শরীর থেকে ঠিকরে বেরোচ্ছে চোখ, ঝুলছে চামড়া, রাক্ষুসে এই মাছ দেখে ভিরমি খাবেন আপনিও

Russian Fisherman Deep sea fish Viral : মুখ থেকে ঝুলে আছে টাটকা চামড়া! ভেতরে ঝকঝক করছে দাঁত! তাও যে সে প্রাণী নয়, আস্ত একটি মাছ!

বাদামি শরীরটা শক্ত হয়ে গিয়েছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, শরীরে প্রাণ নেই। কিন্তু এটা কি দেখা যাচ্ছে! গোটা শরীরটা খসখসে, মনে হচ্ছে অজস্র ব্রণ হয়েছে গায়ে। সেইসঙ্গে বিকট দুটো চোখ যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে শরীর থেকে। চোখের ভেতর বুদবুদের মতো কীসব ঘুরছে আবার! মুখ থেকে ঝুলে আছে টাটকা চামড়া! মুখের ভেতর ঝকঝক করছে দাঁত! তাও যে সে প্রাণী নয়, আস্ত একটি মাছের বর্ণনাই এমন!

কীভাবে বর্ণনা দেবেন এই দৃশ্যের? বীভৎস? চক্ষু ছানাবড়া? একটা মাছের এমন ‘রূপ’ দেখে মনে হতেই পারে, এ নির্ঘাত ভিনগ্রহের কোনও জীব! যে বাঙালি মাছ বলতে একেবারে অজ্ঞান হয়ে যায়, সে এই মাছ দেখলে আক্ষরিক অর্থেই হয়তো অজ্ঞান হয়ে যাবেন। সম্প্রতি এমনই ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার অন্দরে। ভিনগ্রহের নয়, বরং পৃথিবীতেই পাওয়া যায় এমন বিদঘুটে মাছ। রাশিয়ার এক মৎস্যজীবীর জালে হঠাৎই ধরা পড়েছে এই মাছ। কিন্তু এমনি সময় কেন এমন মাছ দেখা যায় না?

রোমান ফেডোরৎসভ নামের এই রাশিয়ান মৎস্যজীবী এমনিই সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ পরিচিত নাম। মাছ ধরতে গিয়ে এর আগেও অনেক অদ্ভুতুড়ে মাছ পেয়েছেন তিনি। সেসবের ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডও করেছেন। নিমেষে ভাইরাল হয়েছে সেইসব ভিডিও। সম্প্রতি নরওয়েইআন সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন রোমান। তখনই তাঁর জালে ধরা পড়ে এই মাছটি। সেই ছবি মুহূর্তে কয়েক লাখ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু মাছটির পরিচয় কী?

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by Роман Федорцов (@rfedortsov_official_account)

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রাক্ষুসে দেখতে এমন মাছটি আসলে ‘উলফ ফিস’ বা নেকড়ে মাছের একটি প্রজাতি। কেউ কেউ একে রাক্ষুসে মাছ বা ডেভিল ফিস বলেও অভিহিত করেন। সাধারণত নীলচে ধূসর রঙের হয় এই মাছগুলি। মুখের ভেতর একেবারে সামনের দিকে দাঁতও লক্ষ্য করা যায়। সেটিই জানান দেয়, এই মাছ মাংসাশী। তবে এটি কি আদৌ খাওয়া যায়? এই ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা দেননি বিজ্ঞানীরা। এই ধরণের মাছ সাধারণত খাওয়া যায় না। কিন্তু সমুদ্রে নামলেই এই মাছের সাক্ষাত পাবেন না আপনি। প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ধরণের মাছ সাধারণত গভীর জলের বাসিন্দা হয়। সেখানে গেলেই এমন অদ্ভুতুড়ে জীবদের দেখতে পাওয়া যায়। 

কিন্তু কখনও সমুদ্রের উপরিভাগে চলে এলে? রোমান জানিয়েছেন, গভীর জলের মাছেদের শরীরের গঠনতন্ত্র অনেকটা আলাদা হয়। গভীর সমুদ্রের প্রবল চাপ সহ্য করে বেঁচে থাকে এরা। তাই জলের উপরিভাগে উঠে এলেই চাপের তারতম্য ঘটে। যার ফলে বেঁচে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। সমুদ্রের তলা থেকে মাঝে মাঝেই এমন বিদঘুটে মাছেরা ওপরে উঠে আসে। তারপর চাপ সহ্য করতে না পেরে মারা যায়। ঠিক যেমন কোনও মানুষ গভীর সমুদ্রের তলদেশে গেলে তাঁদের কষ্ট হয়, মাছেদের ক্ষেত্রেও তেমনই। এই বিশেষ উলফ ফিসটির ক্ষেত্রেও তেমনটিই হয়েছে বলে জানান রোমান।

তাহলে সমুদ্রের তলদেশে গেলে এমনই ‘রত্নভাণ্ডার’ পাওয়া যাবে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, হ্যাঁ। হয়তো এখনও এমন প্রাণী বা উদ্ভিদ রয়েছে, যেগুলি আমাদের সামনে আসেনি। এখনও অনেক অজানা জীব লুকিয়ে রয়েছে ওই গভীর সমুদ্রের তলদেশে। এমন অদ্ভুত রূপ নিয়েই বারবার হাজির হবে মানুষের সামনে। সত্যিকারেই গভীর জলের মাছ বলতে হবে!

More Articles