকে জীবন কাটানোর লটারি-নেশায়। এমনকী, বহু ঔপন্যাসিকও জীবন চালিয়ে নিয়েছেন অক্ষরসাধনায় অটল থেকে। কবিতা কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি দেয় না। স্রেফ কবিতা লিখে বেঁচে থাকার আত্মপ্রত্যয় অর্জন করা কঠিন, কারণ বাজার নেই, কবিতার পাঠক কম, কবির ব্যক্তিত্ব এবং লেখার মিশেল, সমষ্টির প্রয়াস, সেই বাজার তৈরি করতে ব্যর্থ। শুনেছি তুষার রায় কবিতা পড়ে টুপি পেতে টাকা তুলতেন। এই কনফিডেন্স বাঙালি কবি জীবদ্দশায় অর্জন করতে পারেন না। আর আজ তো বাঙালির বদ্ধমূল ধারণা কবিতামাত্রই ফ্রি। যে কোনও প্রক্ষোভে ফেসবুক খুললেই পাওয়া যাবে। জীবনের সব হাসিকান্না-চুনিপান্নায় বাজারের কবিরা ব্রেকিংয়ের দ্রুততায় ফেসবুকে টু পাইস ফেলে এমন একটা ধারণার জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে। ফলে একজন নির্জন, আত্মমগ্ন কবির জন্য শেষ পাতে কিছুই থাকে না, থাকে স্রেফ ওই ওইটুকু, ভালো পাঠকের তাড়না। কিন্তু ভালো পাঠক কি কবি পান? কবিতাচর্চার একটি নিটোল বাস্তুতন্ত্র কি আমরা গড়ে তুলতে পেরেছি?
কবিতাসভায় বেকুব জীবনানন্দকে নিজের কবিতা পড়তে দেখে তামাশা করা হয়েছে, জীবনানন্দকে কটাক্ষ করে বলা হয়েছে 'জীবানন্দ'। মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন রবীন্দ্রনাথ থেকে সুধীন দত্তর মতো ব্যক্তিত্ব। কবির পাঠক নেই, কিন্তু দলবাজি আছে, এই দলবাজি আর দল ভাঙাই হয়তো তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে। আর বিবিধ কাব্য-গ্যাদারিং থেকে অনেক দূরে দাঁড়ানো আমজনতা কবিকে, কবিদের নানা অভিধায় সীমাবদ্ধ করে, ডাকনাম দেওয়ার মতো, দুঃখের কবি, যুদ্ধের কবি, ছন্দের কবি...। নাটকের মতো, গানের মতো, কবির অভিপ্রায়, কাব্যবীজ নিয়ে সুস্থচর্চার একটা পরিবেশ গড়ে তোলা যায়নি প্রায় কিছুতেই। ঠিক এখানেই হতাশা নামক গাছ মাথা তোলে। হতাশাকে ঢেকেঢুকে রাখে ছোটখাটো পুরস্কার, মঞ্চ, এগুলির সঙ্গে কবিতার সম্পর্ক প্রায় থাকেই না। ক্ষণিকের আনন্দের কথা বাদ দিলে আর কিছু থাকে না। লেখার শুরুতে যা বলেছিলাম, আরও একবার বলি, আজ যাঁরা শ্যামলকান্তি দাশের অপমান নিয়ে এত ক্ষুণ্ন, তাঁদের ক'জন শ্যামলকান্তির কবিতার বইগুলি সংগ্রহ করেছেন? সময় কাটিয়েছেন কবিতার সঙ্গে? জানি, সংখ্যাটা আমাদের সকলের মুখ ম্লান করে দেবে, জানি বলেই বলছি, আসলে আমরা সকলেই একটা কার্নিভালের অংশ, অপমান করা, অপমানিতর পক্ষ নেওয়া এই দুইয়ের মধ্যেই আমরা দল ভাগাভাগি করে থাকব। বলার কথা শুধু এটাই, কবিতার থেকে এসব হইহট্টগোল বড় নয়, অথচ কোলাহলে সবচেয়ে বেশি চাপা পড়ে যায় কবিতাই। কিন্তু তারপরেও, একজন সিরিয়াস কবি জীবনে-মরণে ওই কবিতার জন্য একক নিভৃত খননের যন্ত্রণা থেকে উত্তরণের চেয়ে বেশি কিছু চান না বলেই মনে হয়। এই উত্তরণে পাঠকই সহায়, পাঠকই শেষ পুরস্কার।
এ-প্রসঙ্গে মনে পড়ছে, রণজিৎ দাশকে দেওয়া পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলালের একটি সাক্ষাৎকারের কথা। পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল বলেন, "শিল্প পুরস্কার ফেরত দেওয়াটা স্টান্ট কেউ কেউ বলছেন আজকাল- আর কোনও কথা না বলেই। তা হতে পারে। কিন্তু এ জিনিস নেওয়াটা ব্লান্ট। পাপ।" প্রসঙ্গত, কৃত্তিবাস পুরস্কারের জন্য পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলালের নাম ঘোষণা করা হলে তিনি সেই পুরস্কার নেননি। পার্থপ্রতিম মনে করতেন, তাঁর আগে যারা এই পুরস্কার পেয়েছিলেন অর্থাৎ শামসের আনোয়ার, শান্তনু ঘোষ এবং দেবারতি মিত্র, তাঁরা তখনও পর্যন্ত তাদের প্রকৃত লেখাগুলি লিখে উঠতে পারেননি। অর্থাৎ অল্পবয়সি পার্থপ্রতিম দেখাতে চান, শিল্প-পুরস্কার কেবল একটা দেওয়ার জন্যই দেওয়া, প্রতিষ্ঠানের ছাতায় নানা জনকে নিয়ে আসা। পুরস্কৃতকে আত্মবিক্রয়ের দোষে দুষ্ট করতে চান তিনি। পরে অবশ্য পার্থপ্রতিমও একটি পুরস্কার নেন। এই একই বিষয়ে শঙ্খ ঘোষকে প্রশ্ন করেছিলেন অরুনেশ ঘোষ। শঙ্খ ঘোষ পাপপুণ্যর মাপকাঠিতে বিষয়টিকে না দেখে বরং পুরস্কারকে সিরিয়াসলি না নেওয়ার কথাই বলেছেন। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার সম্পর্কে তিনি বলছেন, "আগে বলেছিলাম লেখক-কবিদের পক্ষে এ পুরস্কার ক্ষতিজনক। এখন বলছি গোটা সমাজের পক্ষেই ক্ষতিকর এইসব পুরস্কার ব্যবস্থা। সেই ক্ষতির একটা দৃষ্টান্ত এই যে, আপনাদের মতো বিদ্রোহীরাও 'পুরস্কার' ভাবনাটিকে টেনে আনছেন কেবলই। এর পোষকতা করা যেমন অসঙ্গত, একে আক্রমণ করে সময় নষ্ট করাও তেমনি নিষ্প্রয়োজন। চেতনার মধ্যে একে এতটা বেশি জায়গা দেওয়া কি ঠিক?"
মনে করতে হবে রবীন্দ্রনাথকে। চেতনার মধ্যে পুরস্কারকে বড় জায়গা দিতে চাননি তিনিও। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আম্রকুঞ্জের সভায় তিনি গাইলেন তিন মাস আগে লেখা গান, 'এই মনিহার আমার নাহি সাজে'। আজ যারা পুরস্কারের জন্য বাহবা দিচ্ছে কাল তারাই টেনে নামিয়েছিল, একথা মনে রেখেই রবীন্দ্রনাথ সেদিন বলেছিলেন,
...আজ আপনারা আদর করে সম্মানের যে সুরাপাত্র আমার সম্মুখে ধরেছেন তা আমি ওষ্ঠের কাছে পর্যন্ত ঠেকাব, কিন্তু এ মদিরা আমি অন্তরে গ্রহণ করতে পারব না। এর মত্ততা থেকে আমার চিত্তকে আমি দূরে রাখতে চাই।
সেদিন রবীন্দ্রনাথকে একটি লজ্জাবতীর চারা উপহার দিয়েছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু। আজ মনে হয়, আজীবনের অপমানে, ব্যক্তিগত বেদনার স্পর্শে বারবার নুয়ে পড়ে ফের ঘুরে দাঁড়ানো কবি এই পুরস্কারকে নোবেলের চেয়ে বড় করে দেখেছিলেন, কারণ এক্ষেত্রে দাতার ভার গ্রহীতার থেকে কিছু কম ছিল না। এ ক্ষেত্রে প্রাপকের মনটাকে চিনতেন,জানতেন, সমীহ করতেন প্রেরক। একজন কবি আর কী চান জীবন থেকে?